মে ২৯, ২০১৮
অবস্থান বিক্ষোভের পর পায়ে হেঁটে প্রতিবাদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের

পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মঙ্গলবার মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তির পাদদেশে অবস্থান বিক্ষোভ করে তৃণমূল কংগ্রেস। নেতৃত্বে ছিলেন দলের যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
তার বক্তব্যের কিছু অংশ:
শুরুতেই আমি আমার একটি সিদ্ধান্তের কথা জানাই – আজ সভার সমাপ্তি ঘোষণার পর আমরা পায়ে হেঁটে নিজেদের বাড়ি গিয়ে আমরা প্রতিবাদ জানাবো,আমার অনুরোধ যারা পারবেন শুধু তারাই আমাদের যোগদান করবেন।
পেট্রোল ডিজেলের আকাশছোঁয়া দাম, রোজ বেড়েই চলেছে। কলকাতায় পেট্রোলের দাম ৮২ টাকা ডিজেলের দাম ৭৩ টাকা। এর ফলে সর্বক্ষেত্রে দাম বাড়ার প্রবণতা বেড়েছে।
আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে পেট্রোল ডিজেলের দাম ১০০ হওয়ার আগে নরেন্দ্র মোদির সরকাকে বোল্ড আউট করে সরিয়ে দিতে হবে।
একের পর এক জনবিরোধী সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কংগ্রেস ও সিপিএম নিয়ে কোন কথা বলে না. আজ ওরা গণতন্ত্রের কথা বলছে – ভুতের মুখে রাম নাম। ভারতবর্ষের বাকি সব রাজনৈতিক দলগুলিকে ধমকে, সিবিআই দিয়ে চুপ করিয়ে দিয়েছে।
কিন্তু আমাদের দল বিশুদ্ধ লোহার মত, আমাদের যত আঘাত করবে আমরা তত শক্তিশালী হব. আমাদের ধমকে লাভ নেই. আন্দোলনের পথ কিভাবে বেঁচে নিতে তৃণমূল কংগ্রেস তা জানে।
তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে মানুষের সমর্থন রয়েছে। বিজেপির জনবিরোধী সিদ্ধান্তের জন্য যদি আমাদের প্রাণ দিতে হয় দেব, কিন্তু সাধারণ মানুষের পেটে আঘাত লাগলে আমরা চুপ করে থাকবে না. মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লড়াই কি করে করতে হয় বাংলার মানুষ তা আগামী দিন করে দেখাবে।
আমরা যা বলেছি করে দেখিয়েছি, সব গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে রাজ্য সরকার।
ওরা বলেছিলো ক্ষমতায় এলে আচ্ছে দিন আনবে, ব্যাংকে ১৫ লক্ষ টাকা পৌঁছে দেবে, কিছু হয়নি, কারো চাকরি হয়নি।
মোদির নেতৃত্বে কোন যুবক যুবতীর কর্মসংস্থান হয়েছে, দেখাতে পারলে আমি রাজনীতির আঙিনায় পা রাখবো না।
আমাদের কন্যাশ্রী প্রকল্প নিয়ে অনেকে বড় বড় কথা বলেছিলো। এই প্রকল্প মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে বিশ্বের দরবারে প্রশংসিত হয়েছে। আমাদের পঞ্চায়েত এতো ভালো কাজ করেছে যে বিশ্ব ব্যাংক ৪০০ কোটি টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছে, ভারতের বুকে অন্য কেউ তা করে দেখতে পারেনি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে মেয়েদের ভবিষ্যৎ সুনিস্চিত করা হয়েছে।
বিজেপি তাই দেখে শুরু করলো বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও, যার বাজেট সারা ভারতে ১০০ কোটি। আর আমাদের কন্যাশ্রী প্রকল্পের বাজেট ৫০০০ কোটি টাকাটা। এটাই ওদের আর আমাদের পার্থক্য।
মানুষ কি খাবে, পরবে , কোথায় যাবে তার নিদান দিচ্ছে বিজেপির সরকার। বাংলা টাকা পয়সার অভাবে মাথা নীচু করবে না।
আমি যোগী আদিত্যনাথের হিন্দুত্বে বিশ্বাস করি না, জয় শ্রীরামের ধ্বনি আমরাও দিই। কিন্তু তার মানে অস্ত্র নিয়ে মিছিল নয়।মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিচ্ছে কন্যাশ্রী, আর দিলীবাবুরা দিচ্ছে অস্ত্রশ্রী।
বাংলায় একটা শিশু জন্মালে তাদের গাছ দেওয়া হচ্ছে, আর উত্তরপ্রদেশ মধ্যপ্রদেশে জন্মালে বাচ্চাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে অস্ত্র। এই হচ্ছে ওদের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য।
গত ৪ বছরে প্রায় ২২ বার পেট্রোল ডিজেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। কার স্বার্থে, এর জবাব ওদের দিতে হবে. আমরা ভবিষ্যতে এর বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতেও প্রস্তুত আছি. এর আগেও আমরা মিছিল করে এই মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানিয়েছি। এই মূল্যবৃদ্ধি প্রত্যাহার করা না হলে আগামী দিনে দিল্লির বুকেও এই আন্দোলন হবে।
আগামী ৩১ মে যুব তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ডাকে একইভাবে আমরা অবস্থান বিক্ষোভ করবো। কিন্তু আমরা থেমে থাকবো না. ক্ষুদিরাম বসু আমাদের অনুপ্রেরণা, জ্যোতিবাবু নয়।
সব কিছুতে আধার চাই, ভারতবর্ষে থাকতে গেলে আধার নাও, আর ভারত থেকে পালাতে গেলে ধার নাও, এই হল বিজেপি সরকারের মূল মন্ত্র।
ওদের বিদায় ঘন্টা কর্নাটকে বেজে গেছে, খুঁটিপুজো হয়ে গেছে, বাকিটা ২০১৯ এ হবে। ভোটবাক্স খুললে বিরোধীদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না।