বাংলায় বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে সিপিএম, কংগ্রেস : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ মালদহ দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী শাহনওয়াজ আলি রেইহানের সমর্থনে জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফরাক্কায়, বল্লালপুর কৃষক মান্ডির মাঠে। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য

দেশে সবচেয়ে বঞ্চিত, লাঞ্ছিত শ্রমিক। তাঁদের ছাড়া কোনও ইমারত তৈরি হত না। আমি তাঁদের শ্রদ্ধা জানাচ্ছি

রাত সাড়ে ৯টায় শুনলাম ৫.৭৫ শতাংশ ভোট বাড়িয়ে দিয়েছে। কমিশন নোটিস জারি করেছে। বিজেপির ভোট যেখানে কম, সেখানে ভোট বাড়িয়ে দিয়েছে। ইভিএম কারা বানিয়েছে, সংখ্যাটা বাড়ল কী করে, কত ভোটার, কত মেশিন, আমরা জানতে চাই। কমিশনকে বলছি, মানুষের সন্দেহ দূর করুন। নিরপেক্ষ হোক কমিশন। আসল সত্যি জানাতে হবে

কেন্দ্রের কাছে বাংলা দুয়োরানি। কারণ এখানে সংখ্যালঘু বেশি, তফসিলি বেশি। বাংলাকে ওরা টাকা দেয়নি। আমাদের জনসংখ্যা গুজরাতের চেয়ে অনেক বেশি। ফরাক্কা ব্যারেজ নিয়ে যখন চুক্তি হল, ৭০০ কোটি টাকা দেবে বলে কেন্দ্র কথা দিয়েছিল। একটা পয়সা দেয়নি

মালদহে আমরা এত কাজ করি, বিজেপি, কংগ্রেস ভোট ভাগাভাগি করে নেয়। কেন মালদহে আমরা ভোট পাই না? সংসদে মালদহের কথা বলবে কে? গায়ের জোরে ভোট করাতে চাইলে মা-বোনেরা রুখে দাঁড়াবেন। রাস্তা কেউ আটকালে পুলিশকে ফোন করবেন, কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ডাকবেন

ডিসেম্বরের মধ্যে বাড়ির প্রথম কিস্তির টাকা সকলে পাবেন। তার পর তিন থেকে চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হবে

ওরা ২৬ হাজার চাকরি খেয়ে নিচ্ছে। এদের ছেড়ে দেবেন? ১০ লক্ষ চাকরি বাংলায় পড়ে আছে। দিতে গেলেই বিজেপি কোনও না কোনও এজেন্সি দিয়ে আটকে দিচ্ছে। চাকরি দিতে পারছে না, খেয়ে নিচ্ছে

উনি এলে সামনে টেলিপ্রম্পটার থাকে। যা বলেন, সব দেখে দেখে বলেন। কিছুই নিজে থেকে বলেন না

বাংলায় বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছে সিপিএম, কংগ্রেস। আমি দেশের কথা বলব না। ওখানে আমরা জোটে আছি। কিন্তু সিপিএম, কংগ্রেসকে বাংলায় ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে সমর্থন করা

কিছু বললেই বলে তৃণমূল চোর। কোথায় চুরি? প্রমাণ দাও। সাড়ে তিনশো টিম পাঠিয়েছে ওরা বাংলায়। আজ পর্যন্ত চুরির প্রমাণ দিতে পারেনি

আমরা যাঁদের চাকরি দিচ্ছি, তাঁদের চাকরি খেয়ে নিচ্ছে : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ আবার মালদহে ভোটপ্রচারে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।মালদহ উত্তর লোকসভা কেন্দ্রের শক্তি সংঘের মাঠে তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের হয়ে প্রচার করেন তিনি। সেখানে ওনার বক্তব্যের কিছু অংশ

তৃণমূলের মতো দল এ দেশে কেন, সারা পৃথিবীতে দুর্লভ। এক ঘর-সংসারে চলতে গেলে, এক জন দুষ্টু হয়। কেউ মিষ্টি হয়। কেউ দুষ্টুমি করলে পদক্ষেপ করতে ছাড়ি না। বিজেপি আজ পর্যন্ত করেনি। গুজরাতে দাঙ্গায় হাতে রক্ত মেখেছে। হাথরস, গুজরাতের নির্যাতিতা বিচার পায়নি। কুস্তিগীর সাক্ষীর উপর অত্যাচার করা হয়েছে। যিনি অত্যাচার করলেন, তাঁকে নেতা বানিয়ে দিল। বিজেপিকে হরিয়ানায় ঢুকতে দিচ্ছে না।

ওদের লজ্জা নেই। ঘৃণা নেই। মোদীবাবুর বড় ত্রাতা অমিতবাবু মহাশয় মেমারিতে এসে বলে গেলেন, রাজ্য ২ লক্ষ ৩২ হাজার কোটি টাকার হিসাব দেয়নি। আগের সভায় চাঁচলে বলে এলাম, কোনও ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট দেওয়া বাকি নেই। ক্ষমা চাইতে হবে, নয় তো জনগণের সামনে নাকে খত দিতে হবে। সিএজি রিপোর্টে বলা রয়েছে, ৪.১ ধারায়, ৩২টি দফতর ৫২ হাজার কোটি টাকা ইউটিলাইজ়েশন সার্টিফিকেট দিতে পারেনি।

তৃণমূল চোর, রোজ বলো। চুরি করল কোথায়? প্রমাণ দাও। ক্ষমতা থাকলে মোদীবাবু, শ্বেতপত্র বার করো। সাড়ে তিনশো কেন্দ্রীয় দল পাঠিয়েছ। কিছু বার করতে পারোনি। তা সত্ত্বেও ১০০ দিনের কাজ বন্ধ করেছ। ১,৭৪,০০০ কোটি টাকা আটকে রেখেছ। ১০০ দিনের কাজের টাকা, বাড়ির টাকা বন্ধ করেছ।

দেহ বহন করে আনা সব থেকে দুঃখের কাজ। সেটাতেও আমরা পাশে দাঁড়াই। আমাদের প্রকল্প রয়েছে। যত দিন পারব, করে যাব। আমার পরেও যারা তৃণমূল করবে, সাহায্য করবে।

আগামী দিনে ভাল থাকতে চান? লক্ষ্মীর ভান্ডার চলবে? মা-বোনেরা পাচ্ছেন? নাম লিখিয়েছেন? ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করেছি। বিজেপি বলেছে তিন মাস পর বন্ধ করব। আমি বলেছি, সাহস ভাল, দুঃসাহস ভাল না। বুঝবি, মায়ের ঝান্ডার কী দাম! যে কড়াইয়ে রান্না করেন, তা মাথায় মারলে বুঝবি! যত দিন বেঁচে থাকবেন, পাবেন। ৬০ বছর পর্যন্ত লক্ষ্মীর ভান্ডার। তার পরে লক্ষ্মীর ভান্ডার-২।

সাধুরা গেরুয়া পরে। আজ গেরুয়া পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে চোর, ডাকাত, মাফিয়া। এদের মনুষ্যত্বের দাম রয়েছে? নেই। তাই ওরা একটাই কথা জানে, যত পারো, মিথ্যে বলে যাও। ভাবে এ ভাবেই মিথ্যে এক দিন সত্যি হবে। মনে রাখবেন তাই, আপনার এক ভোটের মূল্য অনেক বেশি। কোটিপতির যা ভোটের দাম, সাধারণ মানুষেরও তা-ই ভোটের দাম।

কেউ মাকে মা বলে, কেউ আম্মা, কেউ মাদার। আদতে মা একই থাকে। তা হলে কেন দাঙ্গা নিয়ে সুড়সুড়ি দেওয়া হবে? কেন এনআরসি, সিএএ হবে? কেন ইতিহাস ভুলিয়ে দেওয়া হবে? কেন নেতাজি, রবীন্দ্রনাথ, গান্ধীজিকে ভুলিয়ে দেওয়া হবে? দূরদর্শনকেও গেরুয়া করা হয়েছে।

একটা হিন্দু ধর্মের আমদানি করেছে। ওরাই নাকি সব। যখন স্বাধীনতা আন্দোলন হয়েছিল, ওরা জন্মায়নি। আমরা যেন হিন্দু নই। এই তো দুর্গাপুজো আসছে। ইদ চলে গেল। এর পর পুজো। আমরা করি না? দুর্গা, শিব, সরস্বতী, রক্ষাকালী, শীতলার পুজো করি না? আমাদের হিন্দু ধর্ম শেখাচ্ছে? ইতিহাসের ছাত্র-ছাত্রীরা জানেন, তপোবন থেকে হিন্দু ধর্মের উদ্বোধন হয়েছিল। চার বেদ। যে কথা রামকৃষ্ণ বলেছেন, সে কথা নেতাজি বলেছেন। কথা হয়তো একটু অন্য ভাবে হতে পারে। কিন্তু আদতে এক।

যদি এনআরসি, সিএএ, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আটকাতে চান, বিজেপিকে আটকাতে হবে। নাগরিক অধিকার চাইলে ওদের হারাতে হবে। তফসিলি, জনজাতি, হিন্দু, মুসলমান— কারও কোনও অস্তিত্ব থাকবে না। সকলতে ঘাড় ধরে বার করে দেবে।

বিরোধীদের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে চায়। সব এজেন্সি কিনে নিয়েছে। বিচারের শেষ জায়গাও কিনতে চাইছে। এই অবস্থায় যদি বিজেপিকে না পাল্টান, সংখ্যালঘু ভাইবোনেরা নিজেদের মধ্যে ভোট ভাগাভাগি করে কিছু তৃণমূল এবং কিছু কংগ্রেসকে দেওয়ার চেষ্টা করেন, ভারতবর্ষ বাঁচবে না।

আমরা যাঁদের চাকরি দিচ্ছি, তাঁদের চাকরি খেয়ে নিচ্ছে। খেয়ে উল্লাসিত হয়ে বলছে, বোমা ফাটাব। ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে। আমরা বলি মেঘ দেখে করিসনে ভয়। আড়ালে সূর্য হাসে। আজ যাঁরা অন্যের চাকরি গেলে খুশি হন, তাঁরা কি ভাবেন, তাঁদের বাড়ির লোকের চাকরি গেলে কী হত? কোটি কোটি টাকা করে বিজেপিতে গিয়েছে। কালো টাকা সাদা করছে। জিনিসের দাম বাড়ছে, বিজেপি হাসছে। চাকরি যাচ্ছে, বোমা ফাটাচ্ছে। বিজেপি কাঁদবে।

জিনিসের দাম এত বেড়েছে। সেই নিয়ে কি মোদীবাবু মাথা ঘামাচ্ছেন? দিল্লিকে জিজ্ঞেস করুন।

দিল্লিতে পরিবর্তন দরকার। হাজার টাকার গ্যাস। ঘরে ঘরে গ্যাস, কিন্তু তার এত দাম যে মানুষ ছুঁতে পারে না। সব ওষুধের দাম বেড়েছে। খোঁজ রাখেন? ডায়বিটিস, হার্ট, অ্যান্টিবায়োটিক— সব ওষুধের দাম বেড়েছে। রমজানে আমরা সুফল দিয়ে কম দামে ফল বিক্রি করি। মা ক্যান্টিনে ৫ টাকায় ডাল, ভাত, তরকারি, ডিম দিই।

গত বিধানসভা নির্বাচনে আম, আমসত্ত্ব চেয়েছিলাম, আপনারা দু’হাত ভরে দিয়েছেন। তাই আজ আমাদের সরকার ক্ষমতায় এসেছে। আমরা কৃতজ্ঞ। তাই এনআরসি আটকাতে পেরেছি। এখানে অসমের মতো হত। আমরা আটকে দিয়েছি। এই জন্য বলছি, দিল্লিকে বদলান।

বিজেপির নিশানা বাংলাকে বদনাম করা। মালদহে দু’টি লোকসভা আসন রয়েছে। তৃণমূল জন্মের পর থেকে একটিতেও জয়লাভ করেনি। একটায় বিজেপি, একটায় কংগ্রেস জেতে। আমরা কি কাউকে বঞ্চিত করেছি? কেউ বলতে পারবেন যে লক্ষ্মীর ভান্ডার পান না? কন্যাশ্রী পান না? শিক্ষাশ্রী, ঐক্যশ্রী, সবুজশ্রী পান না? সবটাই ভাগ করে নিই আমরা। আমাদের ভেদাভেদ নেই।

ভারতের জাতীয় সঙ্গীত, জনগণমন অধিনায়ক। কার লেখা? রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। নেতাজি স্লোগান তুলেছিলেন জয় হিন্দ। আজ সারা পৃথিবী বলে। বন্দে মাতরম কার লেখা? বঙ্কিমচন্দ্রের। বাংলার সঙ্গে বিজেপির মেলে না। এখানে প্রত্যেক জায়গার আলাদা বিশেষত্ব রয়েছে। মালদহে আম, বর্ধমানে মিহিদানা, সীতাভোগ, বীরভূমে তারাপীঠ। সবটাই বাংলা।

সংবিধানকে টুকরো টুকরো করা হয়েছে। গান্ধীজিকে ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিনে আজও জাতীয় ছুটি ঘোষণা করেনি। বিদ্যাসাগর, বিরসা মুন্ডা, বঙ্কিমচন্দ্র, রামমোহন রায়— যত নাম নেবেন, তাঁরা দেশের নবজাগরণ এনেছেন। বাংলা থেকে শুরু হয়েছে। বাংলা এক সময় অবিভক্ত ভারতের রাজধানী ছিল। এখান থেকে গান্ধীজি, নেতাজি, মাতঙ্গিনী আন্দোলন শুরু করেছেন।

অটলবিহারীজি যখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তখন স্লোগান উঠেছিল, ইন্ডিয়া ইজ় সাইনিং। ভারত উজ্জ্বল হচ্ছে। এই ভোটে বিজেপির, মোদীবাবুর স্লোগান হল, মোদীবাবুর গ্যারান্টি। গ্যারান্টি কী? দেশ বিক্রি করেছে।

দিল্লির সরকার ১০ বছর ধরে বাংলাকে অবহেলা, বঞ্চনা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আজ আপনাদের মতামত জানানোর দিন। মতামত দান খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়।

 

বাংলায় বিজেপিকে রুখতে একাই লড়াই করছে তৃণমূল : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ জঙ্গিপুরের তৃৃণমূল প্রার্থী খলিলুর রহমানের সমর্থনে খড়গ্রামে নির্বাচনী সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য

মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস সেলিমকে লড়তে পাঠিয়েছে, উত্তর দিনাজপুরে ইমরানকে পাঠিয়েছে, আবার মালদায় পঠিয়েছে আর একজনকে লড়তে।

আমাদের সংখ্যালঘু ভোটকে ভাঙার জন্য কংগ্রেস এসব করেছে।

আপনারা ভুল করলে চলবে না। এই সুযোগ হারালে চলবে না। সবাইকে আরও অ্যাক্টিভ হতে বলছি। পাশের কেন্দ্র মুর্শিদাবাদে উড়ে এসে একজন বাজপাখি দাঁড়িয়েছে তৃণমূলের ভোট কাটতে। সবাইকে বলে যাচ্ছি নজর দিতে। এরা সকাল সন্ধ্যা আমাদের গালাগালি দেয়, আমাদের ভোট কেটে, সংখ্যালঘুদের ভোট ভাগ করে বিজেপিকে জেতাবে।

মানুষকে চমকানো বিজেপি জেনে রেখো, তোমরা আর কোনও দিন ক্ষমতায় আসবে না। বাংলায় বিজেপির দুটি চোখ। সিপিএম আর কংগ্রেস। দুজনে মিলে জোট তৈরি করেছে। বাংলার বাইরে বিজেপির বিরুদ্ধে যারা লড়াই করেছে, তাদের প্রতি তৃণমূলের সমর্থন রয়েছে। কিন্তু বাংলায় বিজেপিকে রুখতে একাই লড়াই করছে তৃণমূল। বাংলায় দয়া করে ভোট কাটাকাটি করবেন না।

আমরা বাংলায় এনআরসি করতে দেব না। গায়ের জোরে এনারসি করতে গিয়েছিল। আমি আটকে দিয়েছি। তিন বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী একশো দিনের কাজে টাকা আটকে রেখেছেম। একশো দিনের কাজের টাকা কোথায় গেল। একশো দিনের কাজের টাকা চুরি করেছি বলার আগে তার প্রমাণ দেখান।

প্রচারবাবু বলেছিলেন ইস বার চারশো পার ৷ আমি বলেছিলাম ইসবার পগারপার ৷ আমি বলেছিলাম ইস বার ২০০ ভি নেহি হোগা পার ৷

সব ধর্ম শেষ করার জন্য ইউনিফর্ম সিভিল কোড আনছে বিজেপি ৷ এতে হিন্দুদের কোনও লাভ হবে না ৷ আগামিদিন বিজেপি ক্ষমতায় এলে কারও স্বাধীনতা থাকবে না ৷ এনআরসি করে সবাইকে ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে ৷

২৬০০০ ছেলেমেয়ের চাকরি খাওয়া মেনে নেওয়া যায় না : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ মালদহে দ্বিতীয় দফায় ভোট প্রচারে গিয়ে হবিবপুর এবং সুজাপুরের মানিকচকে জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের কিছু অংশ

বিধানসভা ভোটে আপনারা ঢেলে ভোট দিয়েছিলেন বলেই BJP-কে আমরা ঠেকাতে পেরেছি। আপনাদের বলব, এবার আপনারাই পারবেন BJP-কে রুখে দিতে। কংগ্রেস বাংলায় জিতবে না। অন্য জায়গায় জিতবে। যেখানে আমাদের ক্ষমতা রয়েছে আমরা সাহায্য করছি। কিন্তু, বাংলাতে নয়। এখানে আমাদের কোনও জোট নেই। আমরা BJP-র বিরুদ্ধে একা লড়াই করছি। বাংলায় CPIM কংগ্রেস জোট হয়েছে। বিধানসভাতে একটাও আসন নেই। তা সত্ত্বেও কংগ্রেসকে দুটি আসন দিতে চেয়েছিলাম। বলেছিলাম CPIM-এর সঙ্গে জোট না করার জন্য। কিন্তু, ওরা কথা শোনেনি।’

মালদা জেলায় কোনও দিন লোকসভা আসন পাইনি। বিধানসভায় মালদা আমাদের ঢেলে আসন দিয়েছেন। সেই কারণেই BJP-কে রুখে দিতে পেরেছিলাম। বাংলায় কংগ্রেস জিতবে না মনে রাখবেন। বাংলায় কোনও জোট নেই, তৃণমূল একা লড়ছে। বাংলায় কংগ্রেসের জোট সিপিএমের সঙ্গে। বাংলায় কংগ্রেস-সিপিএম আসন ভাগাভাগি করেছে। দিল্লিতে BJP-কে রুখতে বাংলায় ভোট কাটাকাটি নয়। বাংলা কারও কাছে আত্মসমর্পণ করে না। বাংলা নিজের দাবি ছিনিয়ে আনবে। সংসদে সরব হবে না, টিকি দেখা যাবে না..তাঁকে ভোট দেবেন কেন? ভোট কাটাকাটি করে বিজেপিকে জেতাবেন না। ভোট কাটাকাটির সুযোগে বিজেপি যদি ক্ষমতায় চলে আসে তাহলে গায়ের জোরে সিএএ চালু করে আপনাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে। তাই বলছি, বিজেপিকে হঠাতেই হবে।

ফরাক্কা শুকিয়ে গেছে, কোনওদিন ড্রেজিং করে না। গঙ্গায় ভাঙন, কোনওদিন মাথা ঘামায় না। সামশেরগঞ্জে, ফারাক্কায় ২৫০ কোটি টাকা খরচ করে আমরা কাজ করছি। আপনারা সব জানেন. আমার বেশি কিছু বলার দরকার নেই।

মোদীবাবু গদি উলটাতে হলে সব ভোট এককাট্টা করে রাখবেন। মোদীবাবুর দুটো চোখ। একটা কংগ্রেস, আর একটি সিপিএম। মুর্শিদাবাদে দিয়ে দাঁড়িয়েছে সেলিম। এখানে আরেকজন। যদি কোনওক্রমে এই ভোট কাটাকাটির জন্য BJP-র সিট বেড়ে যায় ক্ষতি আপনাদের তা মনে রাখবেন। আমি আপনাদের উপর কোনওদিন অত্যাচার করতে দিইনি। বাম আমলের থেকে বাজেট বাড়িয়েছি। ইন্ডি নামটা শুনলে মোদী থর থর করে কাঁপেন। উনিও বুঝে গেছেন এবার আর বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না। ইন্ডি জোট যাতে সরকারে আসে সেজন্য তৃণমূল সব ধরনের সহযোগিতা করবে।

শাঁখা-পলা কী জানেন? এসব বাদ দেওয়া নিয়ে কথা বলছেন? কোনওদিন জানেন এসবের মাহাত্ম্য? উনি যা বলেছেন, আমি তা উচ্চারণ করতে চাই না। আমি ওসবে বিশ্বাসও করি না। কিন্তু আমি যতদিন থাকব, ততদিন ঐক্য, শান্তি প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে যাব। আমার কাছে সতী-সাবিত্রী-সীতা আর জাহানারা-রোশেনারার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই।

চাকরি প্রার্থীদের কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে তদন্ত হবে। তা বলে ২৬ হাজারের চাকরি খাওয়াকে কোনওভাবেই সমর্থন করতে পারি না। আমি বিজেপি-র মতো বাজে কথা বলি না। ভাত দেওয়ার ক্ষমতা নেই, কিল মারা গোঁসাই। আমরা আপনাদের পক্ষে ছিলাম, আছি, থাকব। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তদন্ত হবে, নিশ্চয়ই সংশোধন হবে। কিন্তু ২৬০০০ ছেলেমেয়ের চাকরি খাওয়া মেনে নেওয়া যায় না। আজ আদালতকেও নিয়ন্ত্রণ করছে।

সরি, কোর্টের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ নেই। কিন্তু মানুষ সব শেষে যে বিচারের দরজায় যান, আজ সেটাও যদি বিজেপি বন্ধ করে দেয়, তাহলে কোথায় যাবেন মানুষ? আমি নিজে আইনজীবী ছিলাম, এখনও বার কাউন্সিলের সদস্যতা রয়েছে।

আমি আবেদন করছি, ভাবুন, আজ যদি আপনার ঘরের ছেলেমেয়েদের চাকরি চলে যেত, পারতেন সাত বছর কাজ কাজ করে বেতনের টাকা ১২ শতাংশ সুদ-সহ ফেরত দিতে? আমরা আইনে যাচ্ছি। কিন্তু এটা হচ্ছে দেশের প্রধানমন্ত্রী, যিনি লোকের চাকরি খান।

বাংলায় কংগ্রেসকে CPIM-এর সঙ্গে জোট না করতে বলেছিলান। কিন্তু, কংগ্রেস সেই কথা শোনেননি। সিপিএম-এর কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারব না বলেই এই একলা চলো নীতি নিয়েছি।

কেন চকোলেট বোমা ফাটলেও সিবিআই, এনএসজির দরকার পড়ে? : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ আসানসোলে লোকসভা ভোটের প্রচারে যান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কুলটিতে তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্‌হার হয়ে প্রচার করেন তিনি। ওনার বক্তব্যের কিছু অংশ

আপনিও তো শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। যখন গদ্দার শিখ পুলিশ কর্মীকে খলিস্তানি বললেন তখন কেন চুপ ছিলেন?

এখানে কর তুলে নিয়ে গেলেও আমরা সুবিধা পাই না। রেশন বাবদ ১২ হাজার কোটি টাকা দেয়নি কেন্দ্র। এত মিথ্যাবাদী প্রধানমন্ত্রী আমি আগে দেখিনি। শুধু বাংলাকে বদনাম করার চেষ্টা করেন।

আসানসোল এবং তদ্‌সংলগ্ন এলাকায় শিল্প হলে বাংলার এক লক্ষ ছেলেমেয়ের চাকরি হবে।

আগের বার টাকা ছড়িয়ে লোকসভা ভোটে জিতেছিলেন আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী।

আমরা অনেক বাড়ি তৈরি করে দিয়েছি। আরও বাড়ি করে দেব। ডিসেম্বর মাসে ৬০ হাজার টাকা দেব। পরে আরও ৬০ হাজার দেব। ওষুধের দাম বাড়িয়েছে বিজেপি সরকার। প্রেসার, সুগারের ওষুধের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে মোদীর দাম কমেছে।

কেন চকোলেট বোমা ফাটলেও সিবিআই, এনএসজির দরকার পড়ে? যেন যুদ্ধ হচ্ছে। পুলিশকে জানানো হয়নি। এক তরফা হয়েছে। যে অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, তা কোথা থেকে এল তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। হয়তো আগে থেকে নিজেরাই ওখানে রেখে এসেছে। আজকে শুনলাম সন্দেশখালির বিজেপি নেতার বাড়িতে বোমা জমা রয়েছে। মনে করছে বোমা রেখে এবং চাকরি খেয়ে জিতে যাবে।

ভোট মিটে গেলেই গ্যাসের দাম বৃদ্ধি পাবে। বলে দিলাম। আমরা যা বলি, তাই করি। আমরা যা দেব বলি, তাই দিই। বিজেপি তা করে না। আমরা বাংলা জুড়ে উন্নয়ন করছি।

গতকাল মোদী বলেছেন, বাংলায় তৃণমূলের জন্য উন্নয়ন থেমে গিয়েছে। ভারতের জিডিপি (মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন) ৮.৮৭ শতাংশ। বাংলায় ১১.৮৪ শতাংশ। আপনি আগে পদত্যাগ করুন। তার পর এ সব বলুন।

‘চাকরি তো দেয় না। কিন্তু চাকরি কেড়ে নেয়। যাদের চাকরি বাতিল হয়েছে, তাদের পাশে দাঁড়াব আমি এবং আমার সরকার।

দুই দফার নির্বাচনের পরেই ঘাবড়ে গিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। সেটা বোঝা যাচ্ছে। বিজেপি কিছুতেই জিততে পারবে না।

 

 

চাকরির অধিকার কাড়তে দেব না : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ ঘাটালের পিংলায় দেবের সমর্থনে প্রচারসভা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের কিছু অংশ

ঘাটালে দেব অনেক কাজ করে। বন্যার সময় এখানে ও নিজে এসে কাজ করেছে, নিজের হাতে রান্না করে খাইয়েছে। ও আজ ভাল বলেছে। দেব আমার প্রিয় প্রার্থী। আমি দেখছি, ও একজন ভাল রাজনীতিবিদ হয়ে উঠছে।

এখানে দেব আর জুন যদি জেতে, তবে এই মেদিনীপুরকে আর ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের জন্য কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকতে হবে না। মেদিনীপুরকে আমি ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান উপহার দেব।

ডিসেম্বরের মধ্যে বাড়ির টাকার প্রথম কিস্তি আর তার তিন চার মাসের মধ্যে দ্বিতীয় কিস্তি দেব। এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা দিয়ে দেব। বাড়ি বানিয়ে নেবেন।

আপনারা মানুষখেকো বাঘ দেখেছেন, চাকরিখেকো মানুষ দেখেছেন? চাকরিখেকো বিজেপি পার্টি দেখেছেন? চাকরিখেকো সিপিএম পার্টি দেখেছেন? চাকরিখেকো রাম-বাম-শাম দেখেছেন?

আপনারা চাকরি খেলেন, তার পর বলছেন যে বেতন পেয়েছেন, তা ১২ শতাংশ সুদ সমেত ফেরত দিতে হবে। যিনি এই রায় দিয়েছেন, তাঁর আমি নাম করছি না। কিন্তু তাঁর যদি সারা জীবনের সব কিছু চলে যায় আর বলা হয় সব টাকা ফেরত দাও, তা হলে পারবেন? যখন ইচ্ছে হল সবার চাকরি খেয়ে নেওয়া! মগের মুলুক?

বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না। সেটা ওরা বুঝে গিয়েছে। তাই ঘাবড়ে গিয়েছে। আর উল্টোপাল্টা বলছে। বলছে ভোটের পর এনআইএ দিয়ে দেব। আরে ভোটের পর তুই থাকবিই না, এনআইএ কোথা থেকে দিবি। আগে ঠিক কর নিজে কোথায় থাকবি।

বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ প্রকল্প করেছিল। তার জন্য গোটা দেশে ১০০ কোটি বরাদ্দ করেছিল। অর্থাৎ রাজ্যের জেলাগুলির কপালে ১০ টাকা করেও জুটবে না। আর তার মধ্যে উনি (প্রধানমন্ত্রী) নিজের প্রচারেই ৯০ কোটি খরচ করে ফেলেছেন।

যারা ২৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি খেয়ে নিল, তাদের ছেড়ে দেব? কারও চাকরি এ ভাবে খাওয়া যায় না। যদি কোনও ভুল থাকে বলবেন, সংশোধন করে নেবে। সে তো শ্রমটা দিয়েছে। শ্রমের টাকাটা আপনি নেবেন কী করে? শুধু শ্রমদান নয়, ২৬ হাজার শিক্ষক যদি চলে যায়, পড়াবে কে? আমি শুনেছি আরএসএসকে স্কুলগুলির দায়িত্ব দেবেন? আমি শুনেছি সেনা স্কুলের দায়িত্ব আরএসএসকে দিয়েছে। লজ্জা করে না?

চাকরির অধিকার কাড়তে দেব না। ১০ লক্ষ চাকরি আমি প্রস্তুত করে রেখেছি, বিজেপির জন্য দিতে পারছি না।

 

বাংলায় বিজেপির দুটো চোখের মণি কংগ্রেস-সিপিএম : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অসিত কুমার মালের সমর্থনে পূর্ব বর্ধমানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জনসভা | ওখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের কিছু অংশ

বাড়ির সঙ্গে সম্পর্ক নেই বললেই চলে। মা মাটি মানুষের সঙ্গে রয়েছি। অনেকে বলে হেলিকপ্টারে চড়ে আসে। একবার হেলিকপ্টারে চড়ে আসুন, লু জ্বলে, এত তীব্র দহনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন বিজেপিকে সন্তুষ্ট করতে তিন মাস ধরে নির্বাচন করছে। ৭-৮ মের মধ্যে নির্বাচন হয়ে যায় প্রতিবার। এমন কী হল, জুন পর্যন্ত টানতে হল।

অনেকে এসি ১৭-১৮ সেলসিয়াসে চালিয়ে দেন। দার্জিলিঙে থাকবেন বলে। আমি যে ঘরে থাকি এসি চালাই না। চালালেও ২৭ এর নীচে চালাই না। গবেষকরাই বলছেন, ২৫ এর নীচে এসি চালানো উচিত নয়। এইভাবে চালালে কিন্তু বিদ্যুতের ঘাটতি হবে। ভাঁড়ার শেষ হয়ে যাবে। আমরা দেউচা পাঁচামি করছি। যাতে ঘাটতি না হয়। বাংলাই বিদ্যুৎ সরবরাহ করবে। ১ লক্ষ ছেলে মেয়ের চাকরি হবে।

এটা আমার নির্বাচন নয়, দিল্লির নির্বাচন। সেখানে বিজেপিকে হারাতে হবে। তাই রোদে জ্বলে ঘুরে বেড়াচ্ছি। এক একটা সিট চোখের মনির মতো রক্ষা করতে হবে। বাংলায় বিজেপির দুটো চোখে, কংগ্রেস সিপিএম। যদি কিছু ভোট কাটা যায়। এটাই বিজেপির কামনা।

কেষ্টকে আপনারা কত ভালবাসতেন, কেসে কী আছে জানি না। একটা গরিব লোক যদি গিয়ে দাঁড়াত, কাউকে ফেরাত না। জেলা ছিল ওর হাতের মুঠোয়। আমি প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়ে দেখতাম, কীভাবে কাজ করত। প্রতি নির্বাচনে গৃহবন্দি করে রাখত।

আমাদের সাংসদরা মার খেয়েছেন. টানতে টানতে থানায় নিয়ে গিয়েছে। তৃণমূল সাংসদরাই সংসদে বিজেপিকে জব্দ করে রেখেছে। সারা দেশে যত আঞ্চলিক দল রয়েছে, বিজেপিকে ভয় তৃণমূলই দেখায়। বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে লড়াইটা বিজেপির হচ্ছে।

নানুরে যখন ১১ হত্যা করা হয়েছিল, আমি গিয়েছিলাম, দেখলাম ১১টা বডি, একটা নতুন সাদা কাপড় পর্যন্ত নেই। আমি বললাম, কিনে দিতে পারলে না, তখন ওরা বলেছিল, পয়সা নেই। তখন ভেবেছিলাম, শেষকৃত্য যেন সবার ভালভাবে হয়। ঝাড়গ্রাম দিয়ে যাচ্ছি, দিদি মেয়েরা শুধু সাইকেল পাবে, আমি ভাবলাম, ঠিকই তো, সাইকেল মেয়েরাও পাবে, ছেলেরাও পাবে। তাই সবাইকে সাইকেল। ১১ লক্ষ বাংলার বাড়ির লিস্ট কেন্দ্রের কাছে পড়ে রয়েছে। তারা সাড়ে তিনশো টিম পাঠিয়েও করে নি। একশো দিনের কাজের টাকা দেয়নি। কেন্দ্র বন্ধ করে দিলেও কর্মশ্রী চালু করেছি। জব কার্ড হোল্ডাররা গ্যারান্টির কাজ পাবেন। টাকাটা আমরাই দেব। ডিসেম্বর মাসে বাংলার বাড়ির প্রথম কিস্তির টাকা। আগামী ৬ মাসেই কাজ শুরু।

আগেরবার ৫৪৩-র মধ্যে ৩০৩ পেয়েছিল। এবার উত্তরপ্রদেশেও ভাল সিট পাবে না। অখিলেশরা ভাল লড়াই করছে। বিহারে হাফও পাবে না। রাজস্থানে প্রথম ভোটেই কুপোকাত, মধ্যপ্রদেশেও অর্ধেক সিট পাবে না।তামিলনাড়ুতে জিরো পাবে। কেরলে সিপিএম-কংগ্রেস মিলেমিশে পাবে, তেলেঙ্গনাতেও অর্ধেক পাবে না। বিজেপির প্রচুর টাকা, জনগণের টাকা মেরে নিজের প্রচার করছে।

আজকে বলে বেড়াচ্ছে, মাংস-মাছ-ডিম খাবেন না। উত্তরপ্রদেশে দোকান বন্ধ করে দিয়েছে। প্রচারবাবু যা বলবে, তাই খেতে হবে। আমাদের এখানে বন্ধ করতে পারেনি। কারণ আমরা বাঘের বাচ্চার মতো লড়াই করে বাঁচি। কারণ আমরা মনে করি, সব মানুষ সব ধর্মের নিজেদের মতো বাঁচার অধিকার রয়েছে। বিজেপি এলে না থাকবে ধর্মের অধিকার, কথা বলার অধিকার।

২৬ হাজার শিক্ষককে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হল। আবার এক মাসের মধ্যে সুদ দিয়ে টাকা ফেরত দিতে হবে। বিজেপি নেতাদের বলি, এই সব কেস করে সরকারি কর্মীদের চাকরি খাচ্ছো, আপনাকে বললে পারবেন দিতে টাকা ফেরত? বাংলার কি সব স্কুল বন্ধ হয়ে যাবে? শিক্ষকের চাকরি কি আর হবে না? আমার হাতে ১০ লক্ষ চাকরি রয়েছে সরকারি দফতরে, আদালত আটকে দিচ্ছে। বিজেপি মামলা করলেই… যা বলবে তাই। আর অন্য কেউ বিচার চাইলে দরজা বন্ধ।

সবচেয়ে বড় গদ্দার, যাঁর বিরুদ্ধে মার্ডার কেস রয়েছে, তা সত্ত্বেও তাঁকে গ্রেফতার করা যাবে না, এটা কি আইন? আমিও আইনের ছাত্রী ছিলাম, এখনও বার কাউন্সিলের মেম্বার। আমি জাজেস নিয়ে কথা বলব না। কিন্তু জাজমেন্ট নিয়ে কথা বলার অধিকার আমার আছে। যদি অন্যায় থাকে, পরামর্শ দিতে, তা না করে ২৬ হাজার ছেলেমেয়ের চাকরি খেয়ে নিচ্ছো, এটা কী মজা?

এখন আর বেকার, মূল্যবৃদ্ধি, ওষুধের দাম নিয়ে কথা বলছে না। এখন শুধু বলছে NRC করব, CAA করব, মানে আপনার ধর্ম-অধিকার বিক্রি হয়ে যাবে। সম্পত্তি কেড়ে নেবে। আপনাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে রেখে দেবে।

একটা ভাওতাবাজি পার্টি। যত চোর ডাকাত মাফিয়া বিজেপিতে নাম লিখিয়েছে। আমাদেরও বুকের পাটা রয়েছে। আমাদেরও রোজ ১০টা করে চিঠি পাঠাচ্ছে। বিজেপির কেউ গ্রেফতার হয়েছে? কেষ্ট যদি দুর্নীতির জন্য গ্রেফতার হয়, গদ্দার তো সবচেয়ে বড় দুর্নীতিবাজ. ও কেন গ্রেফতার হবে না। বড় বড় কথা বলে, বলে বোমা ফাটাবে। ২৬ হাজার চাকরি কেড়ে ঢাক বাজাচ্ছে।

টিভি, ইউটিউবতে, সোশ্যাল মিডিয়াতে যা দেখছেন, তা বানানো। কোটি কোটি টাকা খরচ করে দাঙ্গা লাগায়, আইটি কোম্পানিগুলোতেও প্রচুর কর্মী ছাঁটাই হয়েছে। বাংলায় যত বেশি সিট পাব, তত ইন্ডিয়া জোটকে শক্তিশালী করতে পারব।

দূরদর্শনের দেখবেন, রঙটাও গেরুয়া করে দিয়েছে। কেবল মোদী কা বাত বলবে, দেখবেনই না, বয়কট করে দিন। বিজেপি তো ভোগী, ওরা কেন গেরুয়া পরবে?

ওরা সবার অধিকার কেড়ে নেবে : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ বীরভূম লোকসভার হাঁসনে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শতাব্দী রায়ের সমর্থনে হাঁসনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জনসভা | ওখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের কিছু অংশ

সিএএ, এনআরসির খেলা চলছে। ওরা সবার অধিকার কেড়ে নেবে।

ভয় দেখানোর খেলা চলছে। ইউনিফর্ম, সিভিল কোড চালু করে অধিকার কেড়ে নিতে চায়। বিজেপি করলে সাত খুন মাফ।

বিজেপি আজ সিপিএম-কংগ্রেসের হাত ধরেছে। বিজেপি চায় সংখ্যালঘু ভোট সিপিএম, কংগ্রেস পাক, যাতে তৃণমূল হারে।

‘বলছে বাংলায় মহিলাদের অসম্মান, উত্তরপ্রদেশে কী হচ্ছে?

৩ বছর ১০০ দিনের কাজের টাকা দেয়নি বিজেপি সরকার। ১০০ দিনের কাজের টাকা রাজ্য সরকার মিটিয়েছে। কোভিডের সময় বিনামূল্যে র‍্যাশন দিয়েছিল, তারপর বন্ধ। ভোটের সময় আবার র‍্যাশন দিতে শুরু করেছে।

অভিষেকের বাড়ি রেকি করেছে, গুলি করে পালিয়ে যেত। যদি ভোটে জিতবেই তাহলে এত ভয় দেখানোর কী ছিল?

আমাদের সংবিধান আমাদের সবাইকে সমান অধিকার দিয়েছে : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রে এরুয়ার বিএমডিপি স্কুলের মাঠে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কীর্তি আজাদের সমর্থনে ভাতারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জনসভা | ওখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের কিছু অংশ

এই ভোট হচ্ছে দিল্লির নির্বাচন। আমাকে বিজেপির কেউ কেউ বলছে কি করেছো কৈফিয়ত দাও।

বিজেপি না করলে অধিকার কেড়ে নেওয়া হবে। এনআরসি, সিএএ করা হবে। ইউনিফর্ম সিভিল কোড করা হবে। সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হবে।

আমাদের সংবিধান আমাদের সবাইকে সমান অধিকার দিয়েছে। আজকে দেশের সংবিধান ছিন্ন ভিন্ন করতে চাইছে। তাই বিজেপিকে ভোট দেবেন না। তাহলে সব অধিকার হরণ করবে।

বিজেপির যে প্রার্থী এখানে দাঁড়িয়েছেন তার মুখের ভাষা শুনেছেন?‌ পেটান ,মারুন। আর একজন খালি বোমা মারে, রাম রাম করে। আপনারা জানেন রেশনের সব টাকাই কেন্দ্রের দেওয়ার কথা ছিল।

কোভিডের সময় মনে আছে, ছোলা খাইয়েছিল। রেশনে ৯ হাজার কোটি টাকা রাজ্যকে দিতে হয়। কেন্দ্রের দেওয়ার কথা ৭ হাজার কোটি টাকা। তাহলে সংখ্যাটা কত হল?‌ ১৬ হাজার কোটি টাকা। গত দু’‌বছর ধরে ১২ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্র দেয়নি।

নির্বাচনের আগে চালাকি করে বিজেপির কল সেন্টার থেকে ফোন করছিল। ফোন করে বলছে, আপকো ঘর চাহিয়ে? দরখাস্ত করুন। ডিসেম্বর এই আবাসের টাকা দেবে রাজ্য প্রথম কিস্তিতে ৬০ হাজার, পরের কিস্তিতে ৬০,০০০ টাকা।

২ কোটি বেকারকে চাকরি দেবেন বলেছিলেন। একটা লোককেও চাকরি দেননি। আজকে ভারতবর্ষে বেকারের সংখ্যা সব থেকে বেশি। আমরা যখন বাংলায় চাকরি দিয়ে আপনারা কোটকে দিয়ে চাকরি খেয়ে নেন।

রাতের বেলায় সিসিটিভি অফ করে ভোট চুরি করতে গিয়েছিল। কোচবিহারে আমাদের লোকেরা ধরেছে। পুরো দেশ বিক্রি করে দিয়েছে। অলিগলি মে শোর হ্যায় বিজেপি চোর হ্যায়। তাই বিজেপি হঠাও দেশ বাঁচাও।

তৃণমূলকে হারানোর ক্ষমতা বিজেপির নেই : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ রায়গঞ্জের করণদিঘী কৃষি মান্ডি মাঠে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কৃষ্ণ কল্যাণীর সমর্থনে রায়গঞ্জে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই জনসভা | ওখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের কিছু অংশ

বাংলার ভোট হলে জবাব আমি দিতাম। বিজেপিকে জবাব দিতে হবে। কারণ, নির্বাচনটা দিল্লির। সরকার বদলে দিন।

একটা কোটিপতির ভোটের দাম যা, একটা বিড়ি শ্রমিকের ভোটেরও তাই দাম। সবাই ভোটটা দিন।

বলেছিল, ১৫ লক্ষ টাকা করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দেবে। দিয়েছে? বিজেপিকে হারাতে হবে তো! আর কংগ্রেস-সিপিএম বিজেপির দুটো চোখ। তৃণমূলের ভোট কাটা ওদের কাজ।

মিছিলে লোক পাচ্ছে না, আপনাদের ডাকছে। টাকা দিলে নিয়ে নেবেন। কারণ, ওটা চুরির টাকা, পাপের টাকা। আমি মনে করি, নেওয়া উচিত না। কিন্তু আপনার মনে হলে টাকাটা নিন। কিন্তু ভোটের দিন ওদের গেঁথে দিন। মানে ভোটটা তৃণমূলে দিন।

প্রত্যেক দিন কাগজে মিথ্যা কথা বলছে। আমাকেই সহ্য করতে পারে না, ওনার নাকি এখন মহিলা ভোট চাই!

কাকের রায় কা-কা ই হয়। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছি।চার সপ্তাহের মধ্যে টাকা ফেরত দিতে বলছে। চুরি করে টাকা ফেরত দেবে? মন খারাপ করবেন না। হতাশ হবেন না। আপনাদের সঙ্গে থাকব। এই রায় বেআইনি রায়। আমি জাজের কথা বলব না। রায়টা একতরফা হয়েছে। বিজেপির কথায় হয়েছে।

‘তৃণমূলকে হারানোর ক্ষমতা বিজেপির নেই। কারণ, মানুষ আমাদের সঙ্গে আছে। আমাদের সরানোর ক্ষমতা নেই তোমাদের।

সকালে উঠলে ওনার ছবি। চান করতে গেলে দেখবেন ওখানে ছবি। ঘুমোতে গেলে দেখবেন ওনার ছবি। উনি দেশের প্রধানমন্ত্রী না, প্রচারমন্ত্রী। প্রচারমন্ত্রী হয়ে গিয়েছেন।

বিজেপি যাক, আপনারা চান তো? সার্ভে বিশ্বাস করবেন না। আমাদেরও ২০১৬ সালে হারিযে দিয়েছিল। সারা দেশের লোক ক্ষিপ্ত হয়ে আছে। দেশটাকে গণতন্ত্রের জেলখানা করে দিয়েছে। মোদী যদি জেতেন, আর নির্বাচন হবে না।

আমরা ৪২ লক্ষ বাড়ি তৈরি করে দিয়েছে। ১১ লক্ষ লোক ডিসেম্বরে ৬০ হাজার টাকা পাবেন। প্রথম কিস্তির টাকা শেষ হলে দ্বিতীয় কিস্তিতে আবার ৬০ হাজার টাকা পাবেন। আমরা করে দেব আবাস। এদের শুধু বিদায় করুন। কেউ আর উদবাস্তু থাকবেন না। সবাই পাট্টা পেয়ে যাবেন।