অগাস্ট ২৯, ২০১৮
২০১৭ অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপঃ ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তরের মুকুটে নতুন পালক

ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তরের এক অনন্য সাফল্য হিসেবে বলা যেতে পারে ২০১৭ অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপে যেকটি খেলা স্বামী বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে আয়োজিত হয়েছিল, সেগুলিকে সর্বতভাবে সাফল্যমন্ডিত করে তোলা।
১১টি ম্যাচ- ফাইনাল, দুটি সেমিফাইনাল, একটি কোয়ার্টার ফাইনাল, একটি দ্বিতীয় পর্যায়ের খেলা ও ছটি প্রথম রাউন্ডের খেলা অনুষ্ঠিত হয় স্বামী বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে। সবকটি ম্যাচই সাফল্য অর্জন করে। প্রথম খেলা অনুষ্ঠিত হয় ৮ই অক্টোবর ২০১৭ সালে এবং ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয় ২৮শে অক্টোবর ২০১৭।
এইরকম বিশ্বমানের প্রতিযোগিতা আয়োজন করতে রাজ্য সরকার স্বামী বিবেকানন্দ যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের বাইরে ও ভেতরে সম্পূর্ণ সংস্কার করে।
প্রসঙ্গত বলা যায়, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যিনি একজন ক্রীড়াপ্রেমী এই বিশ্বকাপ আয়োজনের পেছনে মূল উদ্যোক্তার ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি এই বিশ্বমানের প্রতিযোগিতার আয়োজনে এবং কলকাতা আয়োজক শহর হওয়ার কারণে সমগ্র কোলকাতার উন্নয়নে মূল ভূমিকা পালন করেন। যার ফলে, কলকাতা সেরা আয়োজক শহর হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।
মুখ্যমন্ত্রী ২৩শে আগস্ট ২০১৭ আয়োজক শহর কোলকাতার লোগো প্রকাশ করেন এবং বিশ্বকাপের থীম সঙ্গীতও তিনিই রচনা করেন।
অফলাইন এবং অনলাইনে যেভাবে এই প্রতিযোগিতার প্রচার করা হয়েছে, তার ভূয়সী প্রশংসা করেছে ফিফা। ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ দপ্তর খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই বিশ্বকাপের জন্য একটি ওয়েবসাইট খোলা হয়, এই সাইটে স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য সাইটে ছিল। একটি ইউটিউব চ্যানেলে বিশ্বকাপের মিউসিক ভিডিও সম্প্রচার করা হয়।
বিশ্ববাংলায়বিশ্বকাপ এই হ্যাশট্যাগটি যা রাজ্য সরকার এই প্রতিযোগিতাকে মাথায় রেখে তৈরী করেছিল, সেটি টুইটারে, ফেসবুকে ও অন্যান্য সামাজিক অনলাইন মাধ্যমে বিপুলভাবে ব্যবহৃত হয়। সমস্ত অনলাইন এবং অফলাইন বিজ্ঞাপন ফিফার লোগোর সঙ্গে বিশ্ব বাংলায় বিশ্বকাপ কথাটি ট্যাগলাইন হিসেবে ব্যবহার করে। সারা শহরজুড়ে ছিল টিজার যেখানে ট্যাগলাইন ছিল ‘এবার খেলা, জমবে বাংলা’।
বিশ্বকাপের লোগো এবং ছবি সরকারি বাসে আঁকা হয়।
এক অন্য আঙ্গিকে দেখা যাক এই বিশ্বকাপ ফুটবলকে। বিশ্বকাপ ফুটবলকে কেন্দ্র করে রাজ্য সরকারের নির্মিত হাজার হাজার জয়ী ফুটবল বিতরণ করা হয় ক্লাব ও দুর্গা পুজো কমিটিগুলোকে। এই ফুটবলগুলি তৈরী করে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ও বস্ত্র দপ্তরের অধীনস্থ উদ্বাস্তু হস্তশিল্প বিভাগ। সমাজের নিচুস্তরের মানুষকে স্বনির্ভর করে তুলতে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের এই উদ্যোগটিও খুব গুরুত্বপূর্ণ।
বিশ্বকাপকে সফল করে তুলতে বিভিন্ন দপ্তর ক্রীড়া দপ্তরকে সহায়তা করেছে।
শিক্ষা দপ্তর প্রতিটা ম্যাচে ৫০০০ পড়ুয়াকে বিনমূল্যে খেলা দেখানোর ব্যবস্থা করে। বিদেশী দর্শকদের সহায়তার জন্য পর্যটন দপ্তর ২০০ পড়ুয়াকে নিযুক্ত করে গাইড হিসেবে। পরিবহণ দপ্তর বিশেষ বাসের ব্যবস্থা করে এই স্টেডিয়ামে আসা এবং স্টেডিয়াম থেকে যাওয়ার জন্য। আপতকালীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার আয়োজন রাখা হয়। নিরাপদ পানীয় জলের পাউচের ব্যবস্থা করা হয় স্টেডিয়ামের মধ্যে। বিশ্বমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও করা হয়।
সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের আয়োজন হয় সাফল্যমন্ডিত। ফিফার শীর্ষকর্তা স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন ফাইনালে, তিনি বাংলার এই প্রতিযোগিতা আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানান।