সাম্প্রতিক খবর

অগাস্ট ২৮, ২০১৮

৭ বছরে স্কুল শিক্ষায় নতুন দিগন্ত বাংলায়

৭ বছরে স্কুল শিক্ষায় নতুন দিগন্ত বাংলায়

২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যের প্রতিটি দপ্তরের খোলনলচে বদলে সামিল করা হয়েছে উন্নয়নের ধারায়। বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শিক্ষায়।

দেখে নেওয়া যাক গত সাত বছরে স্কুল দপ্তরের কিছু উল্লেখযোগ্য সাফল্যঃ

বিনামূল্যে স্কুল-ব্যাগঃ এই প্রথম রাজ্যে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়াদের বিনামূল্যে স্কুল-ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মোট ৫৭,০৫,১৬১ টি ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে।

বিনামূল্যে পাঠ্য পুস্তকঃ রাজ্য সরকার প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের বিনামূল্যে পাঠ্য পুস্তক বিতরণ করে। ৩৮৯টি বিষয়ে প্রায় ৯.৫ কোটি বই প্রতি বছর ছাপা ও বিতরণ করা হয়।

বিনামূল্যে ব্রেল পুস্তকঃ দৃষ্টিশক্তিহীনদের জন্য বিশেষ ব্রেল হরফে লেখা পুস্তকও বিনামূল্যে প্রদান করা হয়।

বিনামূল্যে স্কুলের জুতোঃ প্রাথমিক স্তরের প্রায় ৫০.৩২ লক্ষ বিদ্যার্থীদের বিনামূল্যে স্কুলের জুতো দেওয়া হয়েছে।

বিনামূল্যে স্কুলের পোশাকঃ প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণীর সকল পড়ুয়াদের বিনামূল্যে স্কুলের পোশাক প্রদান করে স্কুল দপ্তর।

মিড-ডে মিল প্রকল্পঃ সমস্ত সরকারি ও সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত স্কুলকে মিড-ডে মিল প্রকল্পের আওতায় আনা হচ্ছে। এই প্রকল্পের অধীনে প্রায় ১,১৯,৩৮,৩৮২জন পড়ুয়া আছে।

২০১১-১২ সাল থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ৭৬,২৪৮টি রান্নাঘর ও ভাড়ার নির্মাণ করা হয়েছে। এই একই সময়ে ৬,০২৫টি কিচেন গার্ডেন তৈরী করা হয়েছে।

এই মুহূর্তে ৩৭ শতাংশ স্কুলে মিড ডে মিলের জন্য এলপিজি ব্যবহার করা হয়। এর জন্য রাজ্যের কোষাগার থেকে ১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

জঙ্গলমহল ও সুন্দরবন অঞ্চলে ৯৬৯টি ডাইনিং হল তৈরী করা হয়েছে। এর জন্য রাজ্যের কোষাগার থেকে ২৯.৭২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া আরও ১৩.৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রত্যন্ত চাবাগান, জঙ্গলমহল ও সুন্দরবন অঞ্চলে ৪৩৪টি ডাইনিং হল তৈরী করা হয়েছে।

প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকঃ ৫০,৪২৬জন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে।

শিক্ষক নিয়োগঃ উচ্চপ্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে ২৭,৭৫২জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছে।

পানীয় জল ও বাথরুমঃ সমস্ত স্কুলে পানীয় জল ও বাথরুমের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।

ই-ক্লাসরুমঃ নতুন উদ্যোগের মাধ্যমে ৬৫০টি প্রাথমিক ও ২০০০টি মাধ্যমিক স্তরের স্কুলে ই-ক্লাসরুম পরিকাঠামো তৈরী করা হয়েছে।

বিনোদনের পরিকাঠামোঃ ৯৯০টি প্রাথমিক স্কুলে শিশুদের বিভিন্ন ধরনের বিনোদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

অতিরিক্ত শ্রেণীকক্ষঃ শিক্ষার পরিকাঠামোর উন্নতি করতে গত সাত বছরে ৯৬,৪২৮টি অতিরিক্ত শ্রেণীকক্ষ তৈরী করা হয়েছে স্কুলে। গত সাত বছরে ৯৫,৩৭৮টি অতিরিক্ত শ্রেণীকক্ষ নির্মিত হয়েছে সর্ব শিক্ষা অভিযানের অধীনে।

নতুন ভবন: গত সাত বছরে ৫৮৬টি নতুন প্রাথমিক স্কুলের ভবন, ৪,২১১টি উচ্চ প্রাথমিক স্কুলের ভবন, ২,৭৩৩টি এসএসকে ও ১৭১টি এমএসকে তৈরী করা হয়েছে।

কম্পিউটারঃ কম্পিউটারের ব্যবহার বাড়াতে ৫,৫৯১টি মাধ্যমিক স্কুলে ৫৬,০৬০টি কম্পিউটার দেওয়া হয়েছে।

জুনিয়র হাই স্কুলের উন্নতিকরণ: ৫৭৫টি জুনিয়র হাই স্কুলকে হাই স্কুলে উন্নীত করা হয়েছে গত সাত বছরে।

মাধ্যমিক স্কুলের উন্নতিকরণ: গত সাত বছরে ১,৯২৪টি মাধ্যমিক স্কুলকে উচ্চমাধ্যমিক স্কুলে উন্নীত করা হয়েছে।

লাইব্রেরী পরিকাঠামো উন্নয়নঃ ৩,৪৪৭টি স্কুলে লাইব্রেরী পরিকাঠামো তৈরীর জন্য ১৭.৬০কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে।

গবেষণাগার পরিকাঠামোঃ গত সাত বছরে ৪,২৩৮টি স্কুলে গবেষণাগার পরিকাঠামো তৈরীর জন্য ৬৮.৯৮কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে।

তত্ত্বাবধায়ক এবং গ্রুপ-ডি নিয়োগঃ বিভিন্ন জেলায় চুক্তির ভিত্তিতে ১৮২জন শিক্ষা তত্ত্বাবধায়ক এবং ২০০ জন গ্রুপ-ডি নিয়োগ করা হয়েছে।

বিশেষ প্রশিক্ষণঃ মোট ৩,৫৯,৮৫১ নতুন স্কুল পড়ুয়াদের মধ্যে ৩,২১,২২৩জনকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

বালিকা বিদ্যালয় হোস্টেলঃ ৯২টি কস্তুরবা গান্ধী বালিকা বিদ্যালয় হোস্টেল চালু হয়েছে। ২০১৭-১৮ সালে এই হোস্টেলগুলিতে মোট আবাসিকের সংখ্যা ৮,৪৭২। এবং ২০১১-১২ সাল থেকে মোট আবাসিকের সংখ্যা ৫১,২৫৯জন।

আবাসিক স্কুলঃ শহরাঞ্চলের দুঃস্থ শিশুদের জন্য আবাসিক স্কুল চালু করা হয়েছে। এই স্কুলে ২০১৭-১৮ সালে আবাসিকের সংখ্যা ছিল ২৫০৭ এবং ২০১১-১২ সাল থেকে এখানে মোট আবাসিকের সংখ্যা ৯৪৭৮।

শিক্ষক প্রশিক্ষণঃ মোট ৭,৫৬,৯১২ জন শিক্ষককে ইন-সার্ভিস টিচার্স ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে।

বিশেষ চাহিদাযুক্ত শিশুদের জন্য বন্দোবস্তঃ বিশেষ চাহিদাযুক্ত শিশুদের জন্য ১,৩৮২টি স্কুলে ৯৩,৬৪৪জন শিশুকে কম্পিউটার নির্ভর শিক্ষা প্রদান করা হচ্ছে।

যাতায়াতের খরচ ও সহচরের খরচঃ ২,৬১,৯৫০ জন পড়ুয়াকে যাতায়াতের খরচ ও ১,৭৭,২৫২জন পড়ুয়াকে সহচরের খরচ দেওয়া হয়।

বিআরজিএফ স্কুলঃ এরকম কোনও ব্যবস্থা ২০১১র আগে ছিল না। গত সাত বছরে ৪০টি বিআরজিএফ স্কুলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৩৯টি স্কুল তৈরী হয়েছে ও ৩৭টি চালু হয়ে গেছে।

মডেল স্কুলঃ ২০১১পর্যন্ত এরকম কোনও ব্যবস্থা ছিল না। গত সাত বছরে ৬৭টি মডেল স্কুল অনুমোদন পেয়েছে যার মধ্যে ৫৪টি স্কুল তৈরী হয়ে গেছে ও ৫১টি স্কুল চালু হয়ে গেছে।

মেয়েদের হোস্টেলঃ ১৩৯টি সরকার অনুমোদিত এবং ৩৯টি বিআরজিএফ স্কুলের জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট মেয়েদের হোস্টেলের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

স্কলারশিপঃ ২০১৬-১৭ সালে স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিন্স স্কলারশিপে যেসকল পড়ুয়া ৭৫ শতাংশের বেশী নম্বর পেয়েছে ও যাদের পরিবারের বার্ষিক অ্যায় ২,৫০,০০০ এর নীচে, তাদের বছরে ১২,০০০ টাকা করে স্কলারশিপ দেওয়া হয়। ২০১১-১২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ৮৭,৬৮৫জন এই বৃত্তি লাভ করেছে।

খাতা বিতরণঃ পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়াকে ৩টি করে; নবম ও দশন শ্রেণীর পড়ুয়াদের ৪টি করে; একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের ৫টি করে মোট ৯৭,৭৩,৪২৬ জন পড়ুয়াকে ৩,৪০,৩৩,৮২৬টি খাতা বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে।