এপ্রিল ১৩, ২০১৯
বাংলাই এবার দিল্লীতে আনবে পরিবর্তনঃ বনগাঁয় বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ বনগাঁ লোকসভার অন্তর্গত বনগাঁ উত্তরের গোপালনগর হরিপদ ইন্সটিটিউশনে নির্বাচনী সভা করেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ
এই তীব্র গরমকে উপেক্ষা করে যে বিপুল পরিমাণ মানুষ এখানে উপস্থিত হয়েছেন সকলকে বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তৃণমূলের সভায় যারা আসেন তারা ভারত গড়ার সিদ্ধান্ত মনের মধ্যে নিয়েই আসেন, নিছক ভাষণ শুনতে আসেননা।
আগামী কয়েকদিন এমন ভাবে আমাদের লড়তে হবে যাতে আগামীদিন কোনও বিজেপি নেতা আপনাদের বিভ্রান্ত করার সাহস না পায়।
এই নির্বাচন দুটি ব্যাক্তির লড়াই, সাম্প্রদায়িক মোদী বনাম বাংলার অগ্নিকন্যা দিদির। এই নির্বাচনে কোনও অঙ্ক, সমীক্ষা কাজ করবেনা।
বিজেপি ২০১৪ সালে আচ্ছে দিনের স্বপ্ন দেখিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল। ২০১৫ সালে বাংলায় উপনির্বাচন হয়েছিল, তখন যিনি বিজেপির প্রার্থী হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, চার বছরে আর তাঁকে দেখা যায়নি। সারা বছর তৃণমূল কংগ্রেস মানুষের পাশে থাকে।
আমরা বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের নীতিতে বিশ্বাস করি। ধর্মের রাজনীতি আমরা করি না। এখানে দুমাস আগে প্রধানমন্ত্রী সভা করে গেছিলেন, কিন্তু, তাদের এতই দুর্দশা, হরিচাঁদ ঠাকুরকে হরিশচন্দ্র ঠাকুর বলে ডাকছে। এটা ভারতবর্ষের লজ্জা। মতুয়া সমাজকে বলছে মাতুয়া সমাজ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন রেলমন্ত্রী ছিলেন, তখনও ঠাকুরনগর রেলষ্টেশন থেকে শুরু করে ঠাকুরবাড়ি পর্যন্ত রাস্তা তৈরী এবং তার সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছিলেন। আজ তিনি হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ও করেছেন।
বড়মাকে রাজ্য সরকারের সর্বোচ্চ সম্মান বঙ্গবিভূষণে ভূষিত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এখানে বড়মার সঙ্গে দেখা করেছেন কিন্তু, কোনও সম্মানে ভূষিত করেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আগামী দিন কেন্দ্রে সরকার গঠন হলে, ভারতের সর্বোচ্চ সম্মানে বড়মাকে ভূষিত করব।
আগের বার আমরা বিজেপিকে ৩ লক্ষ ভোটে হারিয়েছিলাম, এবার ৫ লক্ষ ভোটে হারাব।
বিজেপি হিন্দুদের জন্য কিছু করেনি। আমরা স্বামী বিবেকানন্দের হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী, মোদী-যোগী-অমিত শাহের হিন্দুধর্মে বিশ্বাস করি না।
প্রধানমন্ত্রীকে আমরা কখনও চা বিক্রী করতে দেখিনি।
সিপিএমের দেনার বোঝা নিয়েও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমস্ত উন্নয়ন করেছেন রাজ্যের। এক পয়সাও অতিরিক্ত কর চাপাননি সাধারণ মানুষের ওপর।
বাংলার মাটি আন্দোলনের মাটি, নবজাগরণের মাটি। রাজ্যের নাম পাল্টে ‘বাংলা’ করে বহুদিন আগে পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুমোদনের জন্য। আজ পর্যন্ত তারা সেটার অনুমোদন দেয়নি। বাংলা গ্রাম সড়ক যোজনা নামেও তাদের আপত্তি। তাদের বাংলা নামেই আপত্তি। বাংলা শব্দ শুনলেই ওরা ভয় পাচ্ছে।
আচ্ছে দিনের নামে প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়িয়েছে বিজেপি। ওরা যত হারবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম তত কমবে। ১লা জুন থেকে রান্নার গ্যাসের দাম আবার ৪০০ টাকা হবে না এক ধাক্কায় ২ হাজার টাকা হবে, সেই সিদ্ধান্তটা আজ আপনাদের সেই সিদ্ধান্তটা এই সভা থেকে নিয়ে ফিরতে হবে।
কয়েকদিন আগে ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন নতুন ভোটারদের জওয়ানদের দেখে ভোট দিতে। এরম নিকৃষ্ট প্রধানমন্ত্রী ভারতবর্ষ এর আগে দেখেনি।
এখানকার মানুষরা তৃণমূল কংগ্রেস ছাড়া অন্য প্রার্থীর নামও জানেনা।
আজ নরেন্দ্র মোদী সেনার নামে ভোট চাইছেন। অথচ দুবছর আগে এক ভারতীয় জওয়ান তেজ বাহাদুর মোদীর নেতৃত্বে সেনার দুর্দশা নিয়ে একটি ভিডিও ছাড়েন ফেসবুকে। এর জন্য তাঁকে সেনা থেকে বহিস্কার করা হয়। তিনি আজ বারাণসী থেকে নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়েছেন।
ভারতের শত্রু দেশ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলছে আমরা মোদীকে চাই।
সারা দেশ থেকে বিজেপির বিদায় শুধু সময়ের অপেক্ষা।
আজ অন্নপূর্ণা পুজো, বিজেপির কেউ কোনও শুভেচ্ছা বার্তা পাঠায়নি। আজ জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের ১০০ বছর, বিজেপি কোনও মিছিল করেনি।
ভারত মাতার জয় বলে বাংলাকে অশান্ত করা যাবেনা।
আসন্ন লোকসভাতে প্রতিটি বুথে বিজেপিকে পরাজিত করতে হবে।
আপনাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনাদের ভোট বাংলার পক্ষে না বাংলার বিপক্ষে, উন্নয়নের পক্ষে না বিপক্ষে।
আগামী ৬ তারিখ আপনারা নির্দ্বিধায় তৃণমূল প্রার্থীকে ভোট দিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আনুন ও দেশ গড়তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত শক্ত করুন।