মার্চ ১৫, ২০১৯
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কথা দিয়ে কথা রাখে: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ বাঁকুড়া জেলার সোনামুখীতে রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক কর্মীসভাতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তব্য রাখেন।
দেখে নিন তার বক্তব্যের কিছু অংশঃ
নারীশক্তি যাদের সঙ্গে থাকে তাদের কেউ পরাজিত করতে পারে না
ভারতবর্ষের সব রাজনৈতিক দলকে আজকে বশ্যতা স্বীকার করিয়ে, আত্মসমর্পণ করিয়ে, চমকে ধমকে চুপ করানো গেছে। কিন্তু বাংলার মাটিতে তৃণমূল কংগ্রেসকে বশ্যতা স্বীকার করেনি।
২০১৪ সালে এখানে যে সাংসদ ছিলেন মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে ৯০ শতাংশ সময় তিনি দিল্লিতে কাটিয়েছেন। বিদায়ী সাংসদ মুখে মারিতং জগৎ, কাজে লবডঙ্কা। দু মাস অতিক্রম হয়েছে বাঁকুড়ায় পা রাখার সাহস পায়নি।
তৃণমূল কংগ্রেস সুযোগ দেবে না বলে ছোট গদ্দার বড় গদ্দারের কাছে গেছে, মানুষের জন্য কাজ করলে তবেই তৃণমূল কংগ্রেসে জায়গা হবে
প্রার্থী যেই হোক লড়াইটা দলনেত্রীর, বাংলার সম্মানের, সংস্কৃতির সাম্প্রদায়িক লড়াই, দিল্লির জবর দখলের বিরুদ্ধে লড়াই, আগামীদিনে একটা জমিও ওদের দেব না। সব বুথ পাহারা দিয়ে নির্বাচন করতে হবে, ২৩ মে পদ্ম ফুল সরষে ফুলে পরিণত হবে
বিজেপি মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়েছিল আচ্ছে দিনের, ওরা দেশটাকে দেউলিয়া করে দিয়েছে, ধ্বংস করে দিয়েছে, একটাও কথা রাখেনি। ওরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে পারে না তাই ধর্মের ভিত্তিতে রাজনীতি করে কিন্তু আমাদের কাজ সকল জাতি ধর্মের মানুষের জন্য উন্নয়ন
আমি নির্বাচনে জিতে যখন সাংসদ হয়েছি, আমার একটাই ধর্ম তা হল মানবধর্ম
জি এস টি চালু করে ভারতের অর্থনীতিকে দেউলিয়া করে দিয়েছে। পেট্রোল ডিজেল, রান্নার গ্যাসের দাম ৩ মাস আগে বেড়েছিল, এখন চাপে পরে দাম কমিয়ে দিয়েছে কারণ মানুষ মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছে। সাধারণ মধ্যবিত্তদের মধ্যে মূল্যবৃদ্ধি রুখতে পেরেছি। গরীব, পিছিয়ে পড়া লাঞ্চিত শোষিত কারো জন্য কোন কাজ করেনি ওরা।
যারা মাঠে ময়দানে লড়াই করতে জানে না, যারা একটা টিউবওয়েল লাগাতে পারে না তারা বড় বড় কথা বলছে।
আজ কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্প সারা বিশ্বে প্রসংশিত। তৃণমূল কংগ্রেস কথা দিয়ে কথা রাখে। আমরা পরিসংখ্যান নিয়ে রাজনীতি করি, মুখে বড় বড় কথা আর কাজে কাঁচকলা এই নীতিতে বিশ্বাস করি না।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যা কথা দিয়েছিলেন, সব অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন
ওদের হাতিয়ার ধর্ম আর আমাদের হাতিয়ার উন্নয়ন। গাছ বাঁচতে গেলে যেমন জল আর আলোর প্রয়োজন হয়, তেমন বিজেপিকে বেঁচে থাকতে গেলে দাঙ্গা, ধর্ম আর নকল দেশপ্রেমের প্রয়োজন হয়। নির্বাচনের সময় দেশপ্রেম, ধর্ম আর দাঙ্গা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চায়
২ বছর আগে যারা মাথায় ফেট্টি বেঁধে রাস্তায় ঘুরছিল, এখন তাদেরকে আর দেখা যায় না। তার কারণ এখন আর রামের নামে নির্বাচন হচ্ছে না। এখন দেশপ্রেমের নামে নির্বাচন করতে হবে
ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী যেভাবে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ভারতবর্ষের অর্থনৈতিকভাবে জর্জরিত করে অনেক অনুন্নয়নের দিকে ঠেলে দিয়েছে, আগামীদিন মানুষ এর বিহিত করবে
আগামীদিন ৪২-এ ৪২ হবে, ১০ বা ২০ দফায় ভোট হোক, কেন্দ্র থেকে বাহিনী আসুক তাতে কিছু যায় আসেনা। মানুষ দুহাত তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করে
আগামীদিন পদ্ম হবে জব্দ। নীরব মোদী, ললিত মোদী, বিজয় মালিয়া ভারতবর্ষকে সর্বশ্রান্ত করে দিয়ে চলে গেছে। কিন্তু সুদীপ্ত সেনকে আমরা কলার ধরে জেলে ঢুকিয়েছিলাম, এটাই ওদের আর আমাদের মধ্যে পার্থক্য।
আমরা ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রীকে কোনও রেল স্টেশনে চা বিক্রি করতে দেখিনি। কিন্তু আমরা আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে টালির ঘরে থেকে, হাওয়াই চটি পরে ১০ কোটি মানুষের জীবনের উন্নয়নকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে দেখেছি। এটাই তাদের আর আমাদের মধ্যে পার্থক্য।
নির্বাচন ঘোষণার ১ সপ্তাহ পরেও সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেস কোনও রাজনৈতিক দল তাদের প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি
আগে দল সামলা, পরে ভাবিস বাংলা/পরিবর্তনের ডাক দিয়েছে বাংলা, এবার পারলে দিল্লী সামলা
একটা বুথে যেন বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস গণতান্ত্রিকভাবে মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেটা আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে।
৪ বছরে সাড়ে সাত কোটি টাকার এমপিল্যাডের টাকা খরচ করতে পারেনি, দিল্লী বসে আছে। বড় গদ্দারের লেজ ধরে ছোট গদ্দার ঝুলছে।
আপনার হাতে জোড়া ফুলের ঝান্ডা আর দিল্লীতে হবে নরেন্দ্র মোদি ঠান্ডা।
যারা ভাবছে কুৎসা করে, ভুল বুঝিয়ে মানুষের হৃদয় জয় করা যাবে না। আন্দোলন, সংগ্রাম, ত্যাগ, তিতিক্ষা সহ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গণআন্দোলন মানুষ ভুলে যায় নি।
আমাদের লড়াইটা শুধু বিজেপি বা সিপিএমকে হারানোর লড়াই নয়, বাংলার সম্মান, কৃষ্টি, সংস্কৃতি নিয়ে যারা ছেলেখেলা করেছিল তাদেরকে জবাব দেওয়ার লড়াই।
প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা রাজ্য দেবে ৫০ শতাংশ টাকা আর কেন্দ্র দেবে ৫০ শতাংশ টাকা, আর নাম হবে কেন্দ্রের। প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার নাম পালটে বাংলা গ্রামীণ সড়ক যোজনা করায় নরেন্দ্র মোদির আপত্তি। বাংলা নামে তাদের আপত্তি, বাংলার কৃষ্টি, সংস্কৃতিতে, বাংলা কথার সাথে, বাংলা রাজ্যের সাথে তাদের আপত্তি। যারা এই বাংলা ও বাঙালির বিরুদ্ধে আর যাই হোক বাংলার মানুষ তাদেরকে কোনও দিন সমর্থন করবে।