জুন ৬, ২০১৯
মেঘালয়ের রাজ্যপালের অশালীন মন্ত্যবের প্রতিবাদে ধর্ণা বঙ্গ জননী বাহিনীর

বাঙালি মহিলাদের নিয়ে মেঘালয়ের রাজ্যপালের কুরুচিকর মন্তব্যের প্রতিবাদে আজ ধর্ণায় বসে বঙ্গ জননী বাহিনী। আজ হাজরা মোড়ে এই ধর্ণা শুরু হয় বেলা একটার সময়। এই ধর্ণার মাধ্যমেই শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনির মাধ্যমে পথচলা শুরু হল বঙ্গ জননী বাহিনীর।
প্রসঙ্গত, নৈহাটিতে নির্বাচন পরবর্তী হিংসার কারণে ঘরছাড়া পরিবারদের ধর্ণার মঞ্চ থেকে এই বঙ্গ জননী বাহিনী গঠনের কথা ঘোষণা করেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বঙ্গ জননী বাহিনীর সভানেত্রী কাকলি ঘোষ দস্তিদার।
বিজেপির শাসনকালে ভারতবর্ষ জুড়ে সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা, হানাহানি, মহিলাদের প্রতি অসম্মান চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিজেপির উত্তর প্রদেশের বিধায়ক নিজেই এক অষ্টাদশীকে ধর্ষণ ও খুন করে। বিজেপি ও আরএসএস যে অত্যাচার করছে, নারীদের লাঞ্ছনা করছে, বাংলার সংস্কৃতি ধ্বংস করতে চাইছে, সমাজকে টুকরো করতে চাইছে তার বিরুদ্ধে শাঁখ বাজিয়ে রাজনৈতিক যুদ্ধ ঘোষণা করলেন বাংলার মহিলারা।
সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার বলেন, “বিজেপির শাসনকালে মহিলাদের কোনও সম্মান নেই। ভারতব্যাপী যে সাম্প্রদায়িকতার থাবা আমাদের আলাদা করতে চাইছে, তার প্রতিবাদে আজ আমাদের এই অবস্থান। ২০১৬ সালের ৮ই নভেম্বর মধ্যবিত্ত এবং গরীবদের পকেটের ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটকে কাগজে পরিণত করে দিয়েছে বিজেপি সরকার। মানুষের স্বার্থে দেশের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী কাজ করেননা। তিনি নন রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী। তাদের দলের নেতারা অসংবিধানিক কাজে লিপ্ত। বাংলাকে গুজরাট হতে দেব না।”
রাজ্যের মন্ত্রী ডঃ শশী পাঁজা বলেন, “আমরা লজ্জিত মেঘালয়ের রাজ্যপালের মত মানুষের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের যোগ আছে বলে। কেন্দ্রীয় সরকার মা বোনেদের কথা ভাবেন না। ওনাদের এক সদস্যা জলপাইগুড়িতে শিশু পাচার করতেন। এই বঙ্গদেশ থেকেই সুচনা হোক মহিলাদের প্রতিবাদের। এখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের জন্য সবরকম সুবিধা করে দিয়েছেন। ৪০ শতাংশের বেশী মহিলাকে তিনি লোকসভার প্রার্থী করেছেন। বিজেপি সরকার মানুষের কথা ভাবে না। মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে।”
রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, যে কোনও মহিলার যে কোনও পেশা বেছে নেওয়ার অধিকার আছে। যারা নারীদের পেশাকে কুৎসিত আক্রমণ করে, তাদের পুঁথিগত শিক্ষা থাকলেও আসল শিক্ষা নেই। এটাই বিজেপির আসল চরিত্র। রাজ্যপাল কোনও দলের সদস্য হতে পারেন না। কিন্তু, বারবার তিনি একই রকম কাজ করে চলেছেন।”
সাংসদ প্রতিমা মণ্ডল বলেন, একটি রাজ্যের সবথেকে উঁচু সাংবিধানিক পদে বসে তিনি তার মাকে অপমান করেছেন, নারীকে অপমান করেছেন, ভারত মাতাকেও অবমাননা করেছেন। তার এই সাংবিধানিক পদে থাকার অধিকার আছে কিনা, ভেবে দেখা উচিৎ। এই বাংলা সংস্কৃতির বাংলা, সৃষ্টির বাংলা। আমাদের অক্ষরের জ্ঞ্যান যে বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় দিয়ে হয়, তার মূর্তিও ভাঙ্গা হয়েছে কিছুদিন আগে। সব জায়গায় সাম্প্রদায়িক বিভাজন করার চেষ্টা করছে।”