অগাস্ট ৯, ২০১৮
আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তরঃ পড়ুয়াদের জন্য নানা প্রকল্প

বাংলার আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার আদিবাসী উন্নয়ন দপ্তর গঠন করেছে। তপশিলি উপজাতির পড়ুয়াদের জন্য পড়াশোনা ও চাকরির সুযোগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তপশিলি উপজাতি শংসাপত্র প্রদান বেড়েছে উল্লেখযোগ্য ভাবে এবং পুরো প্রক্রিয়াটি স্ট্রিমলাইন করা হয়েছে।
তপশিলি উপজাতি শংসাপত্র প্রদান
- বছরে তপশিলি উপজাতি শংসাপত্র প্রদান সাত বছরে প্রায় তিনগুন বেড়েছে। ২০১০-১১ সালে যা ছিল ৩১,০০০ তা ২০১৭-১৮ সালে বেড়ে হয়েছে ৮৭,৮৭৫।
- আদিবাসীদের শংসাপত্র দেওয়ার জন্য ই-পরিষেবা চালু হয়েছে। গত সাত বছরে মোট ৫.৭৯ লক্ষ শংসাপত্র প্রদান করা হয়েছে।
- ডব্লুবিআরটিপিএস অ্যাক্ট ২০১৩ প্রয়োগ করে তপশিলি উপজাতির শংসাপত্র প্রদানের সময়সীমা গড়ে ৮ সপ্তাহ থেকে কমে ৪ সপ্তাহ করা হয়েছে।
শিক্ষা ঋণ ও বৃত্তি
- দেশের মধ্যে এই প্রথম, তপশিলি জাতিদের নামমাত্র সুদে শিক্ষা ঋণ প্রদান করা হচ্ছে। যারা কারিগরি শিক্ষা, পেশাদারী শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী তারা এই ঋণ পাবে। এই ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা। এবং বিদেশে পড়তে গেলে এই ঋণের পরিমাণ ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত।
বৃত্তির অর্থ সরাসরি পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। গত সাত বছরে ৫.৬৩ লক্ষ তপশিলি উপজাতির পড়ুয়াদের বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। - ২০১৪-১৫ সালে শিক্ষাশ্রী প্রকল্প চালু করা হয় পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য। বৃত্তির অর্থ সরাসরি পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। ২০১৭-১৮ পর্যন্ত ৯.১৪ লক্ষ পড়ুয়া এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ
- ২৩টি মাওবাদী অধ্যুষিত ব্লকে স্কুল-ছুটের হার কমাতে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর তপশিলি উপজাতির ছাত্রীদের সাইকেল দেওয়ার সূচনা করা হয়। পরে সমস্ত আদিবাসী ছাত্রীদেরও এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়। ২০১১-১২ থেকে ২০১৪-১৫ সালের মধ্যে সবুজ সাথী প্রকল্প শুরু হওয়ার আগে ৯৫০০০ সাইকেল বিতরণ করা হয়েছিল। সবুজ সাথী প্রকল্পের অধীনে ৭০ লক্ষ সাইকেল বিতরণ করা হয়েছে।
- প্রাক-মাধ্যমিক ও মাধ্যমিকোত্তর বৃত্তি প্রদান প্রায় তিনগুন হয়েছে। ২০১০-১১ সালে যে সংখ্যা ছিল ৩৮৫৪৭, তা ২০১৭-১৮ সালে বেড়ে হয়েছে ১.১১ লক্ষ।
- সারা রাজ্যের ২৬টি কেন্দ্রে জয়েন্ট এন্ট্র্যান্স পরীক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ কোচিং শুরু করা হয়েছে। গড়ে ৭০০ জন তপশিলি উপজাতির পড়ুয়া এই কেন্দ্রে নথিভুক্ত হয়। এর পাশাপাশি তপশিলি পড়ুয়াদের মধ্যে যারা ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাবে, তাদের প্রথম বর্ষের বই বিনামূল্যে দেওয়া হবে।
- এই দপ্তর একলব্য মডেল আবাসিক স্কুলের তপশিলি পড়ুয়াদের ইংরাজিতে দক্ষতা বাড়াতে সফটওয়্যার নির্ভর ভাষা শিক্ষার শুরু করেছে।
এই মুহূর্তে ৭টি একলব্য মডেল আবাসিক স্কুলের ১২০০ ছাত্রকে দাবা খেলা শেখানো হচ্ছে। - ২১৬টি আশ্রম স্কুলে ইংরাজি, দেশী ভাষা, অঙ্ক, বিজ্ঞান বিষয়, কম্পিউটার শিক্ষার কোচিং দেওয়া হয়।
- গত সাত বছরে ১২৭টি তপশিলি উপজাতির পড়ুয়াকে বিশেষ কোচিং দেওয়া হয়েছে আইএএস ও ডব্লিউবিসিএসএর জন্য। তার মধ্যে ২৯জন বিভিন্ন চাকরি পেয়েছে।
- গত সাত বছরে ২৪,৫০০ তপশিলি উপজাতির ছেলেমেয়েদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে জীবিকানির্ভর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৬,০০০ জন চাকরি পেয়েছে বা স্বনির্ভর হয়েছে।
কৃষি, উদ্যানপালন, নিরাপদ উৎপাদন, পশু পালন, মৎস্য চাষ, মধু উৎপাদন ইত্যাদি ক্ষেত্রে তপশিলি উপজাতির মানুষকে স্বনির্ভর করা হয়েছে। গত সাত বছরে ১.২৬ লক্ষ মানুষ উপকৃত হয়েছেন।