সাম্প্রতিক খবর

সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় – বাংলার জমি আন্দোলনের কান্ডারি

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় – বাংলার জমি আন্দোলনের কান্ডারি

বাংলার জমি আন্দোলনের কাণ্ডারি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্বতন বাম সরকারের শাসনকালে সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রামের কৃষকদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে তিনিই সোচ্চার হয়েছিলেন; রুখে দাঁড়িয়েছিলেন বলপূর্বক জমি অধিগ্রহনের বিরুদ্ধে।

বাংলার জমি আন্দোলনের কাণ্ডারি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পূর্বতন বাম সরকারের শাসনকালে সিঙ্গুর ও নদীগ্রামের কৃষকদের ওপর অত্যাচারের বিরুদ্ধে তিনিই সোচ্চার হয়েছিলেন; রুখে দাঁড়িয়েছিলেন বলপূর্বক জমি অধিগ্রহনের বিরুদ্ধে।

২০০৬ সালে বাম সরকার সিঙ্গুরে বহুফসলি জমি বলপূর্বক অধিগ্রহণ করে। এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়; কৃষকদের স্বার্থ রক্ষার্থে ২৬ দিনের অনশনও করেন তিনি।

বিপুল জনসমর্থন পেয়ে ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে সরকার গড়ে তৃণমূল কংগ্রেস। সেই থেকে ভূমি সংস্কারের লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার।

কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ:-

সিঙ্গুর রায়ঃ

মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক নির্দেশ মান্য করে (পূর্বতন সিঙ্গুর প্রকল্প এলাকার মধ্যে থাকা) প্রায় ৯৮০ একর জমি চাষযোগ্য করে প্রায় ১২০০ পরিবার, যারা ওই প্রকল্পের কারণে জমি থেকে উচ্ছেদ হয়েছিল, তাদের জমির অধিকার ফেরত দেওয়া হয়েছে।

জমি নীতি:

২০১১-১৭ সালে জমি বিষয়ে অপেক্ষাকৃত উন্নততর প্রশাসন, নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবস্থাপন সুচিসচিত করার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছেঃ

রাজ্য সরকার কৃষিজমির কর মকুব করে একটি বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এতে যে শুধুমাত্র কৃষকদের দুঃখ -কষ্ট (যা তারা ভোগ করেছেন ) লাগব হবে তাই নয় ,কৃষিজ উৎপাদনও কৃষকদের ভবিষ্যতের উপার্জনও বৃদ্ধি পাবে।

সরকারি সম্পত্তি নিয়ে কাজ করার খেত্রে সাদৃশ বজায় রাখা ,বৈষম্য হ্রাস করা এবং স্বচ্ছতা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে ২০১২-১৩ সালে জমি বন্টন নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। এই নীতি জমি বন্টনের শর্তাবলি-সহ জমি বন্টনের জন্য একটি স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার উদ্ভব ঘটিয়েছে।

রাজ্য সরকার এবং তার অধিনস্থ সংস্থাগুলি যাতে কেবল ক্ষতিপূরণ ও প্রোৎসাহোন মূল্যের বিনিময়ে ইচ্ছুক কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি আলাপ আলোচনা করে পরিকাঠামো গড়ার প্রকল্পের জন্য জমি কিনতে পারে, সেদিকে দৃষ্টি রেখে ২০১৪-১৫ সালে জমি ক্রয় নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের ঘোষিত নীতি হল এই যে, জোর করে কোনও জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। সুতরাং সরকারের জমি কেনার নীতি হচ্ছে সম্মতি-ভিত্তিক এবং স্বচ্ছ। বিভিন্ন জনস্বার্থ-কেন্দ্রিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের জন্য এযাবৎ শিল্প। পরিকাঠামো ওকর্মসংস্থান বিষয়ক স্থায়ী কমিটি প্রায় ৯৫০ একর জমি সরাসরি কেনার অনুমোদন দিয়েছে।

রাজ্যের বিভিন্ন অগ্রণী প্রকল্প-সহ শিল্পের জন্য পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং অন্ন্যান্য উনন্নয়নমূলক কাজের জন্য সুনিশ্চিত করতে রাজ্য ভূমি ব্যবহার পর্ষদ পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলারক্ষেত্রে জমির একটি জমি ব্যাংক প্রস্তুত করেছে।

২০১৪ সালে পশ্চিমবঙ্গ ভূমি সংস্কার আইন, ১৯৯৫ -এর ১৪Y ধারার সংশোধন করা হয়েছে ,যার ফলে উক্ত ধারার কার্যপরিধি অনেক প্রসারিত হয়েছে। বর্তমানে উদ্যোগপতিরাসরকারের অনুমতি নিয়ে সিলিং -বহির্ভুত জমি তাদের স্বাভাবিক ক্ষেত্রের বাইরে বিভিন্ন শিল্প ও সামাজিক পরিকাঠামোগত কাজকর্ম যথা ,তথ্যপ্রযুক্তির ,জাহাজনির্মান ,উপনগরীস্থাপন ,পরিবহন টার্মিনাল ,লজিস্টিক হাব ইত্যাদি কাজে নিয়োজিত করতে পারেন।

২০১১-১২ সালে বিনিয়োগকারীদের ব্যবহারের জন্য সূচক -সংশ্লিষ্ট জমি ব্যবহারের এলাকা বিভাজন মানচিত্রের ধারণাকে কাজে লাগিয়ে জমি ব্যবহার মানচিত্র প্রবর্তিত হয়েছে। শুল্কবা পতিত জমি,একফসলি জমি ,দো -ফসলি /বহু -ফসলি জমি,বনভূমি ,পাকা রাস্তা,জাতীয় /রাজ্য সড়ক ,রেল -সংযোগ ব্যবস্থা ,জলাশয় প্রভৃতি উপাদানগুলিকে জমি ব্যবহারমানচিত্রের অন্তভুক্ত করা হয়েছে।

নিজ গ্রহ নিজ ভূমিঃ

নিজ গ্রহ নিজ ভূমি (NGNB) প্রকল্পে (২০১১ সালে প্রবর্তিত) যোগ্য উপকারভোগী পরিবারকে (সকল গ্রামীণ ভূমিহীন ও গৃহহীন খেতমজুর/কারিগর/মতস্যজীবী শ্রেনিভুক্ত) ৫ ডেসিমেল পর্যন্ত জমি দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। এখনো পর্যন্ত এই পরিকল্পের অধীনে প্রায় ২.২ লক্ষ নিজ গ্রহ নিজ ভূমি পাট্টা বিতরণ করা হয়েছে।

২০১১-১৭ সময়কালে ৩ লক্ষেরও বেশী পাট্টা (নিজ গ্রহ নিজ ভূমি/কৃষি/বন পাট্টা) বিতরণ করা হয়েছে।