ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৯
পূর্ব ভারতের ‘লজিস্টিক হাবে’ পরিণত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গঃ বিশ্ব বঙ্গ সম্মেলনে মুকেশ আম্বানি
আজ শুরু হল বাংলার ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। এই নিয়ে এবছর পঞ্চম বর্ষে পা দিল এই সম্মেলন। দেশ ও বিদেশ থেকে সকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে শুরু হওয়া বাংলার উন্নয়ন যজ্ঞের ভূয়সী প্রশংসা করেন। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক দেশের কোন কোন শিল্পপতি কি কি বলেন।
সঞ্জীব গোয়েঙ্কা- আমরা বাংলায় ২৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। এই বিনিয়োগ খুবই সফল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্ব স্বচ্ছ এবং দূরদৃষ্টিসম্পন্ন। বাংলা ব্যাবসায় সফল। বাংলা মানেই ব্যাবসা। বাংলায় আসুন ও বিনিয়োগ করুন।
মুকেশ আম্বানি- জয় বাংলা। জয় বিশ্ব বাংলা। কলকাতা শুধু ‘সিটি অফ জয়’ না ‘সিটি অফ হোপ’ও। এই রাজ্য গত এক বছরে চরম উন্নতি করেছে। আমি গত বছর বলেছিলাম যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’ ‘বেস্ট বেঙ্গল’এ পরিণত হয়েছে। তা ইতিমধ্যেই বাস্তবায়িত হয়েছে। দেশের সব রাজ্যের তুলনায় বাংলার জিডিপি বৃদ্ধির হার সব থেকে বেশী।
বর্তমানে এই রাজ্যে বিনিয়োগ ২৮ হাজার কোটি টাকা। আমাদের সমস্ত বিনিয়োগের ১০ সতাংশই এই রাজ্যে বিনিয়োগ হয়েছে। আমরা আরও ১০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিয়েছি।
পূর্ব ভারতের ‘লজিস্টিক হাবে’ পরিণত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। ৫ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের ফলে এখানে ৫০ হাজার কর্মসংস্থান হবে। রিলায়েন্স গোষ্ঠী পশ্চিমবঙ্গে ১ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান করেছে।
মমতা দিদি, আপনার নেতৃত্বে বাংলার গৌরব বেড়ে চলেছে।
সজ্জন জিন্দাল- বাংলার মানুষদের থেকে আমি যে ভালোবাসা এবং উৎসাহ দেখেছি, তা আর কোথাও দেখিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়ন নিয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। তিনি পুরো রাজ্যকে উদ্বুদ্ধ করেছেন আরও বেশী বিনিয়োগ, আরও বেশী শিল্প আনতে। ২০৩২ এর মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ কয়েক লক্ষ কোটি টাকার অর্থনীতিতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
আমরা এ রাজ্যে আমাদের সিমেন্ট প্ল্যান্টের ক্ষমতা দ্বিগুণ করছি। এ রাজ্যের বিনিয়োগ করতে কারোর দ্বিধা বোধ করা উচিৎ না। আপনি যদি ভারতে বিনিয়োগ করতে চান, এটি সেরা রাজ্য। আমি নিশ্চিত ভাবে বলছি সারা দেশে এর থেকে বেশী ব্যাবসায় সহায়ক রাজ্য আর নেই। আমরা ১ হাজার মেগাওয়াটের পাম্প স্টোরেজ প্রকল্প করব ১০০ কোটি ডলার ব্যায়ে।
রাজন ভারতি মিত্তল- আমি এই শহরে অভূতপূর্ব পরিবর্তন দেখেছি। এই রাজ্য জিডিপি বৃদ্ধি, কৃষি, শিক্ষা ক্ষেত্রে পুনরুত্থান করেছে। পশ্চিমবঙ্গ ভারতের মধ্যে বিনিয়োগের গন্তব্যস্থল। আমি বলচে চাই, মুখ্যমন্ত্রী যখন বলেন, ‘বেঙ্গল মিন্স বিজনেস’, তার মানে সত্যই এই রাজ্য বাণিজ্যের জন্য প্রস্তুত। মুখ্যমন্ত্রীর সুনেতৃত্ব প্রশ্নাতীত। তিনি উদার মনে সকলের কথা শোনেন, যিনি বিনিয়োগকারীদের আমন্ত্রণ জানান। শুধু রাজ্য না, মুখ্যমন্ত্রীও বাণিজ্যের জন্য প্রস্তুত।
নিরঞ্জন হিরানন্দানি, এমডি, হিরানন্দানি গ্রুপ- পশ্চিমবঙ্গের মানুষ ভাগ্যবান যে তারা এমন এক মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছেন যিনি স্নেহময়ী, সাহসী, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন এবং আরও অনেক গুণসম্পন্ন রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তিনি শুধু সেরার সেরা মুখ্যমন্ত্রী নন, তিনি ‘সুপার সে উপার’।
এইচ এনার্জি জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন করেছে। সম্প্রতি পাইপলাইন তৈরীর অনুমতি পেয়েছে। ২০২২ সালে হদিয়াতে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর ফলে শহরে নির্মাণ খরচ কমবে এবং সমস্ত শহরে গ্যাসের সরবরাহ হবে।
মুখ্যমন্ত্রী একটি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এসেছেন। এই চিন্তাধারা থেকেই রাজ্যে বিদ্যুৎ ও গ্যাস আসছে। গ্যাসের শক্তি ‘ডিফারেনশিয়েটর’ হতে চলেছে। এই রাজ্যে শুধু না সমগ্র উত্তর পূর্ব ভারতে এবং বাংলাদেশে একটি বিশাল বাজার তৈরী হবে।
ওয়াই কে মোদী, জিইইসিএল- আমরা এখন পর্যন্ত ২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছি। আগামী পাঁচ বছরে আমরা আরও ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করব। আমরা ক্লিন গ্যাস সরবরাহ করব আসানসোল, দুরগাপুর, কলকাতা সহ বিভিন্ন শহরে। আমরা কোনও সমস্যার সম্মুখীন হলেও মুখ্যমন্ত্রী এবং শিল্পমন্ত্রীর তত্বাবধানে তা পরের দিনই সমাধান হয়ে যায়।
রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের মত নেই। পুরুলিয়ার মাওবাদী সমস্যা সম্পূর্ণ মিটে গেছে। বাণিজ্যের সহজীকরনের সুবিধা তৃণমূল স্তর পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এটি রাজ্যের একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন।
সহজেই শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়, যার ফলে বাণিজ্য করা অনেক সহজ হয়েছে। বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে দৌড়াদৌড়ি করতে হয় না। বাণিজ্যিক সহজীকরনের ফলে সবকিছু অনলাইনে করা যায়। আমার সমস্তও ব্যাবসা বাংলায়। দিদি খুব যোগ্য, মানবিক এবং সবসময় খুব আন্তরিক।
সঞ্জীব পুরি, এমডি, আইটিসি- আজ যারা এখানে উপস্থিত সকলে আজকের বাংলার উৎসাহ ও প্রত্যয় উপলব্ধি করতে পারছে। আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলার উন্নয়ন লক্ষণীয়।
রাজ্য সরকারের ওয়েবসাইট ঠিকই বলে, এগিয়ে বাংলা। আমি তার সঙ্গে যোগ করতে চাই, ‘বাংলা এগিয়ে আছে, এগিয়ে থাকবে’।
আগের বছরের সম্মেলনে আমরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে ৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করেছিলাম এবং তা খুব অল্প সময়ে বাস্তবায়িত হয়েছে। এতেই বোঝা যায় বাংলায় বাণিজ্যিক সহজীকরন কত সহজ হয়েছে। এটা আপনি রাজ্যের যেকোনও প্রান্তে প্রত্যক্ষ করতে পারবেন।
আমরা রাজ্যে আরও ১৫০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করতে চাই।
করন আদানি, আদানি গ্রুপ- বাংলায় একটি পোর্ট এবং লজিস্টিক পার্ক নির্মাণ করবে।
ড পূর্ণেন্দু চ্যাটার্জি, চ্যাটার্জি গ্রুপের চেয়ারম্যান- আমরা কথা দিয়েছিলাম আমরা হলদিয়ায় একটি ‘ভ্যালু অ্যাডেড পার্ক’ নির্মাণ করব, আজ সেটি উদ্বোধন হল।
আমরা আরও তিনটি নতুন গবেষণা কেন্দ্র খুলছি নিউরোসায়েন্স, কোয়ান্টাম টেকনোলজিস, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং ব্লকচেনের ওপর। আগামী দু মাসের মধ্যে এগুলি চালু হয়ে যাবে।
আমি সকলকে অনুরোধ করব, বাংলায় গবেষণা করতে। বাংলার গ্রামে গ্রামে অনেক প্রতিভা আছে।
সন্দীপ সোমানি, ভিসি, এমডি হিন্দুস্তান স্যানিটারিওয়্যার অ্যান্ড ইন্ডাস্ত্রীজ লিমিটেড এবং ফিকির সভাপতি- মানুষের মধ্যে বেড়ে চলা উৎসাহ বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের সাফল্যের মূলমন্ত্র। মুখ্যমন্ত্রীর অসাধারণ নেতৃত্বে পশ্চিমবঙ্গ সরকার একটি লক্ষ্যেই কাজ করে চলেছে তা হল উন্নয়ন। এমনকি রাষ্ট্রসঙ্ঘ এই কাজের প্রশংসা করেছে। আদর্শ কাজের পরিবেশ এবং মানুষের দক্ষতার ফলে রাজ্য এখন সুযোগের কেন্দ্র হয়ে দাঁড়িয়েছে।
মমতা দিদি আপনার সরকার অসাধারণ কাজ করে চলেছে রাজ্যকে আর্থিক ও সামাজিক স্বাধীনতার চুড়ায় নিয়ে যেতে চায়।
রুদ্র চ্যাটার্জি, ওবিটির চেয়ারম্যান- মুখ্যমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে কর আদায়ে ভালো জায়গায় পৌঁছেছে যে টাকা ব্যয় হচ্ছে পরিকাঠামোমূলক প্রকল্পে। রাজ্য সরকার স্বাস্থ্য এবং শিক্ষায় বিপুল বিনিয়োগ করছে যার ফলে কর্মীদের কাজ করার ক্ষমতা বাড়ছে।
রাজ্যের স্টার্ট আপ যেমন ওয়াও মোমো, মান্যবর এই মুহূর্তে বেসরকারি ইকুইটি এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটাল সংস্থাদের উৎসাহ দিচ্ছে।
আমরা শিলিগুড়িতে ৩৫০কোটি টাকা ব্যয়ে একটি হেলথ সিটি তৈরী করছি।