নভেম্বর ১২, ২০১৯
হিমোফিলিয়া নিয়ন্ত্রণে রাজ্যে শুরু হয়েছে নয়া কর্মসূচী

১লা নভেম্বর পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়েছে নতুন স্বাস্থ্য কর্মসূচী—‘হিমোফিলিয়া কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’। রক্তের দুরারোগ্য অসুখ হিমোফিলিয়া চিহ্নিতকরণ এবং বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য শুরু করা হয়েছে এই কর্মসূচী। জেলার ৩৪টি সরকারি হাসপাতালে শুরু হয়েছে এটি। আওতায় থাকছে বাছাই কিছু মেডিক্যাল কলেজ, জেলা ও মহকুমা হাসপাতাল এবং কয়েকটি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল।
প্রসঙ্গত, রক্তের এই অসুখে শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়াটিই ব্যাহত হয়। শরীরের বিভিন্ন স্থান থেকে রক্তপাত হতে থাকে। সে কারণে হাসপাতালে পাঠিয়ে সেই রোগীদের ফ্যাক্টর ৮, ফ্যাক্টর ৯ ইত্যাদি উপাদান দিতে হয়।
যেসব হাসপাতালে ইতিমধ্যে থ্যালাসেমিয়া কন্ট্রোল ইউনিট বা টিসিইউ রয়েছে, সেখানেই শুরু হয়েছে এই প্রকল্প। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এই কর্মসূচী মোতাবেক রাজ্যের সমস্ত থ্যালাসেমিয়া আউটডোরের নামও পাল্টে যাচ্ছে। নাম হচ্ছে ‘থ্যালাসেমিয়া ও হিমোফিলিয়া আউটডোর’। এক-একটি সরকারি হাসপাতালে এই কর্মসূচী রূপায়ণের জন্য একজন করে মেডিক্যাল অফিসার, ল্যাব টেকনিশিয়ান, কাউন্সেলর, স্টাফ নার্স ও ডিইও— সবশুদ্ধ পাঁচজন কর্মী থাকবেন।
হিমোফিলিয়া চিহ্নিতকরণের জন্য এই ৩৪টি সরকারি হাসপাতালেই আছে সেমি অটো কোয়াগুলোমিটার। কর্মসূচী রূপায়ণের মূল কেন্দ্র হিসেবে বাছা হয়েছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের রক্তের অসুখ চিকিৎসার উৎকর্ষ কেন্দ্র ‘ইন্সটিটিউট অব হেমাটোলজি অ্যান্ড ট্রান্সফিউশন মেডিসিন’ বা আইএইচটিএম।
স্বাস্থ্যভবনের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ সেল (এনসিডি) গোটা বিষয়টি রাজ্যজুড়ে রূপায়ণের কাজ দেখভাল করবে। কর্মসূচিটি বাস্তবায়িত হলে জেলায় জেলায় রক্তের এই অসুখে ভুগতে থাকা রোগীদের ‘ফ্যাক্টর আট ও নয়’ দেওয়ার পরিকাঠামো থাকবে। প্রকল্পে বছরে একবার রোগীদের মেডিক্যাল কলেজের নোডাল সেন্টারে চেক আপ-এর জন্য যেতে হবে। তা বাদ দিলে অধিকাংশ চিকিৎসাই জেলাতে হবে। বছরে একবার এইচআইভি সহ কয়েকটি পরীক্ষা করানো হবে। এছাড়া আক্রান্ত অংশের এক্স-রেও করানো হবে বছরে একবার।
হিমোফিলিয়া সংক্রান্ত কোনও নির্ভরযোগ্য সরকারি তথ্য, পরিসংখ্যান এখনও পর্যন্ত রাজ্যের কাছে নেই। এই কর্মসূচী সেদিক থেকে অত্যন্ত উপকারী হতে চলেছে। শুধু তাই নয়, কর্মসূচীটি চালু হলে দূর দূরান্তের মানুষজনেরও কাজে লাগবে। জেলায় জেলায় থ্যালাসেমিয়া কন্ট্রোল ইউনিটগুলিতে রোগপরীক্ষা হবে। রোগ ধরা পড়লে এবং জরুরি মনে হলে তখন চিকিৎসার জন্য মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হবে।
মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মসূচী রূপায়ণের জন্য চিকিৎসক, ল্যাব টেকনিশিয়ান, কাউন্সেলর প্রভৃতি স্বাস্থ্যকর্মীদের দু’দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।
সৌজন্যেঃ বর্তমান