জুলাই ২৪, ২০১৯
আজ চলচ্চিত্র সম্মান প্রদান করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ, ২৪শে জুলাই নজরুল মঞ্চে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মহানায়ক উত্তম কুমারের মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চলচ্চিত্র সম্মান প্রদান করলেন।
মুখ্যমন্ত্রী সমস্ত খ্যাতনামা চলচ্চিত্র শিল্পীকে চলচ্চিত্রে তাঁদের অবদানের জন্য এই পুরষ্কার প্রদান করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর একান্ত উদ্যোগে ২০১২ সাল থেকে এই পুরষ্কার প্রদান করা শুরু হয়। পাশাপাশি আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও। এই উপলক্ষ্যে বক্তব্য রাখেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ
এখানে উপস্থিত সকল শিল্পীকে ধন্যবাদ। আমরা মহানায়ককে বিভিন্ন পুরষ্কার প্রদানের মাধ্যমে স্মরণ করি।
উত্তম কুমার এমন একটা নাম যা চিরকালীন, চিরজনীন, বিশ্বজনীন। উত্তম কুমারের নামের সঙ্গে আমাদের জীবন, যৌবন সব মিলে আছে। উত্তম কুমারের শুরু আছে, শেষ নেই। চলচ্চিত্র জগৎ, সঙ্গীত জগৎ, কলাকুশলী জগতে এমন কিছু কিছু নাম আছে যা আমরা কোনোদিন ভুলতে পারব না। তাঁদের নাম ভুলে গেলে, তাঁদের অবদান, স্বীকৃতি, অস্তিত্ব অস্বীকার করা হয়। এভাবেই আমাদের বাংলাকে তুলে ধরতে হবে। সকলকে এনাদের অবদানের কথা জানাতে হবে।
১৯৮০ সালে উত্তম কুমারের মৃত্যুদিনটা আজও ভুলতে পারিনা। আজকের দিন এলে সেই কথাটা বারবার মনে পড়ে যায়।
বিভিন্ন শিল্পীর নামে পুরষ্কার করা হয়েছে। এই নামগুলির মধ্যে দিয়ে তাঁরা আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।
৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে টেকনিশিয়ান স্টুডিও করা হয়েছে। বারুইপুরে টেলি আকাদেমি করছি। ওখানে প্রায় ১৩২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ওখানের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
অভিনেতা ও টেকনিশিয়ানদের জন্য স্বাস্থ্যসাথী আছে। চেষ্টা করা হচ্ছে সঙ্গীতশিল্পীদের স্বাস্থ্যসাথীর আওতায় আনতে। ইতিমধ্যেই আমাদের ৭.৫ কোটি মানুষ স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে আছেন। এই কার্ডে বেসরকারি হাসপাতালেও বছরে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসা পরিষেবা পেতে পারবেন।
আমরা যাদের বঙ্গবিভূষণ দিই, তাঁদের চিকিৎসাও আমরা করাই। অনেক স্বনামধন্য শিল্পীকে আমরা চিকিৎসায় সাহায্য করেছি। আমরা বিশিষ্ট শিল্পীদের মাথা উঁচু করে চলতে সাহায্য করতে চাই।
মানুষের টাকা, মানুষের কাজে লাগলে আমরা খুশী হই।
একটা গান যত তাড়াতাড়ি মানুষের মনে দাগ কাটতে পারে, ১০০টা ভাষণও সেই দাগ কাটতে পারেনা। এখনও কত পুরনো গান আমাদের সব সময় মনে পড়ে। এই গানগুলো কখনও পুরনো হয় না।
মান্না দেকে আমি ব্যাঙ্গালুরুতে গিয়ে বঙ্গবিভূষণ দিয়ে এসেছিলাম। এনারা আমাদের গর্ব।
আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের এবার রজত জয়ন্তী বর্ষ। আপনারা সকলে আসবেন।
আপনারা যারা গান তৈরী করেন, নাটক লেখেন, কিছু জনসচেতনতামুলক বিষয়, যেমন জল সংরক্ষণ নিয়ে কিছু লিখুন। আগামী দিনে বিশ্বের বড় সমস্যা হতে চলেছে পানীয় জল।
বাংলা ভাগ্যবান, প্রকৃতির আশীর্বাদে নদ নদী অনেক আছে। আমাদের সরকার আট বছরে ৩ লক্ষ নতুন পুকুর কেটেছে, ৪০০টা নতুন চেক ড্যাম তৈরী করেছে। দক্ষিণবঙ্গে খরার মতো পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে।
যেসব শিল্পী মারা গেছেন, তাঁরা শারীরিক ভাবে উপস্থিত না থাকলেও আমাদের মনের মধ্যে তাঁরা আছেন ও থাকবেন। বাংলার সঙ্গে চিরকাল তাঁরা থাকবেন।
মুম্বাই ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী হলেও ভারতের সংস্কৃতির রাজধানী কলকাতা। আপনাদের মেধা, বুদ্ধি, প্রতিভা দিয়ে আগামি দিনের বাংলাকে গড়ে দিয়ে যান।
এবছরের পুরষ্কার প্রাপকরা হলেনঃ-
চলচ্চিত্র সম্মানঃ-
১. সেরা শিশু অভিনেতাঃ- মিঃ যশোজিৎ ব্যানার্জী, (অ্যাডভেঞ্চার অফ জোজো)
২. সেরা রুপসজ্জাঃ- শ্রী রামচন্দ্র রজক ( নগর কীর্তন)
৩. সেরা কসটিউম ডিজাইনারঃ- শ্রী গোবিন্দ মন্ডল ( নগর কীর্তন)
৪. সেরা চিত্রগ্রাহকঃ- শ্রী শুভঙ্কর ভর (ব্যোমকেশ গোত্র)
৫. সেরা চিত্রনাট্যকারঃ- শ্রী সৃজিত মূখার্জী (এক যে ছিল রাজা)
৬. সেরা সঙ্গীত পরিচালনাঃ- শ্রী প্রসেন (শাজাহান রেজেন্সি)
৭. সেরা উদীয়মান চলচ্চিত্র পরিচালকঃ- শ্রী ধ্রুব ব্যানার্জী ( দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন)
৮. সেরা পরিচালকঃ- শ্রী কৌশিক গাঙ্গুলি (নগর কীর্তন)
৯. সেরা প্রযোজকঃ- শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস (এক যে ছিল রাজা, ব্যোমকেশ গোত্র, দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন) ও অ্যাক্রোপলিস এন্টারটেইনমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড ( নগরকীর্তন)
১০. সেরা অভিনেত্রীঃ- শ্রীমতী তনুজা (সোনার পাহাড়)
১১. সেরা অভিনেতাঃ- শ্রী ঋত্ত্বিক চক্রবর্তী (নগরকীর্তন)
১২. সেরা চলচ্চিত্রঃ- এক যে ছিল রাজা (শ্রী সৃজিত মূখার্জী)
মহানায়ক সম্মানঃ-
১. শ্রীমতি শতাব্দী রায়
২. শ্রীমতি দেবশ্রী রায়
৩. শ্রীমতি ইন্দ্রানী হালদার
৪. শ্রী যীশু সেনগুপ্ত
৫. শ্রী পরমব্রত চ্যাটার্জী