অগাস্ট ১৪, ২০১৮
কন্যাশ্রী পাওয়ার জন্য কীভাবে আবেদন করতে পারেন অনলাইনে জানুন

পশ্চিমবঙ্গবাসীর কাছে ‘কন্যাশ্রী প্রকল্প’ তো এখন খুবই পরিচিত একটি নাম। সরকারী উদ্যোগের মধ্যে দিয়ে এই প্রকল্পের কথা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত এই প্রকল্প। ২০১৭ সালের জুন মাসে জিতে নিয়েছে ইউনাইটেড নেশন অনারও। ফলে সব মিলিয়ে এই জনপ্রিয় প্রকল্পটি একটি বয়স পর্যন্ত মেয়েদের পড়াশোনায় উৎসাহ দানের জন্য খুবই উপযোগী।
১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী অবিবাহিত মেয়েদের পড়াশোনায় খরচ করার জন্য বছরে ১০০০ টাকা ও ১৮ বছরের পর অবিবাহিত মেয়েদের পড়াশোনা বা কোনও জীবিকায় যুক্ত হওয়ার জন্য এককালীন ২৫০০০ টাকা তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে এই প্রকল্পে। নারীশিক্ষার ক্ষেত্রে এটি একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ।
যদি আপনার পরিবারের বার্ষিক আয় হয় এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা, তাহলে আপনি এই প্রকল্পের জন্য আপনার নাম নথিভুক্ত করতেই পারেন। জেনে নেওয়া যাক কীভাবে এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করা যাবে।
স্কুল থেকে ফর্ম সংগ্রহ
কন্যাশ্রী প্রকল্পে আবেদন করার জন্য ফর্ম নিতে হবে স্কুল থেকে। মেয়েদের সরকারী স্কুলেই কন্যাশ্রীর জন্য ফর্ম পাওয়া যায়। ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত বার্ষিক টাকা পাওয়ার প্রকল্পটিকে বলা হয়– ‘কে ওয়ান’ (K-1)। আর ১৮ বছর বয়সের মেয়েদের এককালীন টাকা পাওয়ার প্রকল্পটিকে বলা হয় ‘কে টু’ (K-2)। দুটির জন্যই আলাদা করে রঙিন ফর্ম সরকারের তরফ থেকে স্কুলগুলিতে দেওয়া থাকে। তবে, ইতিমধ্যেই যদি কে ওয়ানের জন্য আবেদন করা থাকে, তাহলে কে টু-র জন্য আলাদা করে ফর্ম নেওয়ার দরকার পড়বে না। এই ফর্মটি সংগ্রহ করে সেটিকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে ভর্তি করে ফেলতে হবে।
খুলতে হবে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট
ফর্ম ফিল আপ করার পাশাপাশি ব্যাঙ্কে একটি অ্যাকাউন্ট অবশ্যই খুলে রাখতে হবে। রাজ্য সরকারের তরফে প্রকল্পের টাকা সরাসরি অ্যাকাউন্টে দেওয়া হবে। ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যাপারে যদি কোনও রকম অসুবিধা হয়, সে ক্ষেত্রে সরকার স্কুলকে সবরকম সাহায্য করার নির্দেশ দিয়েছে।
ফর্মটি সচেতনভাবে ফিল আপ করতে হবে
ফর্মটি ফিল আপ করার সময়ে যে বিষয়গুলি সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবে, সেগুলি হল-
১. নামের বানান যেন সঠিক থাকে।
২. মোবাইল নম্বর যেন সঠিক থাকে। প্রকল্প বিষয়ক যাবতীয় তথ্য মোবাইলে এস.এম.এস. মারফত জানানো হবে।
৩. ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নম্বর যেন সঠিক থাকে।
৪. ফর্মের এক, দুই ও তিন নম্বর পৃষ্ঠায় যেন নীচের দিকে আবেদনকারীর হস্তাক্ষরে সই থাকে।
জমা দেওয়ার সময় এই প্রমাণপত্রগুলি সঙ্গে রাখতে হবে
এবারে এই ফর্মটি ভর্তি করার পর আপনাকে জমা দেওয়ার সময়ে নিম্নলিখিত ডকুমেন্টগুলির ফটোকপি সাথে রাখতে হবে-
১. আবেদনকারীর বার্থ সার্টিফিকেট।
২. আবেদনকারী যে অবিবাহিতা, সেটি জানিয়ে আবেদনকারীর বাবা বা মা অথবা অভিভাবকের তরফ থেকে একটি বিবৃতি বা প্রমাণপত্র।
৩. আবেদনকারীর ব্যাঙ্কের পাসবইয়ের প্রথম পৃষ্ঠার ফটোকপি।
৪. আবেদনকারীর পারিবারিক আয় যে বছরে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকার বেশী নয়, তা প্রমাণের জন্য ইনকাম সার্টিফিকেট।
তবে সরকারী নিয়মে পারিবারিক আয়ের এই বাধ্যবাধকতা থাকে না যদি আপনি ৪০ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী হন অথবা যদি আপনার মা বা বাবার কেউই বর্তমান না থাকেন। সে ক্ষেত্রে আপনাকে ইনকাম সার্টিফিকেটের পরিবর্তে যে ফটোকপিগুলি দাখিল করতে হবে সেগুলি হল-
১. আবেদনকারী যদি শারীরিক প্রতিবন্ধী হন, তার সার্টিফিকেট।
২. আবেদনকারী যদি পিতা মাতাকে হারিয়ে থাকেন, তাহলে তাদের মৃত্যুর প্রমাণপত্রসহ আপনার আইনত অভিভাবকের এই বিষয়টি জানিয়ে একটি বিবৃতি।
অ্যাকনলেজমেন্ট স্লিপ (ACKNOWLEDGEMENT SLIP)-টি যত্নে রাখুন
আবেদনকারী যখন ফর্মটি স্কুলে জমা দেবেন, তখন ফর্মের ৩ নম্বর পাতাটি প্রধান শিক্ষকের সই ও স্কুল সই সহ আবেদনকারীকে দিয়ে দেওয়া হবে। আবেদনকারীকা এটি যত্ন সহকারে রাখতে হবে। আপনি যে কন্যাশ্রীর জন্য আবেদন করেছেন– এটিই তার প্রমাণ।