মে ১, ২০১৮
রাজ্যের বেকারদের জন্য তৎপর শ্রমদপ্তর

২০১১ সালে বিপুল জনসমর্থনের সাহায্যে তৃণমূল সরকার রাজ্যের দায়িত্বভার গ্রহণ করে। এরপর থেকে রাজ্যের শ্রম দপ্তরের উন্নয়নের জন্য একাধিক কর্মসূচী নিয়েছে রাজ্য সরকার।
সামাজিক সুরক্ষা যোজনাঃ
অসংগঠিত ক্ষেত্রের সকলকে এক ছাতার নীচে এনে তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে নেওয়া হয়েছে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা।
৫ টি ভিন্ন ধরনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে অসংগঠিত ক্ষেত্রের জন্যঃ
i) স্টেট অ্যাসিস্টেড স্কীম অফ প্রভিডেন্ট ফান্ড ফর আনঅরগানাইজড ওয়ার্কার
ii) ওয়েস্ট বেঙ্গল আনঅরগানাইজড সেক্টর ওয়ার্কার্স হেলথ সিকিউরিটি স্কীম
iii) সোশ্যাল সিকিউরিটি স্কীম ফর কন্সট্রাকশান ওয়ার্কার্স
iv) ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার্স সোশ্যাল সিকিউরিটি স্কীম
v) ওয়েস্ট বেঙ্গল বিড়ি ওয়ার্কার্স ওয়েলফেয়ার স্কীম
এই সমস্ত প্রকল্পকে একত্র করে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা ২০১৭ নামকরণ করা হয়। এতে সকলে সমান সুবিধা পাবে। প্রকল্প শুরু হয় ১লা এপ্রিল ২০১৭ থেকে। দেশে এই ধরনের প্রকল্প এই প্রথম যেখানে সারা রাজের অসংগঠিত ক্ষেত্রের সমস্ত কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ড, চিকিৎসার সুবিধা, মৃত্যু বা প্রতিবন্ধকতার সুবিধা একত্রে করা হয়েছে।এছাড়া এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের জন্য নিয়ম ও নির্দেশাবলী অনেক সহজ করা হয়েছে। এখন সকল সুবিধা মহকুমা স্তরেও পাওয়া যাচ্ছে।
একটি বিশেষ সুবিধা, এই প্রকল্পে নথীভুক্ত সমস্ত ব্যাক্তির কন্যা সন্তান যদি স্নাতক বা সমতুল্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে, তারা ভর্তি হতে পারবে যদি তারা অবিবাহিত হয়। পুরোপুরি বা আংশিক প্রতিবন্দীদেড় জন্যও এই প্রথম বীমার ব্যবস্থা করা হয়েছে। চিকিৎসার সুবিধা ১০০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০০০ টাকা করা হয়েছে ও অস্ত্রোপ্রচারের খরচ সর্বাধিক ৬০০০০ টাকা প্রতি বছর ধরা হয়েছে।
সমস্ত সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পকে একত্রিত করা
সমস্ত তালিকাকে একত্রিত করা হয়েছে এবং প্রত্যেকের জন্য একটি সোশ্যাল সিকিউরিটি আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার তৈরী করা হয়েছে। সমস্ত পাওনা মেটানো হয় অনলাইনে।সমস্ত সুবিধাপ্রাপকদের সোশ্যাল সিকিউরিটি আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার সম্বলিত সামাজিক মুক্তি কার্ড প্রদান করা হয়েছে।
এই মুহূর্তে ৯৩.৬ লক্ষ নথিভুক্ত মানুষ আছেন এই প্রকল্পে, যার মধ্যে ৬০.৪৬ লক্ষ মানুষ অসংগঠিত ক্ষেত্রের, ২৯৯৫ লক্ষ বিল্ডিং ও কন্সট্রাকশান ওয়ার্কার, ৩.১৯ লক্ষ মানুষ ট্রান্সপোর্ট ওয়ার্কার। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে জানুয়ারি ২০১৮ পর্যন্ত ১৯৯.১৮ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছে ১.৮৩ লক্ষ উপভোক্তাকে।
শ্রমিক মেলা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় ২০১৪ সাল থেকে শ্রম দপ্তর শ্রমিক মেলার আয়োজন করছে। এই মেলার উদ্দেশ্য অসংগঠিত ক্ষেত্রের সমস্ত কর্মীদের সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের সুযোগ সুবিধার বিষয়ে অবগত করা। এছাড়াও এর মাধ্যমে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ভালো হয়। এই মেলায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজনও হয় প্রতি সন্ধ্যায়।
২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে ৬৭টি মহকুমায় শ্রমিক মেলার আয়োজন করা হয়। এই শ্রমিক মেলায় ৬৬.৪০ কোটি টাকা বিতরণ করা হয় ৬৫৭১০ জন উপভোক্তার মধ্যে।২০১৮-১৯ সালের বাজেটে এই বাবদ ২৮৫ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে।
ফিনান্সিয়াল অ্যাসিস্টেন্স টু দি ওয়ার্কার্স ইন অ্যাফেক্টেড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউনিটস
শিল্পে যেসমস্ত শ্রমিকরা একসময় কাজ করতেন, এখন কাজ হারিয়েছেন, তাদের আর্থিক সাহায্য করা হয়। প্রতি মাসে তাদের ৫০০ টাকা করে দেওয়া হত, যা এখন বাড়িয়ে ১৫০০ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া পুজো বা ঈদে এর অতিরিক্ত ১৫০০ টাকা দেওয়া হয়।
২০১৭-১৮ অর্থবর্ষের ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৪৫৩৫ উপভোক্তা ১৭.২০ কোটি টাকা পেয়েছে, বাকি অর্থবর্ষের জন্য আরও ১৭ কোটি টাকা প্রয়োজন। ২০১৮-১৯ সালের বাজেটে এর জন্য ৩৪.৩৮ কোটি টাকা ধার্য করা হয়েছে।
সমর্থন প্রকল্পঃ
২০১৭ সালের মার্চ মাসে এই প্রকল্প শুরু করা হয়।কেন্দ্রীয় সরকারের অবিবেচক সিদ্ধান্ত নোটবন্দীর ফলে যারা কাজ হারিয়েছেন তাদের এককালীন ৫০০০০ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয় এই প্রকল্পের মাধ্যমে। ২০১৬-১৭ থেকে ২০১৭-১৮ পর্যন্ত এই প্রকল্পে ১৮৫১২ জন উপকৃত হয়েছেন ও এতে ব্যয় হয়েছে ৯২.৫৬ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ সালের বাজেটে এই বাবদ ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।