সাম্প্রতিক খবর

অগাস্ট ২৯, ২০১৮

খেলাধুলার মাধ্যমে সামাজিক শান্তি স্থাপন

খেলাধুলার মাধ্যমে সামাজিক শান্তি স্থাপন

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় ও ঐকান্তিক উদ্যোগে রাজ্য সরকার বাম আমলের অবহেলিত অঞ্চলের যুবদের জন্য দুটি ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠান দুটি হল, জঙ্গলমহল উৎসব এবং হিমল-তেরাই-ডুয়ার্স ক্রীড়া উৎসব।

এই দুটি উৎসবের মাধ্যমে সেই অঞ্চলের তরুণরা সমাজের মূলস্রোতে ফিরে এসেছে।

জঙ্গলমহলে পরিবর্তনের হাওয়া

আদিবাসী অধ্যুষিত জঙ্গলমহল, যা মূলত পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া ও বীরভূম জেলা নিয়ে বিস্তৃত। মাওবাদী অধ্যুষিত হওয়ার ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই অঞ্চলে কোনও উন্নয়ন হয়নি। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর, মুখ্যমন্ত্রী দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেন এই অঞ্চলের মানুষদের সমাজের মূলস্রোতে ফিরিয়ে আনার জন্য।

কর্মঠ হওয়ার কারণে আদিবাসীদের রক্তেই আছে খেলাধুলা। এবং এই সুযোগকেই পুরোপুরিভাবে কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছে ওখানকার মানুষের মধ্যে আত্ম মর্যাদা ও আত্ম বিশ্বাস ফিরিয়ে এসে তাদের স্বনির্ভর করে তুলতে।

মুখ্যমন্ত্রী যে বছর ক্ষমতায় আসেন, সেই ২০১১ সালেই প্রথম জঙ্গলমহল কাপ আয়োজন করা হয়। ২০১২ থেকে এটিই জঙ্গলমহল উৎসব নামে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আকার ধারন করেছে। জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত এই উৎসব এখন ঐ এলাকার মানুষের সঙ্গে আঙ্গিক ভাবে জড়িয়ে গেছে।

ফুটবল, তিরন্দাজি, কাবাডি ও অন্যান্য প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। এছাড়া সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন হয় এবং স্থানীয়দের উৎসাহিত করা হয় সেরা পারফরম্যান্স দেওয়ার জন্য। এই উৎসবে স্থানীয় শিল্পীরা তাদের শিল্পভাণ্ডারের পসরা নিয়ে উপস্থিত থাকেন প্রদর্শনী ও বিক্রির জন্য।

এই উৎসব থেকে নতুন প্রতিভাদের খুঁজে বের করা হয় এবং পরবর্তীতে তাদের বিভিন্ন সরকার পরিচালিত কোচিং কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
অনেক ভালো খেলোয়াড় এই প্রতিযোগিতা থেকে উঠে এসেছে, যারা পরবর্তীতে রাজ্য ও দেশের হয়ে তিরন্দাজি, রাগবি এবং ফুটবল খেলেছে।

সন্ত্রাসের দিক থেকে সরে এসে জীবনকে স্বার্থক করার উদ্দেশ্যে বেশীর ভাগ আদিবাসী যুবরাই এই খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক কার্যকলাপে যুক্ত হয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতি বছর এই উৎসবে উপস্থিত থাকেন এবং জঙ্গলমহল কাপের পুরস্কার বিতরণ করেন।

 

হিমল-তেরাই-ডুয়ার্স ক্রীড়া উৎসব

রাজ্য সরকারের আয়োজিত আরেকটি উৎসব যা গত কয়েক বছর ধরে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে, তা হল, হিমল-তেরাই-ডুয়ার্স ক্রীড়া উৎসব। প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে এই উৎসব আয়োজন করা হয় উত্তর বঙ্গের কয়েকটি জেলা মিলিয়ে। জেলাগুলি হল, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং এবং কালিম্পং। এই উৎসবের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেও প্রতি বছর মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকেন।

এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা হল, রাজ্য ক্রীড়া দপ্তর, শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট এবং দার্জিলিং পুলিশ। জঙ্গলমহল উৎসবের মত এই উৎসবেও খেলাধুলার প্রতিযোগিতার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

প্রতি বছরের এই উৎসব ঐ অঞ্চলের স্থানীয় যুবদের মধ্যে মিলিত হওয়ার এক বাতাবরন তৈরী করেছে। এখানে তারা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। এর ফলে ঐ অঞ্চলে ফিরেছে শান্তি। কোনও দুশ্চিন্তা ঐ অঞ্চলের মানুষকে আর প্রভাবিত করেনা।

সুতরাং বলা যেতে পারে, গত সাত বছরে তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত রাজ্য সরকার খেলাধুলার মাধ্যমে অশান্ত অঞ্চলগুলিতেও শান্তি ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। সারা রাজ্যের মানুষ আজ খুশী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলার মানুষকে মাত্র সাত বছর সেই সকল পরিষেবা ও পরিকাঠামো দিতে সক্ষন হয়েছেন যা বাম সরকার দীর্ঘ ৩৪ বছরে দেওয়ার ইচ্ছে পর্যন্ত দেখায়নি।