Rajya Sabha

March 24, 2021

Dola Sen speaks on The Finance Bill, 2021

Dola Sen speaks on The Finance Bill, 2021

FULL TRANSCRIPT

You have given me a chance to speak on the Finance Bill, 2021. I will take the opportunity to speak in Bengal,my mother tongue as permitted by the Honourable Chair.

প্রথমত আমি বলতে চাই, এই ফিন্যান্স বিলের মাধ্যমে এবং এই কেন্দ্রীয় সরকার ক্রমশ যেভাবে জনস্বার্থের বিষয়গুলিতে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ১০০ দিনের কাজ, আইসিডিএস প্রভৃতি ক্ষেত্রে বাজেট বরাদ্দ কম করছে তাতে দেশের আর্থিক পরিস্থিতি ক্রমশ আরো অনেক খারাপ হবে। গরিব আরো গরিব হবেন, অর্থনীতির অবস্থা আরো তলানিতে যাবে। বেকারত্ব বাড়বে। ইতিমধ্যেই বলতে আমার ভালো লাগছে একটা সামান্য ছোট রাজ্য বাংলায় যখন বেকারত্বের হার ১৭.৪১ পারসেন্ট তখন গোটা ভারতবর্ষে বেকারত্বের জাতীয় হার ২৩.৪৮%।

আরো খারাপ হবে পরিস্থিতি। স্বাধীনতার পর গত ৪৫ বছরে এই খারাপ বেকারত্বের হার এর আগে কখনো হয়নি। আমরা কখনো দেখিনি। ২০১৪ সাল থেকে লাগাতার মোদি সরকার রাজ্য সরকার গুলিকে ফিস্কাল ফ্রন্টে বঞ্চিত করে আসছে। রাজ্যগুলির সাথে ফেডারালিজমের বদলে এই মোদি সরকার অনেক বেশি খুশি ও স্বচ্ছন্দ এদের কর্পোরেট বন্ধুদের সাথে ফিস্কাল ফেডারালিজম করতে।

দেখুন এটা কেন বলতে চাইছি। এক, মোদিজির বিজেপি সরকার জিএসটি প্রশ্নে তার অঙ্গীকার পালন করতে ব্যর্থ হয়েছে। কেন্দ্রীয় প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ট্যাক্সেশন পাওয়ার এর ক্ষেত্রে ৭০ পার্সেন্ট দিতেই অস্বীকার করছে। বিজেপির অত্যন্ত আপন ও যোগ্য অর্থমন্ত্রী ২০১৭ সালে কি বলেছেন। আমি কোট করতে চাই, স্যার। “যখন তুমি ফেডারেল ব্যবস্থায় আছো তখন ওই  ফেডারেল ব্যবস্থায় কেন্দ্রকে উদাহরণ তৈরি করে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হবে”। আজ দুর্ভাগ্য ও লজ্জা যে কেন্দ্রের কাছে রাজ্যকে জিএসটির বকেয়া দেওয়ার টাকাই নেই। কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে ধার করে জিএসটি পেমেন্ট করতে বলছে। লজ্জা লজ্জা।

দুই, ট্যাক্স সংগ্রহ বাড়ছে কিন্তু ট্যাক্স শেয়ার কমছে। বাংলা থেকে জিএসটি কালেকশন কেন্দ্র বাড়িয়েছে ২০১৭-১৮ তে ১২ হাজার কোটি টাকা থেকে ২০১৯-২০ তে ২৮ হাজার কোটি টাকা। তারমানে দ্বিগুণেরও বেশি। কিন্তু স্যার দুর্ভাগ্যের বিষয় আমাদের ট্যাক্স ডেভলিউশন কিন্তু এর পরিবর্তে ২০১৭-১৮ তে ৪৯ হাজার কোটি টাকা থেকে ২০১৯-২০ তে ৪৮ হাজার কোটি টাকা হয়ে গেল। কোভিড মহামারীর আগেই এই চিত্র। রাজ্যগুলি নিজেদের ট্যাক্স কলেকশন এও এর ফলে বঞ্চিত হচ্ছে স্যার।

তিন, গরিবদের খরচের পরিপ্রেক্ষিতে এই লাভ কার? সারা পৃথিবীতে তেলের দাম যখন ক্রমশ কমছে তখন ৩২% তেলের রেভিনিউ এই দেশে বাড়ছে। কি লজ্জার কথা বলুন। ২০২০ তে প্রতিলিটার পেট্রোলে এক্সাইজ ডিউটি ১৩ টাকা, প্রতিলিটার ডিজেলে এক্সাইজ ডিউটি ১৬ টাকা বেড়েছে। যখন আন্তর্জাতিক স্তরে দু’দশকে তেলের দাম দুদশকে সবচেয়ে কম এখন। তাহলে প্রশ্ন উঠবেই, টাকাটা গেল কোথায়? প্রতিদিন দাম বাড়ছে।

কেন্দ্র রাজ্যের বকেয়া টাকা দিচ্ছে না। পরিযায়ী শ্রমিক দের বকেয়া টাকা, করোনার আর্থিক সাহায্য, আমফানের এক লক্ষ দু হাজার কোটি টাকা কিছুই দেয়নি। বাংলার বকেয়া চার নম্বর। একটু সংক্ষেপে রেফারেন্স দিতে চাই। এসডিআরএফ ডিউস, আম্ফান সাইক্লোনের ৩২ হাজার ৩১০ কোটি টাকা। আর্থিক ক্ষতি হয়েছিল স্যার এক লক্ষ দু হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্র দিয়েছে ৩ হাজার ৭০০ কোটি টাকা মাত্র। এক লক্ষ এক হাজার কোটি কোটি টাকা বাকি। কেন্দ্রের স্পন্সর নভেম্বর ২০২০’র হিসেব ৩৩ হাজার কোটি টাকার বেশি টাকা রাজ্য পায়। বাচ্চাদের মিড ডে মিলের টাকাও দেয় নি, স্যার। এসসি/এসটি জাতি ও উপজাতির বাচ্চারাও তাদের শিক্ষার জন্য কেন্দ্রের টাকা পাচ্ছে না স্যার। অথচ মোদিজীর বিদেশ ভ্রমণের জন্য উইথ ডিউ রেসপেক্ট হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা এরা খরচ করতে পারে। লজ্জা লজ্জা লজ্জা।

কেন্দ্রের স্পন্সর্ড স্কীমে নভেম্বর ২০২০ হিসেব, ৩৩ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজ্য পায়। মিড ডে মিলের টাকা দেওয়া হয়নি। তপশিলি জাতি উপজাতির ছেলেমেয়েরা শিক্ষার জন্য টাকা পাচ্ছে না কেন্দ্র থেকে। অথচ মোদীজির বিদেশ ভ্রমণের জন্যে with due respect  হাজার হাজার কোটি টাকা এরা খরচ করতে পারে।  লজ্জা, লজ্জা, লজ্জা।

বাংলার একটু হিসেব দিয়ে দি, এই ১ লক্ষ ৮৭ হাজার কোটি টাকার- আমফানে বরাদ্দ ১ লক্ষ ১ হাজার কোটি টাকার বেশি, সর্বশিক্ষা অভিযানে ১৪ হাজার ৫২০ কোটি টাকা, সমগ্র শিক্ষা মিশনে ৯৭০ কোটি টাকা, মিড-ডে মিলে ২৩৩ কোটি টাকা, স্বচ্ছ ভারত মিশনে ২৭৫ কোটি টাকা, এমজিএনআরইজিএ বা ১০০ দিনের কাজ, যা গরিব লোকেরা পায় স্যার, ৬৩১ কোটি টাকা, আম্রুত-এ ২৫৪ কোটি টাকা, এক্সচেঞ্জ অব এনক্লেভস- তাতে ১৮৮ কোটি টাকা, বি আর জি এম ২,৩৩০ কোটি টাকা,  পারফরম্যান্স গ্রান্ট ১০১৭ কোটি টাকা, বেসিক গ্রান্ট ৪৩৮ কোটি টাকা, ড্রেনেজ গুড ম্যানেজমেন্ট ১২৩৮ কোটি টাকা, ইরিগ্যেশন ওয়াটার ওয়ে ৩৮২ কোটি টাকা, ফান্ডস ফর বুলবুল সাইক্লোন ড্যামেজ- ৬৩৩৪ কোটি টাকা, হেলথ অ্যান্ড ফ্যমিলি ওয়েলফেয়ার—৩৫৮ কোটি টাকা, রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনা- ৪০৫ কোটি টাকা সেন্ট্রাল স্পনসর্ড স্কীম- ৩৯৪২ কোটি টাকা, লেস  ডেভোলিউশন ইন ২০১৯-২০২০—১১,০০০ কোটি টাকা, জি এস টি কম্পেন্সেশন আপ্টু অক্টোবার ২০২০, স্যার, ৮৮৯৪ কোটি টাকা, এস ডি আর এফ ডিউস ফ্রম  আমফান সুপার সাইক্লোন- ১ লক্ষ ২ হাজার কোটি টাকা—তার মধ্যে ৩১০ কোটি টাকা দিয়েছে স্যার।

বাংলায় রেলের বঞ্চনা- ১২ টি রেল কারখানা যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুরু করেছিলেন, ২০২১ বাজেটে তা সব শেষ। মা সারদার জন্মস্থান জয়রামবাটি থেকে তারকেশ্বর সংযোগ স্থাপনকারী রেলপথ সম্প্রসারণের জন্য মিলেছে মাত্র ১০০০ টাকা। মাত্র ১০০০ টাকা, স্যার, দেওয়ার দরকার কী স্যার? ১০০০ টাকা নাও দিতে পারতেন? বিজেপি শুধু নির্বাচন-ই বোঝে, মমতা-দির স্বপ্নের প্রকল্প, যখন তিনি রেলমন্ত্রী ছিলেন, ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো করিডোর, গঙ্গার তলা দিয়ে, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে পেয়েছে ৮৫০ কোটি টাকা কিন্তু ২০২০-২১ সালে তা কমে হয়েছে ৭৫০ কোটি টাকা। <Intervention from Chair> এই প্রকল্পটাও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে স্যার গত দু’বছর ধরে, এখন এই ইলেকশনের বছর কিনা, তাই এবার একটু বরাদ্দ বাড়াচ্ছে। লিলুয়া রেলওয়ে ওয়ার্কশপ, কাঁচরাপাড়া রেলওয়ে ওয়ার্কশপ, চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ রেলওয়ে ওয়ার্ক, সব বেসরকারী হাতে স্যার, উঠে যাচ্ছে। সহযোগী শিল্প রেলের, বার্ণ স্ট্যানডার্ড, ব্রেথওয়েট, জেশপ, ডানলপ সব শেষ স্যার।

৪৬ টি রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা, রাষ্ট্রীয় সংস্থা, পাব্লিক এন্টারপ্রাইস, পি এস উ, আপাতত বিলগ্নীকরণ, বেসরকারিকরণ, কর্পোরেটাইসেজন, এসব নামে বেচে দেওয়ার পরিকল্পণা করেছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। যার মুল্য কয়েক লক্ষ হাজার কোটি টাকা। এক কথায় রেল থেকে ভেল, সেল থেকে বিএস এন এল সহ যা কিছু আমাদের, যা কিছু দেশের, যা কিছু সকলের, যা কিছু ন্যাশন্যাল তা বেচে দেওয়া শুরু হয়েছে- যে দেশ বিক্রীর নামান্তর স্যার! দেশ বিক্রী হচ্ছে স্যার।

কিন্তু শুধু সব বেচে দেওয়াই নয় স্যার, ই পি এফ এবং ই এস আই-র কর্পাস ফান্ডে, আমি  ই পি এফ এবং ই এস আই-র কমিটি মেম্বার, তাই জানি। ই পি এফ এবং ই এস আই-র কর্পাস ফান্ডে, শ্রমিকদের টাকা, তাদের কন্ট্রিবিউশনের টাকা, এক লক্ষ হাজার কোটি টাকা আছে এই ফান্ডে। দুটো তে– ই পি এফ-এ আলাদা এবং ই এস আই-র আলাদা, কিন্তু দেখুন স্যার, কেন্দ্র এই টাকা নিজেদের সম্পত্তি ভাবছে স্যার। তাই তাকে শেয়ার বাজারে খাটাচ্ছে, শেয়ার বাজারে হেরেও যাচ্ছে, লোকসানো করছে –অথচ দেশে বন্ধ, রুগ্ন কারখানার মালিকরা, যারা এদের বন্ধু, যারা পালিয়ে গেছেন, টাকা না দিয়ে সেই সব কারখানার শ্রমিকদের ই পি এফ এবং ই এস আই ট্রাস্ট থেকে আমরা দিতে পারছিনা। অথচ ঐ টাকা শ্রমিকদের, কর্পাস ফান্ড ভেঙ্গে খরচা করছে এটাকে আমরা নিন্দা করছি।

ধন্যবাদ স্যার।