অক্টোবর ৩১, ২০১৯
সকলে শান্তি, সম্প্রীতিতে বসবাস করুকঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ কলকাতায় পোস্তা বাজার ব্যাবসায়ী সমিতি আয়োজিত জগদ্ধাত্রী পুজোর উদ্বোধনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে কাশ্মীরে বাংলার শ্রমিকদের নির্মম হত্যার বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি বলেন, এক বিজেপি নেতা মন্তব্য করেছেন নিহতরা শ্রমিক ছিলেন, বাঙালী নয়। যখন গুজারাটিরা খুন হয় আমরা কি বলি না গুজারাটি খুন হয়েছে? তাহলে বাংলার মানুষকে বাঙালী বলতে আপত্তি কোথায়?
তিনি আরও বলেন, বাঙালী শ্রমিকরা বিজেপি শাসিত রাজস্থান ও গুজারাটে খুন হয়েছে। একজন ভারতীয় দেশের যে কোনও জায়গায় কাজ করতে যেতে পারে। অন্য রাজ্যের মানুষও বাংলায় কাজ করতে আসতে পারে, এটাই আমাদের বৈশিষ্ট্য। সংবিধান মানুষের চলাফেরার অধিকার নিশ্চিত করেছে। কেউ কাশ্মীরে গিয়ে কাজ করলে সে বহিরাগত হয় কি করে?
তিনি বলেন, প্রত্যেক রাজ্যের নিজস্ব পরিচিতি আছে এবং সেখানে ভিন রাজ্য থেকে মানুষ এসে শান্তিতে বসবাস করেন। আমরা কখনও কাউকে বলতে পারি না তুমি উত্তর প্রদেশ বা বিহার থেকে এসেছ তাই বেরিয়ে যাও। আমরা ভারতীয় সংবিধানকে সম্মান করি, মেনে চলি।
বাংলায় এনআরসি লাগা করার চক্রান্তের তীব্র প্রতিবাদ করে তিনি বলেন, আবার ওরা বলছে বাংলায় এনআরসি করবে। ওরা বলছে শুধু মুসলমানদের নাম বাদ যাবে। ওদের জিজ্ঞাসা করুন, অসমে ১৩ লাখ হিন্দুর নাম কি করে বাদ গেল? গোর্খাদের নাম কেন বাদ গেল? বিহারীদের নাম কেন বাদ গেল? আপনাদের ৫০ বছরের পুরোনো জন্ম সার্টিফিকেট আছে? না থাকলে আপনি ভারতীয় নন? এখন সব নথি ডিজিটাল। আগে তো ঠিকঠাক করে নথিভুক্তই হত না।
সকলের ব্যাক্তি স্বাধীনতার বিষয়ে তিনি বলেন, কেউ নিরামিষ খায়, কেউ আমিষ খায়। এটা যার যার ব্যাক্তিগত পছন্দ বা খাদ্যাভাস। এখন ওরা মানুষের ব্যাক্তিগত বিষয়েও নাক গলাচ্ছে। আমরা চাই সকলে একসঙ্গে শান্তি, সম্প্রীতি নিয়ে বসবাস করুক।
কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রক যে গঙ্গায় দুর্গা বিসর্জন এবং ছট পুজো সংক্রান্ত বিধিনিষেধ জারি করেছে, তার বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। তিনি বলেন, আমরা ঘাট ও নদী পরিষ্কার করি ভাসানের পর। কাঠামো জল থেকে তুলে আনা হয়। ওরা কি করেছে?
তিনি আশা করেন, কোনও আদেশ দেওয়ার আগে কর্তৃপক্ষের উচিৎ সংশ্লিষ্ট মানুষের কথা ভাবা। সবসময় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার চেষ্টা করা উচিৎ বলে মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।