অগাস্ট ২৬, ২০২০
যতক্ষণ না পরিস্থিতি অনুকূল হচ্ছে ততক্ষণ পরীক্ষা পিছোনো হোক: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

করোনা আবহে NEET ও JEE পরীক্ষা স্থগিতের দাবিতে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠকের আহ্বান জানান সনিয়া গান্ধি ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ করোনার পরিস্থিতিতে দুটি সর্বভারতীয় পরীক্ষা হলে ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়ে যাবে৷ তাই পরীক্ষাগুলি স্থগিত করা হোক, ইতিমধ্যেই এই দাবিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে দুটি চিঠি দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এই দাবি আরও জোরাল করতে আজ অর্থাত্ বুধবার দেশের সাতটি অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন৷ বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
বৈঠকে ছিলেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, ছত্তীসগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলা, পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে প্রমুখ৷
শুধু NEET ও JEE পরীক্ষা স্থগিতই ইস্যু নয় বৈঠকের৷ দেশের যুক্তরাষ্ট্র কাঠামোকে অক্ষুণ্ণ রাখাকেও অ্যাজেন্ডা রাখা হয়েছিল বৈঠকে৷
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ
রাজ্য় সরকারগুলোর কাছে আমার আর্জি, সকলে একজোট হয়ে সুপ্রিম কোর্টে চলুন এবং যতক্ষণ না পরিস্থিতি অনুকূল হচ্ছে ততক্ষণ পরীক্ষা পিছোনো হোক
অতিমারির আবহে ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তাতে মানসিক অবসাদে ভুগছেন অনেকেই। করোনার জেরে এখনও যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হয়নি দেশে। এমন পরিস্থিতিতে পড়ুয়ারা পরীক্ষা দিতে যাবেনই বা কী ভাবে? পরীক্ষা স্থগিত রাখার আর্জি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনও উত্তর পাইনি।
পড়ুয়ারা মানসিক অবসাদে ভুগছেন, সে কথা জানিয়ে শীর্ষ আদালতে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে দেখার আর্জি জানানো উচিত কেন্দ্রের। তা না হলে আমাদেরই এ গিয়ে আসতে হবে। রাজ্যে আমাদেরও নির্বাচিত সরকার রয়েছে। এক সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে যেতে পারি আমরা। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত পরীক্ষা স্থগিত রাখার আবেদন জানাতে পারি। এ ব্যাপারে সব মুখ্যমন্ত্রীকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রীর হাতে বিকল্প ছিল। সুপ্রিম কোর্টকে রায় বিবেচনা করার আর্জি জানাতে পারতেন। গণতন্ত্রের উপর এমন আঘাত আগে কখনও দেখিনি। পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুতর। আমাদের ঝুঁকি নিতে হবে। পড়ুয়াদের ভবিষ্যতের প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে। এক সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টে যাই চলুন। সেই সঙ্গে গণ আন্দোলনও করা যেতে পারে। দিকে দিকে গাঁধীজির মূর্তি রয়েছে। তাঁকে অনুসরণ করে ধর্নায় বসতে পারি আমরা।
করের টাকা কেন্দ্রকে তুলে দিচ্ছি আমরা। অথচ কেন্দ্রের কাছ থেকে কিছুই পাইনি। মে-জুনে চার হাজার ১০০ কোটি টাকা পাওনা বাকি রয়েছে। এ ভাবে কী করে সরকার চালাব? কোভিড চিকিৎসার খরচ বিপুল। কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিতে অর্ধেক টাকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মানুষের হয়ে লড়তে গেলে আমাদের চুপ করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
এমন অত্যাচার আগে কখনও দেখিনি। খোলাখুলি ভাবে কোনও মন্তব্য করার উপায় নেই। সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতাও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। কী বলা হবে, আর কী হবে না, তা ঠিক করে দিচ্ছে সরকার। আমাদের রুখতে টাকা ঢালা হচ্ছে। ভুয়ো খবর ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে চারিদিকে। এ সব বললে, আমাকে যদি গ্রেফতার করে, করুক। আমি ভয় পাই না।