সাম্প্রতিক খবর

নভেম্বর ২, ২০১৯

আমরা চাই এখানে সকলে একসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করুকঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আমরা চাই এখানে সকলে একসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করুকঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

ছট পুজোর অনুষ্ঠানে আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। সকলকে তিনি শুভেচ্ছা বার্তা দেন।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ-

কালীপুজো আর জগদ্ধাত্রী পুজোর মাঝেই এই ছট পুজো হয়। আমরা সব পুজোকেই সমান মর্যাদা দিয়ে করে থাকি।

বাংলার শহর ও শহরতলি মূলত কসমোপলিটান। আমরা এখানে সবাই শান্তিতে বসবাস করি এবং একজন আরেকজনের উৎসবে অংশ নিই।

সারা বছর বাংলায় উৎসব চলে। উৎসব সবসময় কোনও জাতির নয়, এখানে বিজ্ঞান মেলাকেও উৎসব হিসেবেই দেখা হয়। যেখানেই ঈশ্বরের আরাধনা হয় আমি সেখানেই যাই।

আমরা নির্বাচনের সময় ধর্ম নিয়ে খেলি না, নিজেদের মধ্যে মারামারি করি না। আমরা স্বামী বিবেকানন্দের কথা মেনে চলি, একতাই শক্তি।

জম্মু ও কাশ্মীরে কাজ করতে যাওয়া ১০০ জনকে গতকাল ফিরহাদ হাকিম ফিরিয়ে এনেছে।

আমি পোস্তায় ১০ একর জমিতে একটি বহুতল তৈরী করার প্রস্তাব দিয়েছি। এতে সকলে উপকৃত হবে। আমাদের সরকার বড়বাজার অঞ্চলে পর্যাপ্ত থানা ও দমকল কেন্দ্রের ব্যবস্থা করেছে।

আমরা সবসময় ব্যাবসায়ীদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। নোটবন্দীর পর আমি এখানে এসে ব্যাবসায়ীদের অসুবিধার কথা জানতে নিজে এসেছিলাম।

দেশের অর্থনীতি এখন চরম খারাপ অবস্থায়। মা জগদ্ধাত্রীকে প্রার্থনা করি উনি যেন সব ঠিক করে দেন। আমি খুব শোকাহত বাংলার পাঁচজনকে যেভাবে কাশ্মীরে খুন করা হয়েছে। কিছু বিজেপি নেতা এই ঘটনাকে খুব হাল্কা ভাবে নিয়ে মৃতদের অপমান করে বলেছে ওরা শ্রমিক, বাঙালী নয়। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক। সত্যি স্বীকার করতে সমস্যা কোথায়? এইভাবেই ওরা বাঙালী অবাঙালীদের মধ্যে ঝামেলা লাগাচ্ছে।

বাংলা থেকে কাজে গিয়ে রাজস্থান ও গুজারাটেও শ্রমিক খুন হয়েছে, আমাদের সরকার তাঁদের পরিবারকে সাহায্য করেছে। যারা কাশ্মীরে যান, তারা ভারতীয়। দেশের মধ্যে যেকোনও জায়গার মানুষ যেকোনও জায়গায় যেতে পারে কাজের জন্য।

আমরা কখনও বলি না অন্য জায়গা থেকে মানুষ এখানে আসতে পারবে না। আমরা ধর্মের ভিত্তিতে মানুষে বিভেদ করি না। খাবার, সংস্কৃতি সব বিষয় মানুষের নিজস্ব পছন্দের ওপর নির্ভর করে।

চারদিকে যা হচ্ছে তা শোচনীয়। এনআরসির সিদ্ধান্ত দুর্ভাগ্যজনক। যদি আপনাদের বলে এনআরসি করে মুসলিমদের তাড়াবে, তাহলে অসমে বাঙালী, গোর্খা, বিহারীদের নাম বাদ গেল কি করে?

অনেক রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, কর্মসংস্থান কোথায়? মানুষ কাজ হারিয়ে অনাহারে দিন কাটাচ্ছে। এবার তারা খুনও হচ্ছে। বড়বাজারে সব জাতি ধর্ম বর্ণের মানুষ একসঙ্গে শান্তিতে কাজ করে।

অন্যান্য রাজ্যে লিঞ্চিং ঘটে চলেছে। বাংলা অনেক শান্ত আছে। আমরা চাই এখানে সকলে একসঙ্গে শান্তিতে বসবাস করুক।

আমি সকলের জন্য ছুটি নিশ্চিত করি। আমি সরকারি ছুটির তালিকা দেখি যাতে কর্মীরা আনন্দ করতে পারে। আগামী বছর দুর্গা পুজোয় ১১ দিন ছুটি।

আমরা চাই সকলের ছট পুজো ভালো কাটুক। আমরা ছটি ঘাট প্রস্তুত করেছি এই পুজোর জন্য। পুজো শেষ হলেই আমরা নদী পরিষ্কার করব।

বিসর্জন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সাধারন মানুষের অনুভূতির কথা ভেবে দেখা উচিৎ।

আমি ওনাদের আদেশ পড়ে বিকল্প ব্যবস্থা করেছি এই পুজোর জন্য যাতে মানুষের অসুবিধা না হয়।

জয় হিন্দ জয় বাংলা