ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১৯
ধর্মতলার ধর্না মঞ্চ থেকে সাংবাদিক বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর
আজ ধর্মতলার ধর্না মঞ্চ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওনার বক্তব্যের কিছু অংশ:
সিবিআইকে ফেস করার ব্যাপার নয়, কথা বলার ব্যাপার। সুপ্রীম কোর্ট যথাযথভাবে বলেছে জেতাকে আমরা সমর্থন করেছি যে, বলপ্রয়োগ করা যাবে না এবং গ্রেপ্তার করা যাবে না। আমরা এটাই চেয়েছিলাম। কারণ, তাঁর বাড়িতে লোক পাঠিয়ে গোপনভাবে অপারেশন চালানোর চেষ্টা হয়েছিল। এক আধিকারিক আরেক আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলবে, সেটাই সৌজন্যতা। একটা সরকার আসে, একটা সরকার চলে যায়, গণতন্ত্র চলতে থাকে, সংবিধান চলতে থাকে।
আইনের অপব্যাখ্যাটা দয়া করে করবেন না। আমরা রায়ের কপি পেয়েছি। আপনি বিজেপিকে সমর্থন করুন, আমার কিছু যায় আসে না, এটা আপনার স্বাধীনতা। কিন্তু, সত্য যেন বিকৃত না হয়। শুঞ্ছি কেউ কেউ করছেন, আমি তাদের উদ্দেশ্যে এটা বলছি। কেউ হয়ত না জেনে করেছে বা এক তরফা খাইয়ে দেওয়া হয়েছে। ফেস করতে হবে কোর্ট কোথাও বলেনি। তাহলে অপব্যাখ্যা কেন করছেন? কোর্ট বলেছে উভয়ে কথা বলবে নিরপেক্ষ কোথাও। আইনটা রাজনীতি নয়।
আমরা সবসময় সহযোগিতা করি। এত সহযোগিতা আর কোথাও পাবেন না। গত তিন চার দিনে বিজেপি কত সভা করেছে? করে বলছে করিনি। ঠাকুরঘরে কে? আমি তো কলা খাইনি। ৪ঘণ্টা আগে বৈঠকের সময় ও তারিখ দিচ্ছে। প্রশাসনকে আয়োজন করতেও তো সময় লাগে। পরসু রাত থেকে আমরা অর্ধনির্মিত স্টেজে বসেছিলাম। কিছু তৈরী করতে সময় লাগে। আজ একটা ভালো স্টেজ দেখতে পাচ্ছেন। আগে তো মিডিয়ার জায়গা ছিল না। মানুষের বসার জায়গা ছিল না। আপনি তিন ঘণ্টা আগে বললেন, এক্ষুনি দাও। সেই মাঠে কারোর মিটিং আছে কিনা? অন্য কোনও পরীক্ষা আছে কিনা? অন্য কোনও অনুষ্ঠান আছে কিনা? সেগুলো তো দেখতে হবে।
ওনারা তো সোয়াইন ফ্লু নিয়ে পর্যন্ত সভা করে গেলেন, তারপর বলছেন করতে দেয়নি। আপনার শরীর ভালো ছিল না, আপনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই সভা করলেন, আমি খবরের কাগজে পড়ে জানলাম আপনাদের রাজ্য নেতৃত্বরা বলেছেন আমাদের সামনে যেতে দেওয়া হয়নি কারণ, এই রোগটা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে ছড়ায়। অসুখ যেকোনও মানুষের যেকোনও সময়ে হতে পারে, আমরা চাই আপনারা সুস্থ থেকে লড়াই করুন। তাহলে এই কথা কেন আসে?
আমি একসময় মহারাষ্ট্রে একটা অনুষ্ঠান করতে গেছিলাম, আমাকে আপনারা গেস্ট হাউসেও থাকতে দেননি। আমি ভুলিনি। আমি বিহারে লালু প্রসাদ যাদবের মীটিঙে গেছিলাম, আমাকে আপনারা গেস্ট হাউস দেননি। সব ভুলে যাবেন না। আমরা কখনও এসব কথা কারোকে বলি না। তিনটের সময় আপনাদের বলেছি একটা চিঠি দিয়ে দেব, যিনি গ্রেপ্তার হয়ে আছেন চিট ফান্ড কর্তা। তিনি লিখেছিলেন অসমের যিনি উপমুখ্যমন্ত্রী তাঁকে তিনি কত টাকা দিয়েছেন।
কারোকে কারোকে ভয় দেখিয়ে ১৬৪ করেন, আমাদের হাতে চিঠি আছে, কিছু করুন। বিজেপি করলেই সাত খুব মাফ? যত চোর ডাকাত গুন্ডা, কালো দাগী আসামী, আপনার কাছে যাচ্ছে নিরাপত্তা পাচ্ছে বলে। আপনি ফোণ করে বলছেন, শোনো, হাতে ইনকাম ট্যাক্স আছে, ছেড়ে চলে এস। শোনো, হাতে সিবিআই আছে, ছেড়ে চলে এস, নয়ত সিবিআই হবে। শোনো, হাতে ইডি আছে, ছেড়ে চলে এস, নয়ত সিবিআই হবে। আর কে কে ভয় দেখাচ্ছে, আমাদের কাছেও কিছু প্রমাণ আছে, আমাদের এত ফালতু ভাববেন না। বিজেপির নেতারাই এই প্রমাণ বের করে দিয়েছে। আমি সোশ্যাল নেটওয়ার্কে দেখেছি। নিজেরা আগে ঘর সামলান। যেই বিজেপিতে যাচ্ছে সিবিআই বাই বাই। যার বিরুদ্ধে এত কেস, যেই বিজেপিতে যোগ দিচ্ছে, নো ইডি।
আমার সিবিআই-র প্রতি সম্মান আছে যখন ওরা নিরপেক্ষ তদন্ত করে। যখন রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে কাজ করে না তখন তাদের প্রতি আমার শ্রদ্ধা আছে। তাপসী মালিকের কেসে কী বিচার হয়েছে? কী বিচার হয়েছে নন্দীগ্রামের গণহত্যার? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল প্রাইজ চুরি হয়েছে। আমি সিবিআই-কে বলব যত তৎপড়তা নিয়ে মোদী-ভাই-র, অমিত ভাই-র কথা শুনে আমাদের সবার পেছনে লাগেন, একটু নোবেল প্রাইজ-টা উদ্ধার করে দিন না বাবু, আমরা হাত-জোর করে বলছি? আমি বলেছিলাম আপনি যদি আমার কাছে ব্যাখা চান, আমিও তো আপনার কাছে কাগজ চাইতে পারি। আমরা অনেকবার কোর্টে গিয়ে বলেছি, আপনারা যদি না পারেন তাহলে আমাদের কাগজগুলো দিন, আমরা চেষ্টা করে দেখবো। আপনারা তাও দেননি।
আমায় দেব গৌড়াজি ফোন করে আমায় ধন্যবাদ জানিয়েছেন আন্দোলন করার জন্য। পায়ে চোট আছে বলে উনি আসতে পারেননি। আমারা ওনার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করছি।
আমি সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন ভাবে আমাদের সাথে কথা বলে সমর্থন জানিয়েছে। সবাইকে আমাদের অন্তর থেকে কৃতজ্ঞতা, আমাদের প্রণাম, আমাদের সেলাম, আমাদের নমস্কার জানাচ্ছি।