ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৯
২০১৮ সালে কর্মসংস্থান হয়েছে ৯ লক্ষঃ অমিত মিত্র
আজ বিধানসভায় বাজেট পেশ করলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
দেখে নিন বাজেট বিবৃতির কিছু অংশ:
আমাদের দেশ এখন এক ভয়ঙ্কর সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে স্বাধীন সংস্থা যেমন সিবিআই এবং আরবিআই এমনকি সাংবাদিকরা, কেউ বাদ যাচ্ছেন না আক্রমণের থেকে।
কেন্দ্রের এই আক্রমণের জন্য, দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো নষ্ট হচ্ছে। এই হস্তক্ষেপের প্রবনতা থেকে রেহাই পায়নি সুপ্রিম কোর্টও।
কেন্দ্র কর্মসংস্থানের তথ্য গোপন করতে চাওায় এনএসএসও এর ডিরেক্টর পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন। ঝুলি থেকে বিড়াল বেরিয়ে পড়েছে। ২০১৮ সালে দেশে সব থেকে বেশী বেকারত্বের সৃষ্টি হয়েছে
কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির বিরুদ্ধে সবসময় সোচ্চার হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মানুষ জানে কেন্দ্রের দেওয়া প্রতিশ্রুতিগুলি অলীক।
সারা দেশের হাজার হাজার কৃষক আত্মহত্যা করেছে। বাংলায় কৃষকদের গড় আয় বার্ষিক ৯১০০০টাকা থেকে তিনগুণেরও বেশী বেড়ে ২৯৪০০০টাকা হয়েছে
কেন্দ্রীয় সরকার বলেছিল, তারা ক্ষমতায় এলে বিদেশে গচ্ছিত কালো টাকা ফিরিয়ে আনবে। সেখানে আরও অনেক লোক দেশের মানুষের কয়েক হাজার কোটি টাকা মেরে পালিয়ে গেছে।
দেশের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা আইসিইউতে চলে গেছে। এনপিএ পাঁচগুণ বেড়ে গেছে কয়েক বছরে।
সমস্তও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে নষ্ট করে, কেন্দ্র অভিসন্ধিমূলক এক্সপায়ারি বাজেট পেশ করেছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের অগণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারী, জনবিরোধী কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছেন। বাংলা দেশকে পথ দেখাচ্ছে।
এই রাজ্য কেন্দ্রের ফ্যাসিস্ট, বিভেদসৃষ্টিকারী শক্তির কোনও রকম ষড়যন্ত্রকে বরদাস্ত করবে না।
আমরা যখন সরকারে আসি, রাজ্যের জিডিপি ছিল ৪.৬১ লক্ষ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ সালে তা বেড়ে হয়েছে ১১.৫ লক্ষ কোটি টাকা হয়েছে। রাজ্যের জিডিপি বৃদ্ধির হার দেশে সর্বোচ্চ।
২০১৭-১৮ সালে ভারতের শিল্প বৃদ্ধির হার ৫.৫৪%, সেখানে বাংলার শিল্প বৃদ্ধির হার ১৬.২৯%
রাজস্ব ঘাটতি ২০১০-১১ সালে ৩.৭৫% থেকে নেমে ০.৯৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে
আর্থিক ঘাটতি ২০১০-১ সালে ৪.২৪% থেকে নেমে ২০১৭-১৮ সালে ২.৮৩% হয়েছে
রাজ্যের কর বাবদ আয় ২০১০ সালে ২১১২৮ কোটি থেকে আড়াই গুণ বেড়ে ২০১৭-১৮ সালে ৫৭৭০০ কোটি টাকা হয়েছে।
রাজ্য পরিকল্পনা খাতে রাজ্য সরকার ৩.৪৫ লক্ষ কোটি টাকার বেশী এবং মূলধনী খাতে ৯২০০০ কোটি টাকা সামাজিক সম্পদ সৃষ্টি ও পরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে ব্যয় করেছে।
আমাদের রাজ্যে খাদ্যের উৎপাদন ২০১০-১১ সালে ১৪৮ লক্ষ ১০ হাজার ছিল, যা ২০১৭-১৮ সালে বেড়ে হয়েছে ১৮২ লক্ষ ৯২ হাজার মেট্রিক টন।
উৎপাদিত শস্য গুদামজাত করার ক্ষমতা ৬৩০০০ মেট্রিক টনের জায়গায় ৯.১৬লক্ষ মেট্রিক টন হয়েছে যা প্রায় ১৫ গুণ বেশী।
কৃষি জমির ক্ষেত্রে খাজনা ও মিউটেশন ফি ১০০ শতাংশ শুন্য করা হয়েছে।
৮ কোটি ৮২ লক্ষ মানুষ খাদ্য সাথী প্রকল্পে স্বল্প মূল্যে খাদ্য সরবরাহ করা হয়।
ধান দিন চেক নিন প্রকল্পে ন্যায্য মূল্যে শস্য কেনার দাম কৃষকদের সরাসরি মেটানো হচ্ছে। রাজ্যের ১ লক্ষ কৃষককে মাসে ১ হাজার টাকা করে পেনশন দেওয়া হচ্ছে।
গত বন্যায় প্রায় ৩২ লক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক পরিবারবকে ১,২০০ কোটি টাকা দিয়েছে।
বাংলা ফসল বীমা যোজনায় এখনও পর্যন্ত ২৪ লক্ষ কৃষককে নথিভুক্ত করা হয়েছে। কৃষকদের দেয় প্রিমিয়ামের টাকাও রাজ্য সরকার দিচ্ছে। কেন্দ্র এই প্রকল্পে নানারকম হস্তক্ষেপ করার ফলে, রাজ্যের চাষিদের স্বার্থে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এই প্রকল্প পুরোপুরি রাজ্যের তত্ত্বাবধানে চলবে। কেন্দ্র সরকারের দেয় ২০% রাজ্য সরকার মিটিয়ে দেবে।
জল ধরো জল ভরো কর্মসুচীর অধীনে বিগত সাড়ে সাত বছরে ২.৬২ লক্ষ জলাশয়কে সংস্কার ও খনন করা হয়েছে।
রাজ্যের যেসব জায়গায় ব্যাঙ্কিং পরিষেবা নেই, সেইসব জায়গায় আমরা ২৬৩১টি প্রাথমিক কৃষি সমবায় সমিতিকে ব্যাঙ্ক হিসেবে পরিণত করা হয়েছে।
খামারগুলিকে উৎসাহিত করতে নতুন একটি ইন্সেন্টিভ স্কীম শুরু করা হয়েছে।
ডিম উৎপাদনে রাজ্য স্বনির্ভর হতে বিনামূল্যে বিপুল পরিমানে হাঁস মুর্গীর ছানা বিতরন করা হচ্ছে।
রাজ্যের কন্যাশ্রী প্রকল্পে ৫২ লক্ষ কন্যাশ্রই প্রকল্পে ৫২.৫ লক্ষ ছাত্রী নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুবিধা পাচ্ছে।
বর্তমানে কন্যাশ্রী প্রকল্পে আয়ের সীমা তুলে দিয়ে রাজ্যের ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সী কন্যাকে এই প্রকল্পে আনা হয়েছে। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে কলা ও কমার্স বিভাগের ছাত্রীদের ২০০০ টাকা এবং বিজ্ঞানের ছাত্রীদের ২৫০০ টাকা করে প্রতি মাসে বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।
নদীয়ার কৃষ্ণনগরে কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী করা হচ্ছে।
রূপশ্রী প্রকল্পে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৩২০ কোটি টাকা খরচ করে ১.২৬ লক্ষ মেয়েকে সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
মানবিক প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ২.৩৫ লক্ষ মানুষ সুবিধা পেয়েছেন। এর জন্য ১২২.৬৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে।
রাজ্যে ৪২টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল তৈরী করা হয়েছে, চিকিৎসা ব্যবস্থা সুলভ হয়েছে।
শিশু মৃত্যুর হাঁস ২০১১ সালে ছিল প্রতি হাজারে ৩২ যা কমে হয়েছে ২৫। প্রসূতি মৃত্যুর হার এখন ১১৩ থেকে কমে ১০১ হয়েছে। প্রসূতি সদনে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসবের হার ৯৭.৫% পৌঁছে গেছে।
২০১১ সালের আগে পর্যন্ত এই রাজ্যে একটিও এসএনএসইউ ছিল না, বর্তমানে ৩০৭টি এসএনএসইউতে এ রাজ্যে শিশুদের চিকিৎসা চলছে।
গত সাড়ে সাত বছরে এসএন সিইউর সংখ্যা ৬টি থেকে বেড়ে ৬৮টি হয়েছে।
রাজ্যের গরীব মানুষদের বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ দেওয়া হচ্ছে। ২০১৮ সালে এই বাবদ ব্যয় হয়েছে ১২৩১.৫ কোটি টাকা। ১০টি নতুন সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং ২৭টি নতুন নার্সিং প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করেছে।
রাজ্যের ২.৫ কোটি মানুষকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে।
বিগত সাড়ে সাত বছরে ৭০০০ প্রাথমিক ও উচ্চ প্রাথমিক স্কুল তৈরী করা হয়েছে। ২৭০০ জুনিওর হাইস্কুলকে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত করা হয়েছে।
গত সাত বছরে এই পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রী মিলিয়ে প্রায় ৭ কোটি স্কুলের ইউনিফর্ম, ১৬লক্ষ স্কুল ব্যাগ, ৫০ লক্ষ স্কুলে পড়ার জুতো বিতরন করা হয়েছে।
উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে ২০১১ সালে রাজ্যে ১২টি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল। এখন সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে রাজ্যে ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় আছে। উচ্চশিক্ষায় নথিভুক্ত ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ২০১১-১২ সালে ছিল ১৩.২৪ লক্ষ। যা ২০১৭-১৮ সালে বেড়ে হয়েছে ২০.৩৬ লক্ষ।
৭০ লক্ষ তপশিলি জাতি ও উপজাতির পড়ুয়া বৃত্তি পাচ্ছে শিক্ষাশ্রী প্রকল্পে।
সবুজ সাথী প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১কোটি বাইসাইকেল বিতরনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে।
তপশিলি উপজাতিভুক্ত জনজাতির নিজেদের গোষ্ঠীগত বিশিষ্ট তুলে ধরার জন্য ৬০০ কোটি টাকা ব্যয় করে প্রায় ২০টি গোষ্ঠী উন্নয়ন পরিষদ গড়ে তোলা হয়েছে।
রাজ্যে সম্প্রতি নমঃশূদ্র কল্যাণ পর্ষদ, মতুয়া কল্যাণ পর্ষদ তৈরী করা হয়েছে। মতুয়া সম্প্রদায়ের গুরু শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ও শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের অবদানকে স্মরণীয় করে ঠাকুরনগরে হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী করা হচ্ছে। এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শাখা কৃষ্ণনগরেও তৈরী করা হবে।
সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য ৪৪৫টি সংখ্যালঘু হোস্টেল ও ৩১২টি কর্মতীর্থ তৈরী করা হয়েছে, আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, সংখ্যালঘু ভবন গড়ে তোলা, পলিটেকনিক ও আইটিআই গড়ে তোলা হয়েছে।
বিভিন্ন কবরস্থানগুলি পাঁচিল দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সংখ্যালঘু ছাত্র ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদানের ক্ষেত্রেও এই রাজ্য দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে। সাড়ে সাত বছরে ২.০৩কোটি সংখ্যালঘু ছাত্রছাত্রীদের ছাত্রবৃত্তি দেওয়া হয়েছে। এর জন্য খরচ হয়েছে ৫২৫৭ কোটি টাকা।
৮ লক্ষের বেশী সংখ্যালঘু মানুষদের স্বনির্ভরতার জন্য ১৩০০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। এটি দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ।
২০১৮ সালে ৯০ লক্ষের বেশি ইউনিট হয়েছে, এই বিপুল সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য শুধু ২০১৭-১৮ সালে মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৫৫ হাজার কোটি টাকার বেশি।
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর অনুপ্রেরণায় রাজারহাটে ২০০ একর জায়গায় বেঙ্গল সিলিকন ভ্যালি আইটি হাব তৈরি হয়েছে। প্রধান প্রধান আইপি ও আইপিএস সম্পর্কিত কোম্পানিগুলো এখানে বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে এসেছে।
২০১৮ সালের বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে বিভিন্ন শিল্পপতিরা বিপুল সংখ্যায় জগদান করেছেন। ৩২ টি দেশ থেকে রেকর্ড সংখ্যক প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। এর ফলে শিল্পের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রায় ১৪৫.৯৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে।
তাজপুরের গভীর সমুদ্র বন্দরকে ইতিমধ্যেই নোটিফাই করেছে রাজ্য সরকার এবং প্রারম্ভিক কাজ শুরু হয়েছে
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফ্লিপকার্ট নামের ই কমার্স কোম্পানি হরিণঘাটায় প্রায় ১০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে লজিস্টিক হাব তৈরি করছে। এর ফলে প্রায় ১০ হাজার নতুন কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী কৃষক ভাইদের জন্য কৃষক বন্ধু নামের একটি প্রকল্প চালু করেছে। রাজ্যের ৭২ লক্ষ কৃষক যাদের জমির পরিমাণ ১ একর তাদের ২ কিস্তিতে বার্ষিক সর্বোচ্চ ৫০০০ টাকা অনুদান দেওয়া হবে। যাদের জমির পরিমাণ ১ একরের কম তারা আনুপাতিক হারে এই অনুদান পাবেন, যা কমপক্ষে ২০০০ টাকা। এছাড়াও মৃত্যুর পর তাদের পরিবার ২ লক্ষ টাকা অনুদান পাবে।
কর ও কর ব্যবস্থার সংস্কারঃ ভ্যাট, বিক্রয়কর ও পণ্য প্রবেশকর নিরসন প্রকল্পঃ ২০১৭ সালের জুন মাস থেকে নতুন সেটলমেন্ট স্কিম চালু করেছিলাম, এর ফলে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার বকেয়া কর আদায় সম্ভব হয়েছে যা রেকর্ড।
VAT, CST ও Entry Tax এর ক্ষেত্রে পুরনো বকেয়া করের জন্য ২০১৮ নভেম্বর থেকে একটা নতুন সেটলমেন্ট স্কিম চালু হয়েছে। এখন VAT ও CST র ডিসপিউটেড ট্যাক্স এ ৩৫% দিয়েই সরাসরি নিরসন করা যাবে। Entry Tax এর ক্ষেত্রে ১০০% ট্যাক্স দিয়ে পুরনো বকেয়ার ইন্টারেস্ট ও পেনাল্টি ছাড় পাওয়া যাবে
মোটর ভেহিক্যাল কর এর ক্ষেত্রেও একটা নতুন সেটলমেন্ট স্কিম আনা হয়েছে। এই স্কিমের মধ্যে ৩৫% অথবা ৫০% বকেয়া কর দিলে সমস্ত পুরনো কর নিরসন করা যাবে।
চা উৎপাদনের ওপর শিক্ষা সেস ও গ্রামীণ রোজগার সেস আগামী ২ বছরের জন্য সম্পূর্ণ মুকুব করার প্রস্তাব রাখছি।
নতুন প্রয়াসঃ
২০১১১ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রাজ্য সরকার শিক্ষিত কর্মপ্রার্থী যুবক-যুবতীদের কাজের সুযোগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
শিক্ষিত যুবক-যুবতীদের স্বরোজগারের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার প্রতি বছর আরও ৫০ হাজার যুবক-যুবতীকে এককালীন ১ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেবে।
অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকারা শিশু বিকাশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করছেন। তাদের গুরুত্বকে সম্মান দিয়ে রাজ্য সরকার ২০১৮-র ১ অক্টোবর থেকে অনারেরিয়াম বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৯ এর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই মাসিক ভাতা ৫০০ টাকা করে বাড়ানো হচ্ছে, এর ফলে ২ লক্ষ ১০ হাজারের বেশি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী ও সহায়িকারা উপকৃত হবেন।
আশাকর্মীরা দূর দূরান্তের গ্রামে গ্রামে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার গুরু দায়িত্ব পালন করেন। তাদের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়ে রাজ্য সরকার গত অক্টোবরেই (২০১৮) অনারেরিয়াম বাড়িয়েছিল। ২০১৯ এর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রতি মাসে তাদের আরও ৫০০ টাকা করে অনারেরিয়াম বাড়ানো হচ্ছে, এর ফলে ৫০ হাজারেরও বেশি আশাকর্মী উপকৃত হবেন।
চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করে সমস্ত চুক্তিভিত্তিক গ্রুপ – D ও গ্রুপ – C কর্মীদের মাসিক পারিশ্রমিক আরও ২ হাজার টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একিভাবে চুক্তিভিত্তিক তথ্য প্রযুক্তি কর্মীদের ক্ষেত্রেও পারিশ্রমিক প্রতিমাসে ২ হাজার টাকা করে বাড়ানো হবে।
চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের চাকরির মেয়াদ শেষে ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই সরকার ২০১৬ সালে তাদের প্রাপ্য ex-gratia ১ লক্স টাকা থেকে বাড়িয়ে ২ লক্ষ টাকা করেছিল। ২০১৯ এর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এই ex-gratia ২ লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টাকা করা হচ্ছে। এর ফলে রাজ্যের প্রায় ১ লক্ষের মত চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী উপকৃত হবেন।
বর্তমানে একজন চুক্তিভিত্তিক গ্রুপ – D শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ৬০ বছর অবধি চুক্তিভিত্তিক গ্রুপ – D হিসাবেই কাজ করতে হয়। রাজ্যপ সরকার এদের ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে ঠিক করেছে যে, যারা মাধ্যমিক উত্তীর্ণ এবং ৩ বছরের বেশি কাজ করেছেন তারা চুক্তিভিত্তিক গ্রুপ – C হিসাবে কাজ করার সুযোগ পাবেন। এর ফলে প্রায় ৫০ হাজার চুক্তিভিত্তিক গ্রুপ – D কর্মী উপকৃত হবেন।
কর্মসংস্থান হল এই মা মাটি মানুষের সরকারের উন্নয়নের মূলমন্ত্র। তাড়াহুড়ো করে এবং পরিকল্পনাহীনভাবে GST চালু করা এবং একি সঙ্গে নোট বাতিলের ধাক্কায় আজও সারা দেশ ভুগছে। এসব সত্ত্বেও এই আর্থিক বছরে এখনও পর্যন্ত আমরা রাজ্যের ৯ লক্ষ ৫ হাজার কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করতে পেরেছি।
মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছা ও প্রেরণায় এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও এই বিশাল কর্মযজ্ঞকে এগিয়ে নিয়ে চলেছি।
২০১৯-২০ অর্থবর্ষের জন্য ২,৩৭,৯৬৪.৩৫ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে।
ফাইল চিত্র