সাম্প্রতিক খবর

অগাস্ট ৯, ২০১৮

অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষের উন্নয়নে দায়বদ্ধ পশ্চিমবঙ্গ সরকার

অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষের উন্নয়নে দায়বদ্ধ পশ্চিমবঙ্গ সরকার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঐকান্তিক সহযোগিতা ও প্রচেষ্টায় রাজ্য সরকার অনগ্রসর শ্রেণীর উন্নয়নে দায়বদ্ধ। গত সাত বছরে এই উদ্দেশ্যে সরকার গ্রহন করেছে একগুচ্ছ প্রকল্প।

আদিবাসী দিবসে দেখে নেওয়া যাক, রাজ্য সরকার কি কি প্রকল্প নিয়েছে অনগ্রসর শ্রেণীর উন্নয়নে:

জাতি/উপজাতি শংসাপত্র

  • গত সাত বছরে অনগ্রসর শ্রেণী উন্নয়ন দপ্তর পরিষেবাগুলিকে করেছে অনলাইন। এর ফলে পরিষেবা পাওয়া হয়েছে সহজ, দ্রুত, স্বচ্ছতা এবং পৌঁছেছে বেশী মানুষের কাছে।
  • ২০১১ পর্যন্ত বার্ষিক শংসাপত্র দেওয়া হত ২.৫ লক্ষ, যা এখন বেড়ে ৮.৫ লক্ষ হয়েছে।
  • ২০১১-১২ সাল থেকে ২০১৭-১৮ সাল পর্যন্ত মোট ৬৪.৮৩ লক্ষ তপশিলি জাতি ও অনগ্রসর শ্রেণীর শংসাপত্র প্রদান করা হয়েছে। শংসাপত্র পাওয়ার সময়সীমা কমে ৪ সপ্তাহ হয়েছে।
  • ১৯৮০ সাল থেকে প্রদান করা আনুমানিক ৪১.২৪ লক্ষ পুরনো শংসাপত্র স্ক্যান করে সত্যাখান ও সম্পর্ক প্রমানের জন্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে রাখা হয়েছে।

সংরক্ষণ

  • অনগ্রসর শ্রেণীর তালিকায় আর ১০৭টি মুসলমান সম্প্রদায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
  • সব মিলিয়ে ১৭৬ টি সম্প্রদায় এই মুহূর্তে অনগ্রসর শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত (ওবিসি এ-৮১ এবং ওবিসি বি-৯৫), এর মধ্যে ১১০টি সম্প্রদায় গত সাত বছরে অনগ্রসর শ্রেণীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
  • সংরক্ষনহীন আসনের সংখ্যা না কমিয়ে ২০১৩ সালে ১৭% সংরক্ষন দেওয়া হয়েছে অনগ্রসর শ্রেণীকে।
  • সরকারি চাকরিতেও এই ১৭% সংরক্ষনকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা ঋণ ও বৃত্তি

  • দেশের মধ্যে প্রথম এই রাজ্যে তপশিলি জাতির ছাত্রছাত্রীদের দেশের মধ্যে কোথাও পড়ার জন্য ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এবং বিদেশে পড়ার জন্য ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত শিক্ষা ঋণ পেতে পারবেন।
  • গত সাত বছরে ৫৬.০২ লক্ষ তপশিলি জাতি ও ৩২.৫৪ লক্ষ অনগ্রসর শ্রেণীর পড়ুয়াদের বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। ই-গভর্নেন্সের আওতায় অনগ্রসর শ্রেণীর পড়ুয়াদের প্রাক মাধ্যমিক বৃত্তিরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

শিক্ষাশ্রী

  • ২০১৪-১৫ সালে তপশিলি জাতির পঞ্চম শ্রেণী থেকে অষ্টম শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য শিক্ষাশ্রী প্রকল্প চালু করা হয়েছে।
  • ২০১৪-১৫ সাল থেকে ২০১৭-১৮ সাল পর্যন্ত এই প্রকল্পের আওতায় এসেছে ৪৮.৪৬ লক্ষ পড়ুয়া।
  • বৃত্তির অর্থ সরাসরি পড়ুয়াদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে। এই প্রকল্পটিকেও ই-গভর্নেন্সের আওতায় আনা হয়েছে।
  • গত সাত বছরে মাধ্যমিক স্তরে ভাল ফল করার জন্য ৩৫০০ তপশিলি জাতির পড়ুয়াকে ‘আম্বেদকর মেধা পুরস্কার’ ও সঙ্গে ৫০০০ টাকা প্রদান করা হয়েছে।

শিক্ষা ও চাকরির সুযোগ

  • বাইরে থেকে আসা পড়ুয়াদের দাবী মেনে গত সাত বছরে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৩২টি হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে ও আরও ৫টি হোস্টেল তৈরী হচ্ছে।
  • গত সাত বছরে ৫টি অনগ্রসর শ্রেণীর সেন্ট্রাল হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে মাধ্যমিকোত্তর অনগ্রসর শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য।
  • এছাড়া, গত সাত বছরে অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল তপশিলি জাতির ১ম থেকে ১০ম শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য ৩টি আশ্রম হোস্টেল নির্মাণ করা হয়েছে।
  • গত সাত বছরে ৬৫০০০ তপশিলি জাতির ছেলে ও মেয়েকে বিভিন্নরকম কর্মসংস্থানমুখী প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে, যাদের মধ্যে এই মুহূর্তে ৫২০০০ কর্মরত।
  • “এথনিক বিউটি কেয়ার” যা এক অভিনব দক্ষতা প্রশিক্ষন প্রকল্প বিউটি অ্যান্ড পার্সোনাল কেয়ারের দিক থেকে, স্বীকৃত হয়েছে দেশের মধ্যে সব থেকে বড় পরিসরের দক্ষতা প্রশিক্ষন কর্মসূচী হিসেবে। এই কর্মসূচীতে ২২০০০ তপশিলি জাতির মহিলাদের প্রশিক্ষন দেওয়া হয় যাতে তারা বিউটি ও পার্সোনাল কেয়ারকে জিবিকা হিসেবে বেছে নিতে পারেন।
  • অর্থনৈতিক ভাবে দুর্বল অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষদের স্বনির্ভর করতে ঋণ প্রদান ও ভর্তুকির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
  • গড় বার্ষিক কভারেজ যা ২০১১ পর্যন্ত ৩৫০০০ টাকা ছিল, তা বাড়িয়ে ৬০০০০ টাকা করা হয়েছে। মাথা পিছু বিনিয়োগও বাড়ানো হয়েছে।
  • দপ্তর এক বিশেষ নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করেছে যার মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে সংরক্ষিত আসন যা ফাঁকা ছিল, তা পুরন করা হচ্ছে নিয়োগের মাধ্যমে।
  • এই বিশেষ নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম পর্যায়ে (২০১৪-১৬) ৪১৪২ জন তপশিলি জাতির ব্যক্তিকে নিয়োগ করা হয়েছে। দ্বিতীয় পর্যায়ে (২০১৬-এখনও পর্যন্ত) ৬০৯৯টি তপশিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত শূন্য পদ চিহ্নিত করা হয়েছে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে।

উন্নয়ন/সাংস্কৃতিক বোর্ড এবং উপদেষ্টা কমিটি

  • ১০টি নতুন বোর্ড গঠন করা হয়েছে অনগ্রসর শ্রেণীর কল্যান ও উন্নয়নের জন্য। দপ্তরের তহবিল থেকে এখনও পর্যন্ত ৩২০৩টি নতুন গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে।
  • দেশের মধ্যে প্রথম তপশিলি জাতির নিবদ্ধ ও সার্বিক উন্নয়নের জন্য ওয়েস্ট বেঙ্গল শিডিউলড কাস্ট অ্যাডভাইসরি কাউন্সিল গঠন করা হয়েছে।
  • কেরিয়ার পরামর্শ কেন্দ্র নামের এক নতুন প্রকল্প শুরু করা হয়েছে যেখানে কর্মপ্রার্থী ও পড়ুয়াদের কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে সঠিক জীবিকার পথ বাতলে দেওয়া হবে।
  • ২০১৭-১৮ সালে ৩০টি মহকুমার সদর দপ্তরে এই কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্র কমপক্ষে ২৪০০ পড়ুয়াকে কাউন্সেলিং করবে, তার মধ্যে ৪০০জনকে স্বনির্ভর এবং ১২০জনকে কর্মমুখী দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষন দেবে ৬ মাসের মধ্যে। ২০১৮-১৯ সালের মধ্যে আর ৩৭ টি কেন্দ্র খোলা হবে।