নভেম্বর ২৩, ২০২০
বিরসা মুন্ডার জন্মদিনে রাজ্যে ছুটি ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ বাঁকুড়ার খাতড়ায় একগুচ্ছ প্রকল্পের সূচনা ও শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী যেসব প্রকল্পের সূচনা ও শিলান্যাস করেন তার মোট মূল্য ৩৫৩ কোটি টাকা। এ ছাড়া এই মঞ্চ থেকেই ২১ জনকে প্রতীকী পরিষেবা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী নিজে।
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশ:
- আমাদের নতুন প্রকল্প – দুয়ারে দুয়ারে সরকার, যা থাকবে মানুষের কাছে মানুষের প্রয়োজনে , সব ব্লকে ক্যাম্প তৈরী হবে। মানুষ এর যা দরকার তা দেওয়া হবে, আর এখুনি সম্ভব না হলে প্রাপ্তি তালিকার লিস্ট তৈরী হবে। ১ লা ডিসেম্বর থেকে বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ৩ পর্যন্ত এই ক্যাম্প চলবে
- আদিবাসীদের স্কলারশিপ ১০০% করে দেওয়া হবে
- যাদের খড় টালি বা মাটির বাড়ি আগে তাদের পাকা বাড়ি তৈরী করে দেওয়া হবে
- কেন্দ্র একটা করে প্রকল্প তৈরী করে তারপর টাকা দেওয়া বন্ধ করে দেয়, এইভাবে ওরা প্রচুর বেকার তৈরি করে
- রাজ্যে আমরা এমন কোন প্রকল্প করিনি যা বন্ধ হয়ে মানুষের চাকরি চলে গেছে। এই রাজ্যে মানুষদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে চাকরির বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছে। বাংলায় বেকারত্ব কমেছে ৪০%, যখন দেশে বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ
- অনেক রাজ্যে সরকারি কর্মচারীরা মাইনে পাচ্ছে না, ৩০% মাইনে কমিয়ে দিয়েছে, এম পি ল্যাডের টাকা বন্ধ, ডিএ ফিজ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতি মাসে এক দিন করে মাইনে থেকে টাকা কাটা হয়. একমাত্র বাংলায় কারো মাইনে কাটা হয়নি
- আমি আজ এক তপশিলি গ্রামে গিয়ে ওদের কথা শুনলাম। আমি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের মতন গিয়ে লোক দেখিয়ে বাসমতি চালের ভাত খাই না, যাওয়ার আগে বাড়ি রং করা স্যানিটাইজ করে তারপর সেখানে গিয়ে ওদের সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করার মতন লোক দেখানো কাজ আমরা করি না. ফাইভ স্টার হোটেল থেকে ভাত এনে দলিতের বাড়িতে খায়। এসব ভাঁওতা মানুষ বুঝে গেছে। দেখাচ্ছে তরকারি কাটছে, আর খেয়েছে অন্য জিনিস।
- রাজ্য থেকে টাকা তুলে নিয়ে যাওয়া হয়, সেটা থেকে একটা ভাগ আমাদের দেয়. আমাদের ভাগের টাকাও আমাদের ঠিক করে দে না। মাছের তেলেই মাছ ভাজছে।
- ১০০ দিনের কাজের মাইনে পাঠায় ৩ মাস পর, কেন?
- এই জেলায় ৩২০০০ পরিযায়ীকে কাজ দেওয়া হয়েছে, সারা বাংলা জুড়ে এই কাজ হয়েছে। মুর্শিদাবাদের সবচেয়ে বেশি পরিযায়ীকে কাজ দেওয়া হয়েছে
- ৯ বছরে ৯ বারের বেশি আমি এসেছি বাঁকুড়ায়। মুকুটমণিপুর কত সুন্দর হয়ে গেছে, আমাদের সরকার মুকুটমণিপুর ডেভেলপমেন্ট বোর্ড করেছে, খেলার স্টেডিয়াম, ব্লাড ব্যাংক থেকে শুরু করে, সাবস্টেশন, কমিউনিটি হল, থেকে শুরু করে রাস্তা সব কিছু হয়েছে
- আজও এই জেলায় একগুচ্ছ প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস হল। এলাকায় হাতির আক্রমণে মৃত্যু হলে তার পরিবারকে সরকারের তরফে ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও পরিবারের একজনকে হোম গার্ডের চাকরি দেওয়া হবে
- মাওবাদী হানায় যারা নিরুদ্দেশ তাদের পরিবারকেও ৪ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। অনেক মাওবাদীরা মূল স্রোতে ফিরে এসে আমাদের সঙ্গে কাজ করছে
- জঙ্গলমহলে জুনিয়র কনস্টেবল এর চাকরি পেয়েছে ১০,০০০ ছেলে মেয়ে তাদের মধ্যে ৫০০০ এখন সিনিয়র কনস্টেবল। সিভিক ভলেন্টিয়ার, আশা কর্মীদের মাইনে বাড়ানো হয়েছে
- পুরোহিতদের ভাতা দেওয়া হয় ১০০০ টাকা, আগামী দিনে এটা ২০০০ টাকা করা হবে
- বাঁকুড়ার বিখ্যাত ডোকরা, মৃৎ শিল্প সহ বাঁকুড়ার ঘরানা নিয়ে আমরা একটা আর্কাইভ করছি, এছাড়া সব মন্দির মসজিদ গির্জা একত্রিত করে একটি ম্যাপ তৈরী করা হচ্ছে
- আমরা মাটির সৃষ্টি প্রকল্প নিয়েছি, শুকনো জায়গা যেখানে ফলন হয়না সেই মাটি উর্বর করে ফসল ফলানো হবে. এই জেলায় ৮ হাজার বিঘা জমির ওপর এই কাজ হচ্ছে, আগামী দিনে কয়েক হাজার কর্মসংস্থান হবে
- আই সি ইউ, সিসিইউ, মহকুমা হাসপাতাল, এইচ ডি ইউ, পলিটেকনিক কলেজ, মডেল স্কুল হয়েছে
- অনেক পরিবার পাট্টা পেয়েছে, ৩০ টি ক্লাস্টার হয়েছে এছাড়া কর্মতীর্থ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক হয়েছে
- লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে যখন ফ্রেট করিডর চালু হবে
- আগে বাঁকুড়ার ১৫% লোক পানীয় জল পেত. আমাদের সরকার ৪০০০ কোটি টাকা খরচ করে ৭৫% লোকের ঘরে পানীয় জল পৌঁছে দিয়েছে, ২০২২ এর মধ্যে বাকি ২৫% ও পানীয় জল পাবে পাবে। প্রচুর জল প্রকল্পের কাজ নেওয়া হয়েছে দিনে ৫.১১ লক্ষ মানুষ পানীয় জল পাবেন
- ১৬০০০ গ্রামের রাস্তার সারাই করা হচ্ছে, গ্রামের রাস্তায় লরি চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার
- ৩০ টির বেশি ক্যানেল সেচের ব্যবস্থা ও ক্লাবগুলিকে আর্থিক সাহায্য করা হয়েছে
- এছাড়া এই জেলায় নতুন বিশ্ববিদ্যালয়, ৩ টি কলেজ, পৃথক স্বাস্থ্য জেলা, ৬ টি আইটিআই হয়েছে, ৯৯% কিষান ক্রেডিট কার্ড দেওয়া হয়েছে
- আগামী জুন পর্যন্ত বিনা পয়সায় রেশন পাবে, তারপর আমরা আরও বাড়িয়ে দেব আর আমাদের সরকারই ক্ষমতায় থাকবে
- ৫ কোটি টাকা দিয়ে আজ বাউড়ি কালচারাল বোর্ড গঠন করা হল, কয়েকদিনের মধ্যে মতুয়া ও বাগদি ডেভেলপমেন্ট বোর্ড ও হবে। এছাড়াও আমরা তরাই ডুয়ার্স, নমঃশূদ্র বোর্ড আগেই করে দিয়েছি
- আমরা স্কুলের মেয়েদের জন্য কন্যাশ্রী-১, কলেজের জন্য কন্যাশ্রী-২ আর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য কন্যাশ্রী-৩ চালু করেছি। ৭০ লক্ষ মেয়ে উপকৃত হয়েছে
- তপসিলীরা শিক্ষাশ্রী স্কলারশিপ (উপকৃত ৭২ লক্ষ), সংখ্যালঘুরা ঐক্যশ্রী স্কলারশিপ (উপকৃত ২ কোটি), সাধারণরা স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট স্কলারশিপ পাচ্ছে
- স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় সাড়ে ৭ কোটি লোক চিকিৎসার জন্য সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৫ লক্ষ টাকা কভারেজ পাচ্ছেন। এই কার্ড থাকলে ভেলোরেও চিকিৎসা করতে পারবেন
- সবুজশ্ৰী প্রকল্পে চারা দেওয়া হয়, মানুষ মারা গেলে সৎকারের জন্য ২০০০ টাকা দেওয়া হয়, স্কুল পড়ুয়াদের বিনামূল্যে বই খাতা ব্যাগ জুতো সাইকেল দেওয়া হয়
- বাংলায় স্কুল ছুটের হার অনেক কমে গেছে
- কৃষকদের ৫০০০ টাকা দেওয়া হয় বছরে, কোন কৃষক মারা গেলে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। বাংলায় শস্য বীমার জন্য এক টাকাও কৃষককে দিতে হয় না
- ২ লক্ষ লোক শিল্পীকে আমরা ১০০০ টাকা ভাতা দিই
- এতো সুবিধা এতো উন্নয়ন আর কোন রাজ্যে দেখবেন না
- সব জিনিসের দাম বেড়ে গেছে। কৃষক ধান আলু পেঁয়াজ বিক্রি করবে না, কালোবাজারি রা নিয়ে নিয়েছে, এই আইন করেছে দিল্লির সরকার।
- দিল্লির সরকার আলুর সরকার। আলু নেই, পিঁয়াজ নেই। সব লুঠ করে নিচ্ছে, এদের আর একটি ভোটও নয়। দু-তিনমাস বাদে আলু, পিঁয়াজের দাম আরও বাড়বে। এতো খেয়েও পেট ভরছে না, খেতে খেতে দানব দৈত্য হয়ে গেছে। সব চাই করতে করতে মানুষের জন্য কিছু নাই
- ভোটের আগে অনেক রাজনৈতিক দল আসবে। ব্যাংকে টাকা দেবে। মনে রাখবেন ওই টাকা আপনার টাকা। জমিদারির টাকা নয়। তাই টাকা নিন কিন্তু ভোট দেবেন না।
- সব কথায় বিজেপি এখন মামলা, উৎসব, দুর্গাপুজো, ছটপুজো সব কিছু নিয়ে মামলা করাই বিজেপির কাজ। সারাক্ষণ মামলা আর হামলা, ওটা নিয়ে গামলা করবে। আগামীদিনে দুর্গাপুজো, কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো আমরা করি না? সব করি। তা সত্ত্বেও নির্বাচনের আগে অনেকে এসে দাঙ্গা লাগানোর চেষ্টা করবে।
- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী একটা মূর্তিতে এসে মালা দিলেন, আর পরে আপনারা জানালেন ওটা অন্য শিকারির মূর্তি এখানে এসব চলবে না, যে অপমান আপনারা করেছেন বাংলার মানুষ মানবে না. তুমি বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙবে, অন্য লোকের গলায় মালা দিয়ে বলবে বিরসা মুন্ডার মূর্তি ওটাই ?
- আগামী দিনে বিরসা মুন্ডার জন্মদিনেও রাজ্যে ছুটি থাকবে, ওখানে একটা মূর্তি ও করা হবে
- কোভিডের চিকিৎসাও বিনামূল্যে করতে দেবে না, ইনজেকশন দেবে, নাটক যত। বলছে এখন আর আসবে ৬-৮ মাস পর। নির্দেশ দিলে আমরাই ইনজেকশন করতে পারি, আমাদের জানাক, প্রক্রিয়াটা কি, কোথা থেকে কিনতে হবে
- ৩০০ ট্রেনে পরিযায়ী শ্রমিকরা এসেছে, তাদের টিকিটের টাকা আমরা দিয়েছি। কেন্দ্র ওদের থেকে টিকিটের দাম নিয়েছে
- তোমার রাজ্যে ২ লক্ষ কোটি টাকা খেয়ে নিলেও চোর হয় না, আর এখানে ২ টাকা নিলেই চোর? চালুনি ছুঁচের বিচার করছে
- আমি অন্যায় সহ্য করি না, অভিযোগ এলে আমি ব্যবস্থা নি, কারণ আমি চাই মানুষ ভালো থাকুক। যতদিন থাকবো মানুষের কথা ভাববো। যখন থাকবো না নতুন টিম করে দিয়ে যাব, বাংলার মানুষের বদনাম করতে দেব না
- কো অপারেটিভ ব্যাংক থেকে একটা করে বাইকের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে, পিছনে একটা বাক্স থাকবে, সেখানে আপনি আপনার জিনিস নিয়ে বিক্রি করতে পারেবন, এর নাম কর্মই ধর্ম আমাদের নতুন প্রকল্প। ২ লক্ষ মানুষকে দেওয়া হবে দেব ফলে প্রায় ১০ লক্ষ মানুষের খাদ্যের যোগান হবে. আমি মনে করি কোন কাজ ই ছোট না
- কৃষক বন্ধু প্রকল্পে খরিফ শস্যের টাকা অ্যাডভান্স দিয়ে দেওয়া হচ্ছে জানুয়ারির মধ্যে, মে মাসের বদলে
- নির্বাচনের আগে হিংসার পরিস্থিতি তৈরি হবে, আপনারা সতর্ক থাকবেন। চাষী, দলিত, আদিবাসীদের অধিকার কেড়ে নেবে। ক্ষমতায় এসেই এনআরসি করবে