সেপ্টেম্বর ১২, ২০১৮
বাংলায় জ্বালানি তেলের দাম হ্রাসের পর ডঃ অমিত মিত্রর বক্তব্য

মঙ্গলবার রাজ্য সরকার জ্বালানির দাম ১ টাকা কমানোর পর রাজ্যের অর্থমন্ত্রী ড. অমিত মিত্র কয়েকটি বিষয়ে কিছু ব্যাখ্যা দিলেন এবং প্রশ্ন তুললেন যে কেন কেন্দ্রীয় সরকার জ্বালানির মুল্যবৃদ্ধি রুখতে কোনরকম ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
এই দিন তিনি বলেন যে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রোলের ওপর আবগারি শুল্ক বাড়িয়েছে ১০ টাকা- তারা ক্ষমতায় আসার আগে যা ছিল ৯.৪৮ টাকা তা এখন হয়েছে ১৯.৪৮ আর ডিজেলের ওপর তারা আবগারী শুল্ক বাড়িয়েছে ১১.৭৭ টাকা। অন্যদিকে এই রাজ্যে জ্বালানির ওপরে বিক্রয় কর বা সেস কোনটাই বাড়ানো তো হয়ই নি বরঞ্চ মমতা বন্দোপাধ্যায় এক টাকা দাম কমিয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন যে এই রাজ্যে জ্বালানি তেলের ওপরে কোনও ভ্যাট নেওয়া হয় না, শুধুমাত্র বিক্রয় কর এবং সেস নেওয়া হয়। তিনি কেন্দ্রীয় সরকারকে কাঠগড়ায় তুলে বলেন যে এদের কান্ডজ্ঞানহীন ব্যবহারের জন্য আজকে দেশে জ্বালানির দাম এত বেড়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন যে আন্তর্জাতিক বাজারে যখন তেলের দাম প্রায় এক-তৃতীয়াংশ কমে গেছিল তখন কেন এই সরকার বেশি করে তেল কিনে মজুত করে রাখে নি? আর আজকে যেখানে ডলারের তুলনায় টাকার দাম কমে যাচ্ছে তখন এই সরকার নিজেদের খেয়ালখুশিমত তেলের দাম বাড়াচ্ছে।
তিনি এও বলেন যে মমতা বন্দোপাধ্যায় আরও একবার প্রমাণ করলেন যে তার সরকার মা,মাটি ও মানুষের হৃদয়ের সরকার।অদুর ভবিষ্যতে রাজ্যে কোনও নির্বাচন নেই যে এটাকে নির্বাচনি লোকদেখানো কৌশল বলা যাবে। আসলে এই পদক্ষেপ কেন্দ্রীয় সরকারের বেলাগামহীনতার ওপরে একটি জোরালো জবাব।
পেট্রো-পন্যজাত বিষয়ক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান কিছুকাল আগে প্রস্তাব রেখেছিলেন যে সমস্ত রকম পেট্রো-পণ্যকে জি এস টি-র আওতায় আনা হবে। কিন্তু বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির মন্ত্রীরাই তাতে কোন প্রকার সায় দেয় নি। আদতে জি এস টি কাউন্সিল চেয়েছিল যে জি এস টি প্রথা একটু থিতু হয়ে গেলে পেট্রো-পণ্যকে জি এস টি-র আওতায় আনা হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যদি সত্যিই চাইতেন যে পেট্রো-পণ্যকে জি এস টি-র আওতায় আনা উচিৎ তবে তিনি কেন বিজেপি-শাসিত রাজ্যগুলির মন্ত্রীদের সেরকম নির্দেশ দেননি?
তিনি বলেন যে যতক্ষণ না কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রো-পণ্যকে জি এস টির আওতায় আনা হচ্ছে, রাজ্য সরকার গুলি আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। ২০১৭-১৮ সালে এই ক্ষতির পরিমান ছিল প্রায় ৪৩,০০০ কোটি টাকা। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে শীঘ্রই এই ব্যাপারে জি এস টি কাউন্সিল উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
রাজ্যে দুর্গা পুজো কমিটি গুলিকে এবছর ১০,০০০ টাকা করে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন যে বাংলায় দুর্গা পুজো একটি সার্বজনীন উৎসব। এতে কোনও বিশেষ একটি সম্প্রদায় নয়, জাত-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই উৎসবে মেতে ওঠেন। এই অনুষ্ঠান সকলের প্রাণের অনুষ্ঠান। এতে করে মানুষের সাথে মানুষের যোগাযোগ বেড়ে ওঠে এবং সবাই একসঙ্গে আনন্দ করে থাকেন।তাই এই অনুদান দেওয়া কোন বিশেষ সম্প্রদায়কে খুশি করার জন্য নয়।