সেপ্টেম্বর ৭, ২০১৮
গ্রামীণ শিল্প হাবের সৌজন্যে বাংলার পটচিত্র এখন বিশ্ব বিখ্যাত

রাজ্য ক্ষুদ্র, কুটির শিল্প ও বস্ত্র দপ্তর এবং ইউনেস্কোর যৌথ উদ্যোগে পিংলায় নির্মিত গ্রামীণ শিল্প হাব দেশ ও বিদেশের শিল্পপ্রেমী মানুষদের খুব আকর্ষিত করেছে। এর ফলে স্বনির্ভর হয়েছেন সেখানকার পটচিত্র শিল্পীরা। স্থানীয় ভাষায় এই শিল্পীদের ‘পটুয়া’ বলে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলা ব্লকে নয়া গ্রামে প্রধান গ্রামীণ শিল্প হাবটি গড়ে উঠেছে; এর সাথে যুক্ত আছেন প্রায় ২৫০ জন পটুয়া।
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলার হস্তশিল্প, লোকশিল্প, লোকগান ও পারম্পরিক শিল্পের পুনরুজ্জীবনে উদ্যোগী হয়েছেন। ফলস্বরুপ রাজ্যজুড়ে ইউনেস্কোর সহযোগিতায় গ্রামীণ শিল্প হাব তৈরী হয়েছে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে অনুষ্ঠিত নানা মেলায় এই শিল্পীরা অংশ নিচ্ছেন। এই শিল্প এখন এতটাই বিখ্যাত হয়েছে যে শিল্পীরা প্রায়ই দিল্লী ও হায়েদ্রাবাদে কর্মশালায় অংশ নিতে যাচ্ছেন। সাধারন মানুষরাও এখন এই শিল্প শিখতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
শুধু তাই নয়। বাংলার চিরাচরিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আরেকটি উদাহরণ হল এই পটচিত্র শিল্প। পটচিত্র শিল্পীরা মূলত মুসলমান সম্প্রদায়ের হলেও বংশানুক্রমে তারা হিন্দু দেব দেবীর চিত্র এঁকে চলেছেন। প্রাকৃতিক রঙের সাহায্যে এই শিল্পীরা লম্বা কাপড়ের ওপর বিভিন্ন ঘটনার ধারা বিবরণ এঁকে থাকেন।
পারম্পরিক পটচিত্রের পাশাপাশি এখন পটচিত্র শিল্পীরা রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের ছবিও আঁকছেন, যেমন, কন্যাশ্রী বা সবুজ সাথী। খাদি ও গ্রামোদ্যোগ পর্ষদ লোকশিল্প কেন্দ্র তৈরী করেছে যেখানে পটশিল্পীদের আঁকা পটচিত্র, টি-শার্ট, হাত পাখা, ব্যাগ, ছাতা ইত্যাদি বিক্রি করা হয়।
প্রতি বছর নভেম্বর মাসে নয়াগ্রামে পট মায়া উৎসব পালিত হয়। এবছর ১৬ থেকে ১৮ই নভেম্বর এই উৎসব পালিত হবে।