সাম্প্রতিক খবর

সেপ্টেম্বর ২৭, ২০১৮

এবার বাংলায় আসছে মিলান

এবার বাংলায় আসছে মিলান

শিল্প গড়তে বিদেশি লগ্নিতে বড়মাপের সাফল্য এল বাংলায়। এবার মিলান আসছে কলকাতায়। আজ এখানে লোম্বার্ডিয়া প্রভিন্সের প্রেসিডেন্ট আন্তিলিও ফরতানার সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বৈঠক করলেন। উল্লেখ্য, এই সেই প্রভিন্স, যার রাজধানী হল মিলান এবং যেখানে ২০–২৫ শতাংশ ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনে গোটা ইটালির শীর্ষে রয়েছে। ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পেও প্রথম স্থানে রয়েছে মিলান। এই পরিস্থিতিতে মমতার এদিনের লোম্বার্ডিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এখানকার পালাজা রিজিওন লোম্বার্ডিয়া হল সরকারি দপ্তর। তার ৩৫তলায় একটি ঘরে মমতা ও আন্তিলিও বৈঠক করেন।

মমতার সঙ্গে ছিলেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র, মুখ্যসচিব মলয় দে, অর্থসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। ছিলেন ইতালি সরকারের উচ্চপদস্থ কর্তারা। পরে যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‌ইতালি ও ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে। এবার রাজ্যের সঙ্গে রাজ্যের সম্পর্ক তৈরি হল। আমরা ম্যানুফ্যাকচারিং, ডিজাইনিং, তথ্যপ্রযুক্তি ইত্যাদিতে পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারি।’‌

একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে আন্তিলিও বলেছেন, ‘‌বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে যাব আমরা প্রতিনিধি দল নিয়ে।’‌দোভাষীর মাধ্যমে কথা বলছিলেন প্রেসিডেন্ট। তিনি জানালেন, ‘‌আগামী বছর ৭ এবং ৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় ওই বাণিজ্য সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মমতা।’‌

অন্যদিকে মমতা এদিনও মনে করিয়ে দিয়েছেন, ইটালি ও পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধন দীর্ঘদিনের। এখানকার শিল্প, কলা থেকে মাইকেল অ্যাঞ্জেলোর লাস্ট সাপার, মোনালিসার কথা মনে করিয়ে দিয়ে মমতা বলেছেন, ‘‌রেনেসাঁর প্রেরণা বাংলা পেয়েছিল এখান থেকেই। আমরা চাই, আপনাদের বিনিয়োগের সঙ্গে শিল্প, কলা, ফুটবলও নিয়ে আসুন।’‌

তাঁর কথায়, ইটালিতে আমাদের শিল্পপতিদের বিনিয়োগ আছে। এবার আপনারাও আমাদের রাজ্যে বিনিয়োগ করুন। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গে দক্ষ ও মেধাবী মানুষ রয়েছে। চামড়া, ম্যানুফ্যাকচারিং, ফ্যাশন ডিজাইন, উদ্ভাবন, প্রযুক্তিতে সম্ভবানা প্রচুর। বাংলা হল সারা ভারতের সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। সব ক্ষেত্রে এখন দেশের এক নম্বরে রয়েছে। আমি ভ্যাটিকানে মাদার টেরিজার সেন্ট হুড অনুষ্ঠানে গিয়েছিলাম। এবারে প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি কলকাতায় আসার জন্য। আমরা চাই, এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হোক। দুই রাজ্যের আদানপ্রদান হোক। যাতে লগ্নির পথ আরও বিস্তৃত হয়।

এবারে বিদেশ সফরে এসে প্রথম থেকেই মমতার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাকে লগ্নির ক্ষেত্রে কিভাবে আরও বেশি আকৃষ্ট করা যায়, তা তুলে ধরা। এদিন সকালেও শিল্পায়নের প্রসঙ্গে তাই মমতা বলেন, ইটালি, জার্মানি থেকে আমন্ত্রণ পেয়েছিলাম। আমি বছরে একবার হয় তো বিদেশ যাই। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তো কতবার যায়। কোনও কথা হয় না। আমরা চাইছি শিল্প ও কৃষি দুটোই সমান চলুক। কৃষিকে বাদ দিয়ে শিল্প হয় না। এই উদ্যোগে ৪০ শতাংশ বেকারত্ব কমেছে পশ্চিমবঙ্গে। যা দেশের আর কোথাও হয় নি।‌