অগাস্ট ২৪, ২০১৮
মানুষের জয়: পঞ্চায়েত রায় প্রসঙ্গে বললেন মুখ্যমন্ত্রী

পঞ্চায়েত রায় নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে একযোগে বিরোধীদের আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন নবান্নে দাঁড়িয়ে সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেসকে একযোগে বেঁধেন মমতা। বিরোধীদের বিরুদ্ধে পালটা রাজ্যের সম্মান ভূলুণ্ঠিত করার অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিন নবান্নে সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সিপিএম, কংগ্রেস ও বিজেপি পরিকল্পনা করে বাংলাকে অসম্মান করেছে। বাংলার প্রেস্টিজকে খাটো করেছে।’ মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ‘রাজনৈতিক স্বার্থে অসত্য ভাষণ দিয়েছে বিরোধীরা। কুত্সা ও অপপ্রচার করেছে রাজ্যের বিরুদ্ধে। আজকে আদালতের রায়ে সেটা প্রমাণিত।’ এদিনের রায়কে ‘মানুষের জয়’ বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের কিছু অংশ:
পঞ্চায়েত নিয়ে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি – এই তিনজন ওস্তাদ (জগাই-মাধাই-বিদাই) প্ল্যান করে শুধু বাংলাকে অসম্মান করেছে তা নয় অসত্য ভাষণ দিয়েছে, মিথ্যে কথা বলেছে, কুৎসা করেছে, অপপ্রচার করেছে, চক্রান্ত করেছে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে। আজকে কোর্টের রায়ে প্রমাণিত হয়েছে এই কথা।
এই জয় মানুষের জয়। পঞ্চায়েতে, যেখানে ৭০% এর ওপর নির্বাচন হয়েছে, সেখানে আমরা জিতেছি, জেলা পরিষদে, যেখানে ৮০% নির্বাচন হয়েছে, সব ক’টি জেলা পরিষদ আমরা পেয়েছি।
একটা জিনিস বুঝতে হবে যে, পঞ্চায়েত নির্বাচন একটা লোকাল নির্বাচন – যা একটা বুথে কত ভোটার থাকে তার ওপর নির্ভর করে. এক একটা বুথে কোন গ্রামে ৭০০/৬০০/৫০০ ভোটার আছে. একটা ক্লাবের সেক্রেটারি কয়েকজন মিলে ঠিক করে তেমনই অনেক গ্রামে গ্রামবাসীরা মাইল ঠিক করে কে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়বে আর কে লড়বে না।
বাংলায় তো আমি ক্ষমতায় আছি অথচ বেলপাহাড়িতে আমার একটাও আসন নেই, ওখানে লড়াইও করতে দেয়নি ওখনকার মোড়লরা। শুধু নিজেদের একটা প্রতিষ্ঠানের নাম কিছু লোককে ওরা দাঁড় করিয়েছে।
অরুণাচল প্রদেশ, সিকিমেও ৮১% বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী প্রার্থী আছে. উত্তরপ্রদেশের আছে ৬১% অথচ কেউ কখনো তা নিয়ে কিছু বলেনা। মধ্যপ্রদেশেও আছে, আমার কাছে টোটাল ফিগার আছে। বাংলা নিয়ে চিৎকার করতে শুরু করেছে, কত অপমানই না করেছে, বদনাম করেছে।
অসম্মান করারও তো একটা সীমা থাকে। কেউ বললো ইমেল, কেউ বললো হোয়াটস্ অ্যাপে মনোনয়ন জমা দিতে, কোর্ট সব খারিজ করে দিয়েছে। যে আইন জনগণের পক্ষে নয় তাকে ভালো কেন বলবো?
আজ দেশে স্বৈরাচারী ব্যবস্থা হয়েছে। কার বাড়িতে কোন এজেন্সি রেড করবে, কোন টিভি চ্যানেল বন্ধ করতে হবে, কোন টিভি চলেলের মালিকের বাড়ি রেড হবে, কোন সাংবাদিকের চাকরি যাবে, তা আজ বিজেপি দল ঠিক করে দিচ্ছে। অন্যায়ের শেষ নেই।
কোনও কোনও মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেও রেড করা হচ্ছে। এরকম অনেক কিছুই আমরা দেখতে পাচ্ছি। গণতন্ত্রে এরকম হয় না। আঞ্চলিক স্তরে সাংবাদিকরা কিছু কিছু বলতে পারলেও জাতীয় স্তর পুরো বিকিয়ে গেছে।
রাষ্ট্রসংঘের কনভেনশনে বলা আছে, আমার কাছে যদি কেউ আসে, তাকে আশ্রয় দিতে হবে।
বিজেপির সেইসমস্ত নেতা, যারা মাঝে মাঝে দলিতদের বাড়িতে গিয়ে নেমন্তন্ন খেয়ে আসেন, তাদের বলছি, আদিবাসীরা (মাংস) খায়, এটা ওদের অভ্যাস।
উত্তর-পূর্বে গিয়ে বিজেপি বলুক দেখি… অনেক খ্রিস্টানরা খায়, অনেক এশিয় দেশে এই মাংস খাওয়া হয়। আমি খাই না, আমি তো পাঁঠার মাংসও খাই না। কিন্তু, আমার কোনও অধিকার নেই আরেকজন কি খাবে না খাবে সেটা ঠিক করার।
কাল যদি কেউ প্রশ্ন করে, মাছ কেন কাটবে? আলু কেন কাটবে? আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু প্রমাণ করে গেছেন, উদ্ভিদের প্রাণ আছে। তোমার যেটা পছন্দ না, সেটা তুমি সবার ওপর চাপিয়ে দেবে? প্রত্যেক মানুষের নিজের অধিকার আছে। ধর্ম যার যার উৎসব সবার।