অগাস্ট ৯, ২০১৮
পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলির অভূতপূর্ব উন্নয়ন

গত সাত বছরে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিষয়ক দপ্তর সাতটি জেলার (পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান) ৭৪টি ব্লকে (২৪টি মাওবাদী অধ্যুষিত ব্লকসহ) অনেক উন্নয়নমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে।
গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা (রাস্তা, ব্রিজ এবং সাঁকো), জল সংরক্ষণ, সেচ, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল সরবরাহ সহ অন্যান্য আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে নানা প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হয়েছে।
পরিকাঠামো উন্নয়ন – গত সাত বছরে গীতাঞ্জলী প্রকল্পে ৯৮০০-এরও বেশী গৃহ নির্মাণ, ১৮৮০টি আইসিডিএস কেন্দ্র, ৬৭৫টি রাস্তা/সাঁকো/ব্রিজ, ৬৭০টি সেচ ও জলতীর্থ কাঠামো, ৯০০টি গভীর নলকূপ, ১৫টি পুষ্টিজনিত পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরী করেছে দপ্তর।
জঙ্গলমহল প্যাকেজ – এই প্যাকেজে ২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯টি রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে।
জীবিকানির্বাহের বিভিন্ন প্রকল্প – কর্মসংস্থান তৈরী জন্য পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া জেলার অরণ্য অঞ্চল ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলে লাক্ষা চাষ ও অন্যান্য প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এতে উপকৃত হয়েছেন ১০ হাজার মানুষ। এছাড়াও, কর্মসংস্থান এবং স্বনির্ভরতার জন্য দেওয়া হয়েছে নানা প্রশিক্ষণ। যেমন, শালপাতার থালা তৈরী, জৈব আনাজ চাষ, সোয়াবিন উৎপাদন, আঙুর চাষ, পেঁয়াজ চাষ, হলুদ চাষ, মোবাইল ফোন সারানো, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, দুচাকার যান মেরামত, প্লাস্টিক মডেল তৈরীর প্রশিক্ষণ, পাঁপড় তৈরী, সুন্দর মোমবাতি তৈরী ইত্যাদি।
সাংস্কৃতিক বিকাশ – তপশিলি জাতি, উপজাতি এবং অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষের লোকসঙ্গীত, নৃত্য এবং পারম্পরিক শিল্পকে তুলে ধরতে প্রতি বছর জঙ্গলমহল উৎসবের আয়োজন করা হয়।
সামষ্টিক অর্থনীতি কেন্দ্র- বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াতে সামষ্টিক অর্থনীতি কেন্দ্র তৈরী করা হবে এই এলাকার অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য। স্থানীয় জোগান ব্যবস্থা, ব্র্যান্ডিং, প্যাকেজিং, গুনমান নির্ধারণ, ও বিক্রীর হাব হবে এই কেন্দ্র, যার ফলে স্থানীয় মানুষদের আয় বাড়বে।
ভূসম্পত্তি পরিষেবা – ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশনের সহযোগিতায় পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন বিষয়ক দপ্তর উপগ্রহ চিত্রের ওপর নির্ভর পোর্টাল তৈরী করছে, যার ফলে উন্নয়ন পরিকল্পনা করা সহজ হবে। এই উদ্দেশ্যে কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে।
লাক্ষা চাষের পুনরুজ্জীবন – পুরুলিয়াতে লাক্ষা চাষের পুনরুজ্জীবনের জন্য একটি খসড়া ডিপিআর তৈরী করা হয়েছে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ন্যাচারাল রেজিন্স অ্যান্ড গামস এর সহায়তায়।
প্রযুক্তি কেন্দ্রিক রূপান্তরমূলক প্রকল্প – সিডিএসএর সহায়তায় বাঁকুড়ায় নিম্নলিখিত প্রকল্পগুলির জন্য পাইলট প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।
কৃষিতে প্রযুক্তির ব্যবহার – ফসল, মাটির গুণমান, সার, সেচ, শস্য সুরক্ষা, কৃষিজ সরঞ্জাম, শস্য তোলার পর প্রযুক্তির ব্যবহার, আবহাওয়া এবং কৃষি বিপণন সংক্রান্ত তথ্য দিতে আইসিটি নির্ভর পরিকাঠামো তৈরী করা হয়েছে। এতে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
রেশমগুটি চাষে প্রযুক্তির ব্যবহার – এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যে আইসিটি নির্ভর অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাজ্যের রেশমগুটি চাষ উন্নত করা। এর ফলে কৃষকরা উপকৃত হবেন এবং সিল্কের মান ও উৎপাদন দুইই বাড়বে।
বাঁকুড়ার হস্তশিল্পের জন্য ই-কমার্স ওয়েব পোর্টাল – এই প্রকল্পেরর উদ্দেশ্য স্থানীয় হস্তশিল্প তুলে ধরা এবং বিক্রীর ব্যবস্থা করা। রাজ্যের বাইরেও বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হস্তশিল্প বিক্রীর বিকল্প মাধ্যম তৈরী করা হয়েছে এর মাধ্যমে।
প্রজেক্ট লাইফসাইকেল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম – যেহেতু পশ্চিমাঞ্চলের ৭৪টি ব্লকে বিভিন্ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন সরেজমিনে খতিয়ে দেখা অনেক সময় সহজ হয় না, তাই, ‘প্রজেক্ট লাইফসাইকেল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ তৈরী করা হয়েছে দপ্তরের তরফে। এটি আইএফএমএসের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে ও রাজ্যে এরম এই প্রথম।
পশ্চিমাঞ্চলের জন্য কম্প্রিহেন্সিভ ইন্টিগ্রেটেড প্ল্যান – যেহেতু পশ্চিমাঞ্চলের জন্য কোনও কম্প্রিহেন্সিভ ইন্টিগ্রেটেড প্ল্যান ছিল না, তাই একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা তৈরী করা হয়েছে। উন্নয়নের ১৩টি মূল মাপকাঠির কথা মাথায় রেখে, ১৩টি দপ্তরের সাথে আলোচনার মাধ্যমে তৈরী হয়েছে এই প্ল্যান।