সাম্প্রতিক খবর

অগাস্ট ৩১, ২০১৯

বাংলায় পাশ হল গণপিটুনি প্রতিরোধ আইন

বাংলায় পাশ হল গণপিটুনি প্রতিরোধ আইন

ধর্ম, জাত বা খাদ্যাভ্যাসের দোহাই দিয়ে দেশের নানা প্রান্তে ইদানীং বেড়েছে গণপ্রহারে মৃত্যুর ঘটনা। তার প্রেক্ষিতেই ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট সব রাজ্য সরকারকে এই বিষয়ে আইন প্রণয়নের নির্দেশ দেয়। এবার সর্বসম্মতভাবে রাজ্য বিধানসভায় পেশ হল ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল (প্রিভেনশন অব লিন্চিং) বিল, ২০১৯ ’অর্থাৎ গণপ্রহার প্রতিরোধ বিল৷

শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই বিল পেশের পর বাংলাই দেশের পথপ্রদর্শক হবে৷ এরপর থেকে গণপিটুনির জন্য যদি কারও মৃত্যু হয় তাহলে দোষীদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এমনকী মৃত্যুদণ্ডের সাজাও হতে পারে। এই বিল অনুযায়ী গণপ্রহারে আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসার সব দায়িত্ব সরকারের৷ এমনকি ক্ষতিপূরণও পাবেন তিনি৷”

তিনি আরও বলেন, “দেশে এখন শুধু একটাই কথা – গণপিটুনি। আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। কেন এক দল মানুষ অন্য মানুষকে খুন করবে? এটা চলতে পারে না, এসব বরদাস্ত করা হবে না। গণপিটুনি সভ্যতা ও মানবিকতার অবক্ষয়। সবাইকে দেশের ঐতিহ্য মেনে চলতে হবে। এটা দুর্যোধন –দুঃশাসনের রাজত্ব নয়। ভারতের ঐতিহ্য মেনেই ভারত চলবে।“

‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল (প্রিভেনশন অফ লিঞ্চিং) বিল, ২০১৯’ বলা হয়েছে, ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, জন্মস্থান, ভাষা, খাদ্যাভ্যাস, যৌনরুচি, রাজনৈতিক বিশ্বাস, জাতিসত্তা বা অন্য কোনও কারণে দুই বা তার চেয়ে বেশীসংখ্যক ব্যক্তি কারও প্রতি হিংসাত্মক আচরণ করলে বা হিংসায় প্ররোচনা দিলে তাকে ‘গণপ্রহার’ বলে গণ্য করা হবে। বিলে বলা হয়েছে, গণপ্রহারে আক্রান্তকে যে কোনও সরকারি হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনা খরচে চিকিৎসা পরিষেবা পাবে। সাক্ষীরা চাইলে তাঁদের পরিচয় গোপন রাখার সংস্থানও বিলে থাকছে।

পুলিশের ভূমিকাঃ

গণপ্রহারের প্রবণতা রুখতে রাজ্য পুলিশের আইজি পদমর্যাদার এক জন অফিসারকে নোডাল অফিসার হিসাবে নিয়োগ করবেন রাজ্য পুলিশের ডিজি।

কলকাতায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার পদমর্যাদার এক জন নোডাল অফিসার হবেন।

এই ধরনের ঘটনার আঁচ পেতে প্রতি মাসে এক দিন গোয়েন্দা বিভাগের সঙ্গে নোডাল অফিসারেরা বৈঠক করবেন।

এবিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দেশ জুড়ে এই গণপ্রহারের ঘটনা ঘটেছে, তাই আমরা এই বিল এনেছি। বাংলা সবার আগে সব বিষয়ে মতামত দেয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সময়োপযোগী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ তারই দৃষ্টান্ত।“