ফেব্রুয়ারি ৬, ২০১৯
সাত বছরে বাংলার পরিকাঠামো উন্নয়ন
গত সাড়ে সাত বছরে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার সরকারি ক্ষেত্র এবং বেসরকারি ক্ষেত্র থেকে রাজ্যের পরিকাঠামোতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে।
পঞ্চম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে যা ৭ এবং ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে সেখানে বিশেষ নিজর নেওয়া হবে সফল পরিকাঠামোর ক্ষেত্রগুলিতে।
বর্তমান অর্থনৈতিক বর্ষে অর্থাৎ ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সরকার ইতিমদ্ধ্যেই ৩৩০০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে পরিকাঠামো উন্নয়নে। এই অর্থ সারা রাজ্যে খরচ করা হয়েছে – গ্রাম পঞ্চায়েত অঞ্চল, নগর এবং শহর-রাস্তা তৈরী, সেতু তৈরী, সেচের খাল খনন এবং অন্যান্য আরও গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে।
যেহেতু এত ব্যয় করা হয়েছে তাই স্বাভাবিক ভাবেই এই ক্ষেত্রগুলিতে বিশেষ জোর দেওয়া হবে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে, যেখানে সারা বিশ্বের সেরা কোম্পানিগুলির প্রতিনিধিরা আসবেন।
সব ক্ষেত্রে সংস্থাগুলিকে সাহায্য করার জন্য তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার এক জানলা প্রকল্প শুরু করেছে যেখানে ব্যাবসার জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত অনুমতি যেমন আগুন নির্বাহ, জলের বন্দোবস্ত ইত্যাদি এক জায়গা থেকে পাওয়া যাবে এবং বেশীর ভাগ পদ্ধতি করা হয়েছে সম্পূর্ণ অনলাইন।
এক ঝলকে দেখে নেওয়া যাক গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো উন্নয়নগুলিঃ
- সেতু ও উড়ালপুল নির্মিতঃ মা উড়ালপুল, গার্ডেন রিচ উড়ালপুল, বাগুইহাটি উড়ালপুল, দক্ষিণেশ্বর রানী রাশমণি স্কাইওয়াক, ভাসরাঘাটে জঙ্গল কন্যা সেতু, আমকলায় লালগড় সেতু, বোলেরবাজারে মৃদঙ্গ সেতু।
- ১২০০০ কোটি টাকার পরিকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলছে-মেছোগ্রাম থেকে মোরগ্রাম, উত্তর-দক্ষিণ রোড করিডর, ভুটান-বাংলাদেশ এসিয়ান হাইওয়ে ৪৮, নেপাল-বাংলাদেশ এশিয়ান হাইওয়ে।
- সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি এয়ারপোর্ট ইন্টারন্যাশানাল নামক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ভারতের প্রথম বিমানবন্দর কাজী নজরুল ইসলাম বিমানবন্দর তৈরী হয়েছে অন্ডালে এবং সেই বিমানবন্দর চালু হয়ে গেছে।
- সামাজিক পরিকাঠামোতে ব্যয় (শিক্ষা, ক্রীড়া, কলা ও সংস্কৃতি, স্বাস্থ্য, সমাজ কল্যাণ, জল সরবরাহ, পরিচ্ছন্নতা, আবাসন, তথ্য ও সম্প্রচার, শ্রম ও শ্রমিক কল্যাণ, তপশিলি জাতি উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর উন্নয়ন, সামাজিক কল্যাণ এবং পুষ্টি) চারগুণেরও বেশী বেড়েছে। ২০১০-১১ সালে যা ছিল ৬৮৪৫ কোটি টাকা যা বেড়ে ২০১৭-১৮ সালে হয়েছে ২৮৫৬১ কোটি টাকা।
- স্থায়ী পরিকাঠামোতে ব্যয় (বিদ্যুৎ, শিল্প ও খনি, পরিবহন, বিজ্ঞান প্রযুক্তি এবং পরিবেশ, সাধারন অর্থনৈতিক পরিষেবা) বেড়েছে ৩.৬ গুণেরও বেশী। ২০১০-১১ তে যা ছিল ১৭৫৮ কোটি টাকা তা ২০১৭-১৮ সালে বেড়ে হয়েছে ৬৪৫৬ কোটি টাকা।
- জমি ক্রয় নীতি যা ২০১৪ সালে রাজ্য সরকার এনেছিল তার মধ্যে পরিকাঠামোগত প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। নতুন বৈশিষ্ট্যগুলি হল, রাজ্য সরকারের ছাড়াও কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা জমি ক্রয়ে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রেখে।
- পরিকল্পিতভাবে পর্যটন কেন্দ্রগুলির উন্নয়নের স্বার্থে আটটি উন্নয়ন পর্ষদ নির্মাণ করা হয়েছে। সেগুলি হল, ২০১৩ সালে গঠিত গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ, ২০১৫ সালে গঠিত ফুরফুরা শরীফ উন্নয়ন পর্ষদ, ২০১৫ সালে গঠিত তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ, ২০১৬ সালে গঠিত বক্রেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদ, ২০১৬ সালে গঠিত পাথরচাপুরি উন্নয়ন পর্ষদ, ২০১৭ সালে গঠিত মুকুটমণিপুর উন্নয়ন পর্ষদ, ২০১৭ সালে গঠিত চন্দ্রভাগা উন্নয়ন পর্ষদ, ২০১৭ সালে গঠিত তারকেশ্বর উন্নয়ন পর্ষদ। গঙ্গাসাগর বকখালি উন্নয়ন পর্ষদ, হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ, তারাপীঠ রামপুরহাট উন্নয়ন পর্ষদ, নিউ টাউন কলকাতা উন্নয়ন পর্ষদের এলাকা সম্প্রসারণ করা হয়েছে।
- ২৬৩০০ কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে বা সংস্কার করা হয়েছে।
- ১.৭১ লক্ষ হেক্টর জমিকে সেচ জমির আওতায় আনা হয়েছে বিভিন্ন সেচের সুবিধার মাধ্যমে।
- তথ্য প্রযুক্তির জন্য পরিকাঠামো ১৬ গুণ বাড়ানো হয়েছে গত সাত বছরে যাতে ব্যয় হয়েছে ২৯৩.৯৭ কোটি টাকা।
- সবার ঘরে আল প্রকল্পে ১০০ শতাংশ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে।
- পিপিপি মডেলে ১০০০টি যুব কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা হয়েছে।
- লেটার অফ ক্রেডিট প্রথার অবসান ঘটানো হয়েছে। সমস্তও দপ্তরের সমস্তও কাজ ট্রেজারি ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়েছে।
- ১.৫ লক্ষ পড়ুয়াকে তথ্য প্রযুক্তি এবং তথ্য প্রযুক্তি পরিষেবা সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
আবাসন পরিকাঠামোর মাধ্যমে ৩০ লক্ষ মানুষ উপকৃত হয়েছে। - ৬৯৩০৬ কিলোমিটার উন্নতমানের গ্রামীণ সড়ক তৈরী করা হয়েছে।
- দেশের সমুদ্রসীমার ১৩ শতাংশ রাজ্যে, যা দেশের মধ্যে দৈর্ঘ্য, ঘনত্ব এবং প্রসারে প্রথম।
- রাজ্য সরকার সম্পূর্ণ নিজের খরচে তাজপুর বন্দর তৈরী করছে।
- রেলপথের নেটওয়ার্ক ডেনসিটিতে এগিয়ে বাংলা-১০০০০ বর্গ কিলোমিটারে ৪৫.৯ কিলোমিটার যা জাতীয় গড় ৩৫.৯ কিলোমিটারের থেকে বেশী। রোডস ডেনসিটিতেও এগিয়ে বাংলা দেশের গড় যেখানে প্রতি ১০০০ করগ কিলোমিটারে ১৩৯.১ কিলোমিটার সেখানে রাজ্যের পরিসংখ্যান ৩৩৩.৫ কিলোমিটার।
- বিদ্যুতের গুনমানে দেশের সেরা বাংলা, বিদ্যুতের যোগানও বেশী এবং দেশের মধ্যে বিদ্যুৎ বন্টনে সেরা রাজ্য।
কলকাতা বন্দরের মাধ্যমে দেশের সব থেকে বেশী চা আদান প্রদান হয়।