সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৮
বাংলায় লগ্নি করতে আগ্রহী জার্মান সংস্থা

হেগ জিএমবিএইচের পর ফের সাফল্যের বার্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জার্মান সফরে। কলকাতা এবং হাওড়ার মধ্যে বৈদ্যুতিন ফেরি চালাতে লগ্নির বিষয়ে ইতিবাচক আশ্বাস দিল জার্মানির সরকারি সংস্থা জিআইজেড।
গত ১৯শে সেপ্টেম্বর ফ্র্যাঙ্কফার্টে এই সংস্থার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং পশ্চিমবঙ্গ শিল্প উন্নয়ন নিগমের (ডব্লুবিআইডিসি) এমডি। সেখানে নগরোন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয় দু’পক্ষের। তার মধ্যেই রয়েছে কলকাতা-হাওড়া ইলেকট্রিক ফেরি চালানোর বিষয়টি।
বর্তমানে এই জলপথে যে সব ফেরি চলাচল করে, সেগুলি মূলত ডিজেলচালিত। তাই দূষণ কমাতে এই বিকল্প প্রস্তাব দেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। যেভাবে গোটা বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়, তাতে জিআইজেড সন্তুষ্ট বলেই সূত্রের খবর। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলির উন্নয়নে আর্থিক এবং প্রযুক্তিগতভাবে সাহায্য করে এই সংস্থা। তাই ৫০-৫০ আনুপাতিকহারে যৌথ বিনিয়োগের মাধ্যমে এই প্রকল্প চূড়ান্ত হবে বলেই আশাবাদী রাজ্য।
তবে শুধুমাত্র বৈদ্যুতিন ফেরিই নয়, কলকাতার বুকে বৈদ্যুতিন বাস, বৈদ্যুতিন ট্রলি বাস (উন্নত প্রযুক্তির ট্রাম) চালানো নিয়ে আলোচনা হয় এই বৈঠকে। এক্ষেত্রেও বিনিয়োগের অনুপাত ৫০-৫০। পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে ১০০টি ই-বাস এবং ২০টি ই-ট্রলি বাস চালানো নিয়ে কথাবার্তা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাজ্যের অর্থ এবং শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘সাধারণ মানুষ যাতে আরও সহজে, আরও দূষণমুক্তভাবে চলাচল করতে পারেন, সেজন্য এই বৈদ্যুতিন গাড়ি, লঞ্চের ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি। এইসব প্রকল্পে বিনিয়োগের জন্য ওরা যথেষ্ট ইতিবাচক আগ্রহ দেখিয়েছে।’
আজ ইতালির মিলানের উদ্দেশে রওনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর প্রতিনিধিদল। তার আগে বিনিয়োগ সম্ভাবনা জোরদার করতে বুধবার ডুসেলডর্ফ গিয়েছিলেন অমিতবাবু। নর্থ রাইন ওয়েস্টফালিয়া রাজ্যের অর্থমন্ত্রী প্রফেসর ডঃ আন্দ্রে পিঙ্কওয়াট এবং তাঁর ৬ সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। অমিতবাবুর সঙ্গে ছিলেন অর্থসচিব এবং ফিকির রাজ্য অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল অ্যান্ড হেড।
বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে আসার জন্য ২৭ এপ্রিল রাজ্য সরকারের তরফে একটি আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছিল পিঙ্কওয়াটকে। এদিন সেই প্রসঙ্গে অমিতবাবুকে তিনি আশ্বাস দেন, ‘প্রতিনিধিদল নিয়ে আমি নিশ্চয় আসব।’ পাশাপাশি মাইনিং, ইক্যুইপমেন্ট, টেকনোলজি, সার্ভিসেস (এমইটিএস), কেমিক্যাল ও পেট্রকেমিক্যালস, লজিস্টিক্স, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি এবং শিক্ষা নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে আলোচনা হয়। এই পাঁচটি ক্ষেত্রেই বিনিয়োগের আশ্বাস মিলেছে বলে জানিয়েছেন অমিতবাবু।
বৈঠক শেষে অমিতবাবু তাদের কাছে প্রস্তাব রাখেন, ‘আমরা চাই শুধুমাত্র দুই দেশ নয়, রাজ্যগুলির মধ্যেও পারস্পরিক সম্পর্ক গড়ে উঠুক।’