সাম্প্রতিক খবর

অগাস্ট ৯, ২০১৮

ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে আজ রাজ্যজুড়ে পালিত হল ‘আদিবাসী দিবস’।

রাষ্ট্রসঙ্ঘ এই দিনটি ‘ইন্টারন্যাশানাল ডে অব ওয়ার্ল্ড ইন্ডিজেনাস পিপল’ হিসেবে পালন করে। আজকের দিনটিকে ‘আদিবাসী দিবস’ হিসেবে পালন করছে রাজ্য সরকার। আজ মুখ্যমন্ত্রী ঝাড়গ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং সূচনা করেন ২৯টি নতুন বাসের।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত সাত বছর ধরে রাজ্যের পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের মানুষের উন্নয়নের স্বার্থে অগণিত পদক্ষেপ ও উদ্যোগ নিয়েছেন।

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের কিছু অংশ:

  • আজ ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ৭৬তম পূর্তি। আজকের দিনে মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন, “করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে, ইংরেজ ভারত ছাড়ো”। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু বলেছিলেন, “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব।” বীর শহীদদের আমার প্রণাম, সালাম জানাই।
  • আজ আদিবাসীদের গৌরব দিবসে আপনাদের সকলকে জয় জহর জানাচ্ছি। সারা বাংলায় আজ আদিবাসী দিবস পালন করছি আমরা।
  • আমরা অনেক ক্যাম্প তৈরী করছি, সেখান থেকে কাস্ট সার্টিফিকেট দেওয়া হবে।
  • আমরা অলচিকিতে বই ও অনেক স্কুল তৈরী করেছি।
  • ঝাড়গ্রাম জেলা নতুন জেলা, আমরা তৈরী করেছি। আমরা ঝাড়গ্রামে নতুন স্টেডিয়াম তৈরী করেছি।
  • ঝাড়গ্রামে মাদার চাইল্ড হাব আমরা তৈরী করেছি, মাল্টি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল আমরা তৈরী করেছি। জঙ্গলকন্যা সেতু আমরা তৈরী করেছি।
  • ঝাড়গ্রাম আজ পেল নতুন বিশ্ববিদ্যালয়। জঙ্গলমহল, ঝাড়গ্রামের ছেলেমেয়েরা এখানেই পড়ার সুযোগ পাবে। আরও অলচিকি স্কুল আমরা তৈরী করে দেব। ২০০ নতুন শিক্ষক নেওয়া হবে এই স্কুলগুলির জন্য।
  • কিছু লোক আছে কখনও আদিবাসীর সঙ্গে মাহাতোর ঝগড়া লাগায়, কখনও মাহাতোর সঙ্গে আদিবাসীর ঝগড়া লাগায়। কখনও হিন্দুর সাথে মুসলমানের ঝগড়া লাগায়।
  • এই জঙ্গলমহলে একসময় কেউ বাড়ি থেকে বেরোতে পারত না। আজ সেখানে শান্তি ফিরে এসেছে। কত ছেলেমেয়ে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার ডব্লুবিসিএস হচ্ছে, কত ছেলেমেয়ের চাকরি হয়েছে, খেলাধুলা করতে পারছে।
  • তপশিলি জাতি, উপজাতি ছেলেমেয়েরা শিক্ষাশ্রী স্কলারশিপ পাচ্ছে। তাদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দিয়ে দেওয়া হয়।
  • অলচিকিতেও আমরা ডব্লুবিসিএস পরীক্ষা নিচ্ছি। আদিবাসী ও তপশিলি ছেলেমেয়েদের দেশে উচ্চ শিক্ষার জন্য ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এবং বিদেশে পড়লে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সরকার সফট লোন দেয়।
  • আগে শুধু স্কুলে ছিল, এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত কন্যাশ্রী আছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে কন্যাশ্রীর মেয়েরা আর্টস পড়লে ২০০০ টাকা ও সায়েন্স পড়লে ২৫০০ টাকা স্কলারশিপ পাবে।
  • যে কোনো গরীব পরিবারের মেয়ের বিয়েতে ২৫০০০ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে রুপশ্রী প্রকল্পে।
  • আমি পুলিশ ও আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছি ২ টাকা কিলো চাল যেন মানুষ পায়। যে না দেবে, তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিন।মানুষ যেন সব সুযোগ ঠিকমতো পায়।
  • আদিবাসীদের জন্য আলাদা দপ্তর তৈরী করেছি আমরা।
  • একটা পার্টি এসে বলছে এসে বলছে ভোটটা আমায় দাও। টাকা দিয়ে একবার ভোট পাওয়া যায়। ভোট পেয়ে তো তুমি পিটটান দেবে, ৩৬৫ দিন তো তোমায় পাওয়া যাবে না। কিন্তু মা, মাটি, মানুষের সরকার সবসময় মানুষের পাশে আছে।
  • বেলপাহাড়ির কয়েকটা জায়গায় জিতে কিছু অঞ্চলে কেউ কেউ ঝাড়খণ্ড থেকে মাওবাদী নিয়ে আসছে। ওরা চাইছে ঝাড়গ্রাম আবার রক্তাক্ত হয়ে যাক।
  • আমার ওপর যদি বিশ্বাস থাকে, আমি আপনাদের বলব, আমাদের ছাড়া আর কাউকে বিশ্বাস করবেন না। আমি যতদিন আছি, আমি মানুষের বিরুদ্ধে কোনও কাজ কাউকে করতে দেব না। কারণ, মানুষই আমার সব। আপনারাই আমার সবচেয়ে বড় পরিবার।
  • আদিবাসীদের জমি যাতে কেউ না নিতে পারে, আমরা আইন তৈরী করেছি।
    আমি হিন্দু মুসলমানে, শিখ-খ্রিস্টানে, আদিবাসি-মাহাতোতে ভাগাভাগি করি না। আমি খুন-অশান্তি-দাঙ্গা চাই না। আমি চাই আমার সব আদিবাসী, সংখ্যালঘু, গরীব ভাইবোনেরা শান্তিতে থাকুক, একদিন পৃথিবী জয় করুক।
  • নেতাই, নন্দীগ্রাম, বেলপাহাড়ির কথা মনে আছে। আজ জঙ্গলমহল ভালো আছে। আপনারা ভালো থাকলে তবেই তো আমি ভালো থাকবো।
  • একতা মজবুত হোক। সাম্প্রদায়িক শক্তিকে কোনও জায়গা নয়, বিভেদকে কোনও জায়গা নয়, জাতিভেদকে কোনও জায়গা নয়, সঙ্কীর্ণতাকে কোনও জায়গা নয়, কুৎসাকে কোনও জায়গা নয়, ঘৃণাকে কোনও জায়গা নয়, অপপ্রচারকে কোনও জায়গা নয়, চক্রান্তকে কোনও জায়গা নয়, ষড়যন্ত্রকে কোনও জায়গা নয়। ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।
  • আমরা রঘুনাথ মুর্মুর নামে স্কুল তৈরী করেছি। কত একলব্য স্কুল আমরা তৈরী করেছি। একলব্য স্কুল থেকে আমার সব ছেলেমেয়েরা – একজন ছাড়া – প্রথম বিভাগে পাস করেছে। আমি চাই আমার আদিবাসী ঘরের ভাইবোনেরা ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বড় লীডার তৈরী হোক। সমাজ সংস্কারক হোক।
  • আমরা অনেক কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম করেছি। আদিবাসী ছেলেমেয়েরা সেগুলিতে অংশগ্রহণ করছে।
  • একটা লোকের কোনও ভুল হলে, আমাদের বলবেন, আমরা সংশোধন করে দেব। কিন্তু, ভুল বুঝে কখনও দূরে সরে থাকবেন না। আমরা মানুষের কাজ করি।
    সারা দেশে লিঞ্চিং-এর নাম করে কীভাবে দলিতদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। এনকাউন্টারের নাম করে কত সাধারণ মানুষকে উত্তরপ্রদেশে খুন করা হচ্ছে। আমাদের এখানে এসব হয়না। এখানে প্রত্যকের শান্তিতে সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার আছে।
  • প্রায় ৩০ লক্ষ কৃষক, যাদের জমি বৃষ্টিতে ডুবে গিয়েছিল, তাদের আমরা সাহায্য করেছি। প্রকৃতি আমাদের হাতে নেই। কিন্তু, এর ফলে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমরা সাহায্য করব।
  • সিপিএমের করা ৪৮০০০ কোটি টাকা দেনা শোধ করতে হয় আমাদের। তাও আমরা সব প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা মাথা নোট করি না।