ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৯
রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে বাম জমানার তুলনায় রোগী বাড়ল প্রায় ১০ কোটি
বাম জমানার থেকে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে রোগী বাড়ল প্রায় ১০ কোটি। ২০১১-১২ অর্থবর্ষে সিপিএম জমানার বিদায়ের বছরে রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরে মোট রোগীর সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে তিন কোটি (৩.৪৮ কোটি)। ছ’বছর বাদে, ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে সেই রোগীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২.৩২ কোটি। অঙ্কের হিসেবে এই ছ’বছরে শুধু আউটডোরে রোগী বেড়েছে প্রায় ন’ কোটি (৮.৮৪ কোটি)।
এছাড়া, সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজের ইন্ডোরের রোগীদের হিসেব বলছে, ২০১১-১২ অর্থবর্ষে রাজ্যের সমস্ত সরকারি ক্ষেত্রে ইন্ডোরে রোগীর সংখ্যা ছিল ৭ লক্ষ ৬০ হাজার। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ লক্ষ ১৪ হাজারে। রোগী বেড়েছে ৫৭ লক্ষ ৩৪ হাজার। সেদিক থেকে ২০১১-১২ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে আউটডোর-ইন্ডোর মিলিয়ে মোট রোগী বেড়েছে প্রায় সাড়ে ন’ কোটি (৯.৪১ কোটি)।
ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত পাওয়া হিসেব অনুযায়ী, চলতি অর্থবর্ষের ন’মাসে রাজ্যের সরকারি আউটডোরগুলিতে রোগীর সংখ্যা ১০ কোটি ছুঁইছুঁই (৯.৯৪ কোটি)। অর্থ দপ্তর শেষ হতে আর মাস দেড়েক বাকি। সেই সময়ে তা বেড়ে হতে পারে ১৩.২৩ কোটি। অন্যদিকে চলতি অর্থবর্ষের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত ন’মাসে সরকারি হাসপাতালগুলির ইন্ডোরে রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০ লক্ষ ৭ হাজার। অর্থবর্ষের শেষে তা বেড়ে হতে পারে ৬৬ লক্ষ ৭৬ হাজার। বাম জমানায় ইন্ডোরে রোগী ভর্তির তুলনায় বর্তমানে সাড়ে আটগুণেরও বেশী এগিয়ে রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্য দপ্তর। এই অর্থবর্ষের শেষের প্রস্তাবিত হিসেব ধরলে রোগীর সংখ্যা বাম জমানার তুলনায় বাড়বে ১০ কোটি ৩৪ লক্ষ।
রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা বলেন, আউটডোরে রোগী বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হল বিনামূল্যের চিকিৎসা। অন্যদিকে ইন্ডোরে রোগী ভর্তির হার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হল উন্নততর সরকারি পরিষেবা। কারণ, আউটডোরে দেখানোর তুলনায় ইন্ডোরে ভর্তির বিষয়ে মানুষ অনেক বেশী চিন্তাভাবনা করেন। তাই ইন্ডোরের হিসেব বলছে, বাংলার সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার উপর ভরসা বাড়ছে মানুষের।
দপ্তরের শীর্ষ মহলের একাংশের অভিমত, এর অনেকগুলি কারণ আছে। এক, একাধিক সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সাধারণ চিকিৎসার পাশাপাশি ল্যাপারোস্কপি, পেসমেকার ও সুপার স্পেশালিটি চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছেন। দুই, নিকু, পিকু, এসএনসিইউ, এসএনএসইউ, আইটিইউ, আইসিইউ বেড ও ইউনিটের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া। তিন, বাইরে দামি ও খরচ সাপেক্ষ পরীক্ষা নিখরচায় হয়ে যাওয়া। চার, সরকারি স্টোর থেকে অনেক বেশী সংখ্যায় বিনা পয়সার দামি ওষুধ ও যন্ত্রপাতি সরবরাহ। পাঁচ, বেসরকারি হাসপাতালের অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি (উদাহরণস্বরূপ ক্যান্সারের চিকিৎসায় লিনিয়ার অ্যাক্সিলারেটর, রেডিওলজিতে ডিজিট্যাল এক্স-রে) সরকারি ক্ষেত্রেও চলে আসা। ছয়, অসাধারণ দক্ষ এবং সহানুভূতিসম্পন্ন চিকিৎসকদের সংখ্যা এখনও সরকারি ক্ষেত্রে অনেক বেশী।
সৌজন্যেঃ বর্তমান