নভেম্বর ২৩, ২০২৩
বাংলায় কিছু না থাকলে ৪০টা দেশ আসত? : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ নেতাজি ইনডোরে দলীয় নেতা, কর্মীদের বৈঠক হয়। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য:
ডিসেম্বর দ্বিতীয় বা তৃতীয় সপ্তাহে সংসদ চলবে। আমরা দিল্লি যাব। সমস্ত সাংসদকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সময় চাইব। যদি সময় দেন ভাল, সময় না দিলে রাস্তাই আমাদের রাস্তা দেখাবে
এবার দিল্লি দখল হবে। আর তিনমাস। কিন্তু আমার ১০০ দিনের কাজের টাকা, আবাসের টাকা, রাস্তার টাকা দিতে হবে। মানুষের টাকা ফেরাতেই হয়। আর মাঝে কোনও কথা থাকবে না
যারা গদ্দার, ইন্ডিয়ার নাম যারা তুলে দিয়েছে, সিলেবাস তুলে দিয়েছে, ইতিহাসকে ভুলিয়ে দিয়েছে, তাদের কোনও ক্ষমা নেই।
ভোটার লিস্ট শুরু হয়ে গিয়েছে। ৯ ডিসেম্বর শেষ দিন। পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম যেন তালিকায় থাকে। ভোটার লিস্ট, পোস্টাল ব্যালট এখন থেকে নজর রাখবেন। বাড়ির মহিলাদের বলব, যে সব বাড়িতে ফর্ম পূরণের কেউ নেই, ভোটারকে বিডিও অফিসে নিয়ে যাবেন। বিডিও না থাকলে জেলাশাসককে লিখিত দেবেন। ইভিএম ঠিক মতো দেখতে হবে।
বঙ্গজননী আর মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসকে মার্জ করে দিলাম মালা রায় চেয়ারম্যান, চন্দ্রিমা প্রেসিডেন্ট। একসঙ্গে কাজ করবে।
আমাদের ৪টে বিধায়ককে জেলে ভরে রেখেছে। ভাবছে এভাবে সংখ্যাটা কমিয়ে দিই। এবার থেকে আমাদেরও সিদ্ধান্ত চুরির জন্য বদনাম দিয়ে আমার ৪ জনকে জেলে রাখে, আমি তাহলে সিদ্ধান্ত নিচ্ছি দলের পক্ষ থেকে ওদের ৮ জনকে জেলে ভরব। ওদের বিরুদ্ধে যা কেস আছে, খুনের কেস আছে, অন্য কেস আছে। পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে।
শান্তিনিকেতনে রবীন্দ্রনাথের নাম মুছে দিল।
ট্রেনের ভাড়া এরা প্লেনের ভাড়ার থেকে বেশি করে দিয়েছে। ইজ্জত চালু করেছিলাম। ১০০ কিলোমিটার পর্যন্ত তিন মাসে মাত্র ১৫ টাকায় যাতায়াত করতে পারবেন। এরা মানুষের ইজ্জত কেড়ে নেয়।
সংখ্যালঘু ভাইবোনের কাছে আমার বিশেষ আবেদন থাকবে, বিজেপির টাকা নিয়ে ২-১ জন ভুইফোঁড় উঠেছে। এমনকী হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের গাড়িকেও ধাক্কা দিয়েছে। ভাঙড়ের খুনেও জড়িত আছে। এরা গিয়ে বিজেপির টাকা নিয়ে সংখ্যালঘুদের কাছে নানারকম মিথ্যা কথা বোঝাচ্ছে। বিশ্বাস করবেন না।
আগে চাষিরা ধানের দাম পেতেন না। রেশনে ভাঙা চাল, অর্ধেক পাথর মিশিয়ে দিত। আমরা এখন চাষিদের থেকে ৫৪ লক্ষ কোটি মেট্রিক টন চাল সরাসরি নিই চাষিদের থেকে। বিনা পয়সায় সকলকে রেশন দিই।
আমরা নিজেদের থেকে ১১ হাজার রাস্তার কাজ করছি। আমি আমার সকল সাংসদকে বলব, গ্রামীণ রাস্তা করুন তহবিলের টাকায়। যার এলাকায় যা পড়ে। বাংলার বাড়িও হবে। সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীতে যারা আবেদন করেছেন, ৯০ লক্ষ লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, ৯০ লক্ষ বিধবা ভাতা তৈরি রেখেছি।
বাংলায় কিছু না থাকলে ৪০টা দেশ আসত? রাশিয়া, আফ্রিকা, জাপান, নেদারল্যান্ড থেকে প্রতিনিধি এসেছে। ইউকে থেকে ৫২ জন এসেছে। সকলে বলছে বাংলায় ব্যবসা করবে। বাংলাই ডেস্টিনেশন।
৭২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হচ্ছে রঘুনাথপুরের শিল্পনগরীতে। আমরা ৫টা ইকোনমিক করিডর করছি। কর্মসংস্থানের ছড়াছড়ি হয়ে যাবে। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির অনেক পাট্টাই তৈরি।
৬টা বিজিবিএস-এ আমরা প্রায় ১৫ লক্ষ কোটি টাকার মতো ইনভেস্টমেন্ট পেয়েছি। তার মধ্যে ১০ লক্ষ কোটি টাকা খরচও হয়ে গিয়েছে। বাদবাকিটা প্রসেসে চলছে। গতকাল আমাদের সপ্তম বিজিবিএস শেষ হয়েছে। আমরা অভাবনীয় সাফল্য পেয়েছি। বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতি এসেছে ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকারও বেশি। আমাদের জিএসডিপি চারগুণ বেড়েছে। রাজস্ব চারগুন বেড়েছে। টাকা না দেওয়ার পরও। মোট বাজেট বরাদ্দ ৩.৮ শতাংশ বেড়েছে। এই ইনভেস্টমেন্টগুলো থেকে ইতিমধ্যে ১ কোটি লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। শুধু এমএসএমইতে আলাদা আমার ১ কোটি ৩৬ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। মুখ্যসচিবকে বলেছি, শ্বেতপত্র তৈরি করে সকলের হাতে দিয়ে দিতে।
জনগণের টাকা দিয়ে একটা মন্দির করে ভাবছ ইতিহাস তৈরি করলে? কই দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের স্কাই ওয়াক করে দিয়েছি। জনগণের থেকে টাকা তো নিতে হয়নি। তারাপীঠে কাজ হয়েছে।
দুর্গাপুজো ইউনেস্কো হেরিটেজ পেল, বাংলার সম্মান বাড়েনি? ইউনেস্কো পশ্চিমবঙ্গকে টুরিজম ও কালচারের ওয়ার্ল্ড ডেস্টিনেশন করেছে মুখে দেখে?
পাবলিক সেক্টর সব বিক্রি করে দিচ্ছে। রেল বেচে দিচ্ছে। দিল্লির মেট্রো আমার করা, মুম্বই রেল বিকাশ কর্পোরেশন আমার করা, কলকাতার যত মেট্রো রেলের প্রজেক্ট। আমি ২ লক্ষ টাকার প্রজেক্ট দিয়ে এসেছিলাম। করব আমরা, তোমরা গেরুয়া রং লাগাবে। গেরুয়া তোমাদের নয়। গেরুয়া ত্যাগীদের, ভোগীদের নয়।
আজকে বাংলায় একটা হিংসা হলে, প্রি-পোল ভায়োলেন্স, পোস্ট পোল ভায়োলেন্স। আর আপনাদের সময় হলে তখন কী হয়? তখন ক’টা মানবাধিকার দল যায়, কমিশন যায়?
একটাই ট্যাক্স জিএসটি। রাজ্য কোনও ট্যাক্স তোলে না। সবটাই কেন্দ্র তুলে নিয়ে চলে যায়।
আমাদের অ্যালেয়েন্সের নাম দিলাম। বলল কী হবে? নামটা আমার কাছ থেকেই এসেছে। আমি বললাম, ইন্ডিয়া। কারণ, আমাদের দেশের নামও ইন্ডিয়া। পরের দিন থেকে ইন্ডিয়া চেঞ্জ। তাহলে বুঝুন। ভারত তো আমরাও বলি। কিন্তু কনস্টিটিউশন অব ইন্ডিয়া এটা বদলাবেন কী করে?
প্রতিটা জেলা, ব্লক যেভাবে পুজোগুলো নিয়ে এসেছে, উত্তরণ হয়েছে, আগামিদিন কলকাতার পুজো কমিটিগুলিকে ভাবাবে।