ভিনরাজ্যে বাঙালিদের হেনস্থার প্রতিবাদে আজ রাজপথে নামে তৃণমূল কংগ্রেস। মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সঙ্গে ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, শশী পাঁজা, দোলা সেন-সহ একাধিক শীর্ষ নেতা। আজ ধর্মতলার সমাবেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের কিছু অংশ :
ডিভিসির জলে, পাঞ্চেতের জলে প্রায় ২৭ হাজার লক্ষ কিউবিক মিটার জল ছেড়েছে এ বারে। তার মধ্যে বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বর্ধমানের কিছুটা, হুগলি, হাওড়া, নদিয়ার কিছুটা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা-সহ সারা বাংলায় অনেকে প্লাবিত হয়েছেন। তাঁদের জন্য গতকাল আমরা মিটিং করেছি। আমরা যা যা করার করব। আপনারাও সকলে তাঁদের সকলে থাকবেন
আজকেই আমি সব বলব না। ২১ জুলাই আপনাদের আসতে হবে। ২১ জুলাইয়ের আমন্ত্রণ সকলকে আমি এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে করে গেলাম
কলকাতায় জল কম জমে। একটি দু’টি ওয়ার্ড ছাড়া। আগে একটু বৃষ্টি হলেই পুরো জল জমে যেত। এখন ৯৯ শতাংশ কভার করা হয়েছে। যেটুকু বাকি রয়েছে ২০২৬ সালের মধ্যে টোটালটাই কমপ্লিট করে দেওয়া হবে
আমি অত্যন্ত লজ্জিত, ব্যথিত, দুঃখিত, মর্মাহত ভারত সরকার এবং বিজেপির এই আচরণে। ভারত সরকার একটি নোটিফিকেশন করেছে। সেটি আমরা চ্যালেঞ্জ করব। লুকিয়ে লুকিয়ে নোটিফিকেশন করে যেখানে বিজেপি আছে সেখানে পাঠিয়েছে। সেখানে পরিষ্কার বলা হয়েছে, যাকেই সন্দেহ হবে, বাংলায় কথা বলে, তাঁকে অ্যারেস্ট করবে, ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে। কেউ আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গেলেও এমন হচ্ছে
অন্য ভাষাভাষী মানুষদের আমি সম্মান করি। প্রত্যেক ভারতীয়কে আমি সম্মান করি। বাঙালিদের উপর অত্যাচার মানব না
বিজেপি কি দেশের জমিদারি পেয়ে গিয়েছে? যাকে ইচ্ছা জেলে পাঠিয়ে দিচ্ছে। বাংলা ভাষায় কথা বললে বাংলাদেশি রোহিঙ্গা বলে দিচ্ছে। বাংলাদেশ তো আলাদা দেশ। রোহিঙ্গা তো মায়ানমারের। তাতে আমাদের এখানে কি! পশ্চিমবঙ্গের নাগরিকদের কাছে আধার কার্ড, প্যান কার্ড রয়েছে। আমাদের ২২ লক্ষ বাংলার মজদুর আছে। তাঁরা বাংলায় থাকলে অনেক ভাল থাকতে পারেন। তাঁদের দিয়ে কাজ করাবে, আর বাংলায় কথা বললেই তাঁকে জেলে নিয়ে যাবে, ডিটেনশন ক্যাম্পে নিয়ে যাবে। কেন? কোন অধিকারে? পশ্চিমবঙ্গ কি ভারতের অঙ্গ নয়?
বাঙালিদের উপর এত রাগ কেন? কী করেছে বাঙালিরা আপনাদের? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখিবন্ধন করেছিলেন। ভারত এবং বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা। জনগণমণ অধিনায়ক কি একজন বাঙালি লেখেননি? তখন তো দেশ একজোট ছিল
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হাতে সিআইএসএফ, সিআরপিএফ আছে। বিমানে কেউ এলে, সেটিও কেন্দ্রের অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক দেখে।অনুপ্রবেশ দেখার কাজ কেন্দ্রীয় সরকারের
আমি বিহারে শুনেছি ৩০.৫ লক্ষ ভোট বাদ দিয়ে দিয়েছে। এ সব করে মহারাষ্ট্রে বিজেপি জিতেছে। না হলে জিততে পারত না। দিল্লিতেও এই সব করেই জিতেছে। বিহারেও সেই পরিকল্পনা করছে। তারাও আমাদের ভাই-বোন। বাংলাতেও পরিকল্পনা করছে। আমরা ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে লড়াই করব। বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমিও আমরা ছাড়ব না
কেউ কাজ করলে তাঁকে হঠাৎ গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নথিপত্র দেখানোর পরেই জেলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাঁর বয়স্ক মা, স্ত্রী, বাচ্চাগুলোকেও নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কী অপরাধ করেছে তারা? বাংলা ভাষায় কথা বলেছে। কেন্দ্রের মনে রাখা উচিত, আমাদের রাজ্যেও দেড় কোটির বেশি পরিযায়ী শ্রমিক রয়েছেন। আমরা তাঁদের সঙ্গে কখনও এমন করি না। আমরা ইজ্জত দিই, আর আপনারা বেইজ্জত করেন
মহারাষ্ট্রে মতুয়াভাষীদের উপর অত্যাচার হয়েছে। নির্বাচনের সময় মতুয়াদের বাড়ি গিয়ে ভোটভিক্ষা করেন। অন্য সময় অত্যাচার করেন। উদয়ন জানেন কতজন রাজবংশীকে বাংলাদেশে পুশব্যাক করা হয়েছে এবং তাঁদের জেলে রাখা হয়েছে।নদিয়ার লোকেদের ছত্তীসগঢ়ে আটকে রাখা হয়েছে। দিল্লিতে পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দাদের জলের লাইন এবং বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে
ছত্তীসগঢ়ের খবর পেয়ে নদিয়ার বাংলাভাষীদের ছাড়াতে মহুয়া মৈত্র সেখানে গিয়েছেন। দিল্লিতেও হেনস্থার শিকার বাঙালিদের নিয়ে ৪৮ ঘণ্টা ধর্না করেছেন। কোচবিহারের বাসিন্দাদের অসম সরকার নোটিস পাঠিয়েছে। তাদের কী অধিকার আছে?