সাম্প্রতিক খবর

এপ্রিল ২২, ২০১৯

বিজেপির দার্জিলিঙের সাংসদ দুর্গাপুরে পালিয়ে এসেছেন: দেয়ানদিঘীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

 বিজেপির দার্জিলিঙের সাংসদ দুর্গাপুরে পালিয়ে এসেছেন: দেয়ানদিঘীতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ দেয়ানদিঘীতে নির্বাচনী সভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ

এই অঞ্চল মিষ্টির জন্য বিখ্যাত। সাঁইবাড়ির পরিবারের লোকেরা প্রতি বছর ২১-এ জুলাই আমাদের জন্যে মিষ্টি নিয়ে আসেন, আমার সাথে এই অঞ্চলের পুরনো সম্পর্ক মনে করিয়ে দিতে।

গত দু-তন দিন ঝড়-বৃষ্টিতে এই এলাকার প্রচুর সম্পত্তি ও ফসলের ক্ষতি হয়েছে। আপনারা চিন্তা করবেন না ভোট মিটলে সবকিছুর ক্ষতিপুরণ আপনারা পেয়ে যাবেন।

এই জেলার জন্যে প্রচুর প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়েছে। কৃষিজীবীদের জন্যে খাজনা আর মিউটেশন ট্যাক্স মকুব করে দেওয়া হয়েছে।

এই জেলায় প্রচুর পরিকাঠামো উন্নয়নের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।একটি বৃহৎ সেচ প্রকল্প করা হচ্ছে যেটা সারা বছরে ক্ষেতে জল দিতে পারবে। দক্ষিণ ও উত্তর বঙ্গের যোগাযোগের জন্য জন্য নতুন রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।

বর্ধমানে নানা কলেজ, আইটিআই এবং পলিটেকনিক কেন্দ্র মেমারি এবং অন্যান্য জায়গায় স্থাপিত হচ্ছে।

এই এলাকায় নতুন হাসপাতাল তৈরি হয়েছে এবং সবাইকে বিনামুল্যে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এখানে মিষ্টি হাব হয়েছে এবং তার সাথে তাঁত বস্ত্র কেন্দ্র এবং কুটির শিল্প কেন্দ্র তৈরি হয়েছে।

এখানে নানা রেল প্রকল্প এই জেলার যাতায়েতের সুবিধা বাড়িয়ে দেবে।

আমার এত কথা বলার দরকার ছিল না। কিন্তু এটা রাজ্যের ভোট নয়, কেন্দ্রের ভোট। ওরা বলছে আমরা নাকি কোনও কাজ করি নি। তাহলে এত প্রকল্প চলছে কী করে?

গত পাঁচ বছরে কেন্দ্রীয় সরকার কী করেছে? ওরা বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের বরাদ্দ কমিয়ে দিয়েছে এবং প্রতি দিন নতুন নতুন বাঁধার সৃষ্টি করছেন।

সাধারন মানুষের সুবিধার্থে আমরা ভর্তুকি-যুক্ত খাদ্যশস্য দিচ্ছি এবং সরকারী হাসপাতালে বিনা মুল্যে চিকিৎসার সুবিধা করে দিয়েছি। কিন্তু যদি আপনাদের বেসরকারী চিকিৎসার দরকার হয় তাহলে আমরা স্বাস্থ্য সাথী কার্ড করে দিয়েছি যাতে যা হবে বাড়ির মা-বোনেদের নামে। কারণ তারাই সংসারের দেখভাল করেন।

কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করার ব্যাপারে মনযোগ দেওয়া হচ্ছে। প্রতি জেলায় হোমগার্ড এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা চাক্রী পাচ্ছেন।

পড়াশুনার ক্ষেত্রেও নজর দেওয়া হচ্ছে। বই থেকে ইউনিফর্ম বা বৃত্তি- সবকিছু দেওয়া হচ্ছে।

কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার সাধারন-মানুষ বিরোধী নীতি নেওয়া ছাড়া আর কী করেছে? নোটবন্দী থেকে NRC, তারা সর্বক্ষেত্রে মানুষের বিপক্ষে গেছে। শুধু মানুষ নয়, ওদের দলের নেতারাও ওই দুজনকে ভয় পায় যে কখন কী করবে।

আর ধর্ম? বাংলা হচ্ছে একমাত্র রাজ্য যেখানে সমস্ত ধর্মকে সমান অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। দূর্গা পুজা থেকে ইদ বা বড়দিন, সমস্ত ধর্মের সকল মানুষ একসাথে পালন করেন।

আমাদের হিন্দু ধর্ম আমরা শিখেছি আমাদের সাধু সন্ত-দের কাছ থেকে।আমরা সহনশীল এবং আমরা প্রতিটি উৎসব একই উদ্দিপণা নিয়ে পালন করে থাকি।

ওরা যদি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে সমস্তরকম স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত হবেন। ওরা নিজেদের ভাবনা আপনাদের ওপর চাপিয়ে দেবে। ওরা যে হিন্দু ধর্ম মানে সেটা ঠিক নয়। ওরা চায় গেড়ুয়া পরে, গদা আর তলোয়ার নিয়ে ঘুরে নিজেদের হিন্দু বলে দাবী করতে।

মোদী বাবু আর তার দলবল কী জানে বাংলা সম্মন্ধে? আগে তো দিল্লী সামলাক তারপরে না হয় বাংলা দেখবে। ওরা বসন্তের কোকিল, যারা ভালো সময়ে আসে আর তার পর ভুলে যায়।

এখানকার বিজেপি প্রার্থী দার্জিলিং থেকে পালিয়ে এসেছেন আর বলছেন এটা ওনার শ্বশুরবাড়ি। কিন্তু তাতে কী হবে? মুমতাজ সঙ্গমিতা একজন ডাক্তার এবং এই এলাকার জন্য যথেষ্ট কাজ করেছেন।

আগামী ২৯ এপ্রিল সকাল সকাল ভোট দিন, তৃণমূল কে ভোট দিন, মা মাটি মানুষকে ভোট দিন। কারণ ভবিষ্যতের জন্যে সেটাই সঠিক কাজ।