সাম্প্রতিক খবর

মার্চ ১৩, ২০১৯

বিজেপি ভীত, সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

বিজেপি ভীত, সংবাদমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছেঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ কালীঘাটের বাসভবনে লোকসভা নির্বাচনের তৃণমূল প্রার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি।

সাংবাদিক বৈঠকের কিছু অংশঃ

বাংলার সব বুথকে অতি স্পর্শকাতর ঘোষণা করার দাবি প্রসঙ্গে

আমি সত্যিই বিস্মিত। এরকম দাবির কি কারণ? এটা বাংলার মানুষের অপমান। ওরা কেন বাংলাকে এত ভয় পাচ্ছে?

কেরালার আইন শৃঙ্খলা নিয়ে বিজেপির বিবৃতি আমি শুনেছি। কিন্তু ওখানে মাত্র এক দফায় নির্বাচন হচ্ছে।

ত্রিপুরার পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৯৮% আসনে বিনা লড়াইয়ে জিতেছে বিজেপি। এখন ওরা সাধু সাজছে? তখন মনে ছিল না? ওরা বাংলা সম্বন্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যে কথা বলছে।

বাংলার পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ক’জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে অধিকাংশই তৃণমূল কর্মী। বিজেপি আমাদের কর্মীদের মেরে ফেলছে।

বাংলা শান্তিপূর্ণ জায়গা। এখানে সব ধর্মের উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালন করা হয়।

ওরা বাংলাকে আক্রমণ করছে কারণ আমরা মোদী, অমিত শাহর বিরুদ্ধে লড়াই করেছি।

গঙ্গাসাগর মেলায় ৪০ লক্ষেরও বেশী মানুষ আসেন। বাংলায় কোনরকম অশান্তি হয়নি। দুর্গা পুজো শান্তিপূর্ণভাবে হয়।

গত বছর উপ নির্বাচনে আমরা ৫০,০০০ ভোটে জিতেছি। ভোটটা পরিচালনা করেছিল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন।

সব কিছুর একটা সীমা থাকা দরকার। বিজেপি, সিআইএসএফ আর সিআরপিএফ আনছে দেশ বাঁচাতে নয়, ওদের নেতাদের আড়াল করার জন্য।

ওরা এখন সংবাদমাধ্যমকেও নিয়ন্ত্রণ করতে চায়, এটা লজ্জার বিষয়।

ওরা নিজেরদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। ওরা তৃণমূলকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।

ওরা কি ভাবছে বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করবে? আমরা গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোয় বিশ্বাস করি। ওদের কিসের এত দুঃসাহস?

দেশে এখন কোন গণতন্ত্র নেই – সাংবাদমাধ্যমের কোন স্বাধীনতা নেই। সাংবাদিক এন রাম রাফাল নিয়ে খবর করেছিলেন বলে ওনাকে টার্গেট করা হয়েছে।এখন বাংলার সংবাদমাধ্যমকে ভয় দেখাচ্ছে? কত সাহস!

বাংলা নবজাগরণের ভুমি। এটা শিক্ষা, সংস্কৃতি, একতার ভুমি। এখানে সব ধর্ম, জাতি, বর্ণের মানুষ একসাথে থাকেন।

আমরা নির্বাচন কমিশনকে শ্রদ্ধা করি। শুধু বিজেপি নয়, সব রাজনৈতিক দলের দাবী কমিশনকে শুনতে হবে।

উত্তরপ্রদেশে কি হচ্ছে? গো-রক্ষার নাম কত মানুষ খুন হয়েছে? চোরের মায়ের বড় গলা!

বিজেপি আমাকে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়? ওরা এতটাই ভয় পেয়েছে?

এরপর ওরা নির্বাচন কমিশনকে বলবে, যাতে সব ভোট ওদের হয়। ওরা হাস্যস্পদ হয়ে গেছে। ওদের এক্সপায়ারি ডেট শেষ হয়ে গেছে।

আমি বিজেপি-কে বলব – আপনারা বাড়ি গিয়ে শুয়ে পড়ুন, রেস্ট নিন। সংবাদমাধ্যমকে কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না।

ওরা সব প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করতে চায়। দলিত, আদিবাসী, সংখ্যালঘু, মহিলা, এমনকি হিন্দুদের ওপরও অনেক অত্যাচার করছে।

এনআরসি র নামে ওরা ২২ লক্ষ হিন্দু ভোটারকে বাদ দিয়ে দিয়েছে। এই নাগরিক বিলের পেছনে উদ্দেশ্যটা কি?

বিজেপির কিছু ভবঘুরে নেতারা মিথ্যে কথা বলে, টাকার দেমাক দেখায় আর এজেন্সিকে ভয় দেখায়। ওরা নিজেরদের দলকেই বেঁচে দিয়েছে।

আমার মনে হয় প্রেস ক্লাবের সকল সদস্যদের এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো উচিত।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ফেক নিউজ প্রসঙ্গে:

৯৯ শতাংশ ফেক নিউজ বিজেপি ছড়ায়। মিডিয়ার মানুষরা সোশ্যাল মিডিয়ায় আছে। বিজেপি এই খাতে বিপুল টাকা খরচ করছে।

নির্বাচন কমিশনের বিজেপির খরচের হিসেব দেখা উচিৎ।

মন্ত্রীদের তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করা উচিৎ না।

বিভিন্ন জায়গায় নরেন্দ্র মোদীর ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর ছবি দিয়েও বিজ্ঞাপন করা হচ্ছে। আজ এর বিরুদ্ধে আমরা অভিযোগ জানিয়েছি।

রাজ্যের পুলিশ অফিসাররা তৃণমূলের অনুগত – বিজেপির এই অভিযোগ প্রসঙ্গে:

আমি সকল পুলিশ আধিকারিককে শ্রদ্ধা করি, সে কেন্দ্রের হোক বা রাজ্যের।

আমি রবি বাবুকে জিজ্ঞেস করতে চাই, আস্থানা কার অফিসার?

ঘোষিত এমার্জেন্সি অনেক ভালো অঘোষিত সুপার এমার্জেন্সির থেকে।

তৃণমূলের লোকসভা প্রার্থীদের প্রসঙ্গে:

আমাদের মহিলা প্রার্থী প্রায় ৪১ শতাংশ। আমরা দেখানোর জন্য প্রার্থী করিনি। সবাই জিতবে।

জনপ্রতিনিধিদের সবসময় জনগণের পক্ষে থাকতে হয়। তৃণমূলের আদর্শ we are of the people, for the people, by the people.

আমরা জনগণের জন্য কাজ করব। সংবিধানকে রক্ষা করতে হবে। সংস্থাগুলিকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিতে হবে। বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্য, শান্তি, শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হবে।

বিএসএনএল কর্মীদের বেতন না পাওয়ার প্রসঙ্গে:

বিএসএনএলের অনেক কর্মী বেতন পাচ্ছেন না। অনেক শিল্প বন্ধ হয়ে গেছে, কর্মীদের তাদের প্রাপ্য মেটানো হয়নি। আমি এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছি।

মহাজোট প্রসঙ্গে:

আমরা ইউনাউটেড ইন্ডিয়া চাই। আমরা চাই বিজেপির পরাজয়, প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে মোদীর বিদায় হবেই। দেশে গণতান্ত্রিক সরকার আসবে।

গত পাঁচ বছরে প্রধানমন্ত্রী একটিও সাংবাদিক সম্মেলন করেননি। এখন তাকে জবাব দিতেই হবে কেন তাঁর দল বলছে নির্বাচনে সংবাদমাধ্যমকে কন্ট্রোল করার জন্য পর্যবেক্ষক চাই।

সংবাদমাধ্যমকে বার্তাঃ

আপনারা কি বিজেপির এই মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করার দাবিকে সমর্থন করেন? আমি আপনাদের নৈতিক সমর্থন করি। নিজেদের মাথা নত করবেন না। বিজেপি খুব ভীত।
চিত্ত যেথা ভয় শুন্য, উচ্চ যেথা শির