আজ বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্নে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেখানে ওনার বক্তব্যের কিছু অংশ
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, বিশেষ করে অ-বিজেপি দলগুলির সদস্যরা দেশের স্বার্থে বিদেশে গিয়ে সরব হয়েছেন। এই সময়ে, নির্বাচনী প্রচারের নামে প্রধানমন্ত্রী রাজনীতির হোলি খেলায় মেতেছেন-এটা মোটেই শোভা পায় না, সৌজন্যের অভাব
মোদীজি যা বলেছেন, তাতে আমরা শুধু স্তম্ভিতই নই, বরং অত্যন্ত দুঃখিত। যখন আমাদের বিরোধী প্রতিনিধিদল বিদেশে গিয়ে দেশের পক্ষে কড়া অবস্থান নিচ্ছে, তখন দেশের প্রধানমন্ত্রী এমন কথা কীভাবে বলেন? আমরা তো সবসময় দেশের স্বার্থ রক্ষা করব, কারণ এটাই আমাদের মাতৃভূমি। কিন্তু মোদীজির এই সময় এমন মন্তব্য করার কি প্রয়োজন ছিল? আর তাঁর সামনে তাঁর দলের নেতারা বলছেন ‘অপারেশন বেঙ্গল’ হবে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর মতো! আমি চ্যালেঞ্জ করছি-হিম্মত থাকলে আগামীকালই ভোট করুন। আমরা প্রস্তুত, বাংলা প্রস্তুত। সময়টা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। সময়টা মনে রাখবেন
আমাদের প্রতিনিধি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেই দলে আছেন এবং তিনি প্রতিদিন সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছেন। সেই সময়ে মোদীজি, আপনি একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নয়, বরং বিজেপির সভাপতি হিসেবে সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করছেন—যে সরকার আপনাকে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে এবং দেশের স্বার্থে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। আপনি এই সরকারকে দোষারোপ করছেন এবং এই সংকটের মুহূর্তে বিরোধীদের উপর দায় চাপিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছেন! একেবারে ‘জুমলা পার্টি’র মতো আচরণ করছেন আপনি। শুধু মিথ্যার আবর্জনা ছড়াচ্ছেন। আপনাদের কাজকর্ম দেশকে লুট করার মতো আর এমন ভঙ্গিতে কথা বলা একজন দেশের নেতার পক্ষে মানানসই নয়
‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে আমার বিশেষ কোনও মন্তব্য নেই। তবে একটা কথা মনে রাখবেন-প্রত্যেকটা মহিলার নিজের সম্মান রয়েছে। তারা সিঁদুর পরেন তাঁদের স্বামীর কাছ থেকে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদী যেভাবে এই বিষয়ে মন্তব্য করছেন, তা একেবারেই শোভন নয়। আপনি তো দেশের প্রতিটি নারীর স্বামী নন!’
মুর্শিদাবাদ ও মালদার ঘটনার জন্য বিজেপিই দায়ী। দাঙ্গা লাগানোর বিষয়ে বিজেপি ওস্তাদ। প্রয়োজনে আমি প্রমাণসহ সমস্ত তথ্য দেখাতে পারি। বাংলা নির্মম নয়, বাংলায় একটি মানবিক সরকার। আর মোদী সরকার হল একটি ‘জুমলা সরকার’। এতদিন ক্ষমতায় থেকে তিনি দেশকে কী দিয়েছেন?
অপারেশন সিঁদুরের সময় ম্যাডাম কর্নেল কুরেশি বলেছিলেন, আমরা একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশে বাস করি এবং আমরা দেশের ও মাতৃভূমির জন্য লড়াই করব। কিন্তু মোদীজি কী বললেন? তিনি বিভাজন ও শাসনের রাজনীতি করতে চান। তাঁর নীতিগুলো বিভাজক। আলিপুরদুয়ারে তার অনুষ্ঠানের জন্য তিনি কেন অসম থেকে লোক আনলেন? যদি তিনি আলিপুরদুয়ারের মানুষের প্রতি বিশ্বাস রাখতেন, তাহলে অসম থেকে লোক আনতে হত না। আলিপুরদুয়ারে একটি ছোট সভার জন্য তিনি কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি থেকেও লোক আনতে হত না। তার মানে হল, উত্তরবঙ্গের মানুষ দেখিয়েছে যে, তাদের তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) প্রতি বিশ্বাস নেই
এক সময় তিনি নিজেকে চাওয়ালা বলতেন। এরপর সেটা বদলে তিনি হয়ে গেলেন পাহারাদার, আর এখন বলছেন তিনি সিঁদুর বেচবেন। সিঁদুর এমনভাবে বিক্রি করা যায় না। সিঁদুর হল আমাদের মা ও বোনেদেরআত্মসম্মান এবং ইজ্জত
যতদিন আমাদের দল বেঁচে থাকবে, আমরা দেশের কাজ করব। এটাই আমাদের দায়িত্ব।