সাম্প্রতিক খবর

সেপ্টেম্বর ২৪, ২০১৯

বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে বাংলার দর্শন, সংস্কৃতি,সাহিত্য, সভ্যতাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিলঃ দিদি 

বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে বাংলার দর্শন, সংস্কৃতি,সাহিত্য, সভ্যতাকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিলঃ দিদি 

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আজ পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান মেদিনীপুরের ঘাটালের বীরসিংহ গ্রামে যান। তিনি বিদ্যাসাগরের ২০০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সেখানে যান।

মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে সেই অশুভ শক্তিকে ধিক্কার জানান যারা কলকাতায় বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙে। তিনি বলেন, কয়েকমাস আগে একদল  উন্মত্ত, ধর্মান্ধ লোক বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে দিয়েছিল। আমরা সেটা পুনর্নির্মাণ করি। বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙে বাংলার দর্শন, সংস্কৃতি,সাহিত্য, সভ্যতাকে মুছে ফেলা যায় না। 

তিনি আরও বলেন, আমাদের বিদ্যাগুরু, আমাদের সভ্যতার গুরু, আমাদের সংস্কৃতির মহামানব ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থানে এসে আমি ধন্য। আমার মনে হল আমরা বাংলার সর্বপ্রথম আঁতুড়ঘরে এসে পৌঁছতে পেরেছি। আমরা ধন্য হয়েছি। 

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবার আমার দ্বিশত বছর যাপন করছি বিদ্যাসাগর মহাশয়ের। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বাড়িতে আজ ২০০ বছর পর এসেও মনে হচ্ছে সবটাই যেন চোখের সামনে একটা জীবনের আলোর হাতছানি দিয়ে ডাকছে। তিনি যেন বলছেন আমাকে স্মরণ করো, বিদ্যাকে ভালবেসো, শিক্ষাকে ভালবেসো, সংস্কৃতিকে ভালবেসো, সভ্যতাকে ভালবেসো, জাগরণকে ভালবেসো, মেয়েদের ভালবেসো, বারবার করে বাংলার ঘরে ফিরে এসো। 

মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিদ্যাসাগর মহাশয় একদিকে ব্যাকরণ, অন্যদিকে সাহিত্য, অন্যদিকে অলঙ্কার, অন্যদিকে বেদান্ত, অন্যদিকে ন্যায়-তর্ক-জ্যোতির্বিজ্ঞান সবকিছুতেই তিনি পারদর্শী ছিলেন। তিনি যে বিদ্যার সাগর, সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তিনি কুসংস্কার থেকে, অন্ধকার থেকে মানুষকে সভ্যতার আলো দেখিয়েছিলেন, শিক্ষার আলো দেখিয়েছিলেন। তিনি বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন, বিধবা বিবাহ প্রচলন করেছিলেন। মেয়েদের শিক্ষার প্রচলন করেছিলেন। তিনি ছিলেন সংগ্রামী মানুষ। 

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করেছিলেন বর্ণপরিচয় পুস্তকের মাধ্যমে। বর্ণপরিচয় বাংলা ভাষাকে ওনার দান। বাংলা ভাষায় তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়। তিনি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। তিনি শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারের এক দিকপাল। 

এই উপলক্ষ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণাঃ

  • বিদ্যাসাগর কলেজকে হেরিটেজ কলেজ করা হবে, এখানে একটি আর্কাইভ করা হবে।
  • সংস্কৃত কলেজে একটি নতুন আর্কাইভ করা হবে।
  • সংস্কৃত ইউনিভার্সিটি করা হবে।
  • বিদ্যাসাগরের কলকাতার বাদুড়বাগানের বাড়ির মিউজিয়ামটি নতুন করে নির্মান করা হবে।
  • মাতৃদেবীর নামে প্রতিষ্ঠিত ভগবতী দেবী স্কুল হেরিটেজ করা হবে।
  • রাজ্যের সব কলেজে বিদ্যাসাগরের উপর  সেমিনার করার জন্য ২ লক্ষ টাকা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।
  •   আড়াই কোটি টাকা খরচ করে বিদ্যাসাগর স্মৃতিমন্দির সংরক্ষণ করা হবে।
  • মেট্রোপলিটন কলেজের উন্নতির জন্য আমরা ৫০কোটি টাকা এককালীন দেওয়া হবে।
  • বিদ্যাসাগরের নামে আকাডেমি করা হবে,  তাঁর হাতে লেখা সব বইগুলির জন্য ডিজিটাল লাইব্রেরী করা হবে।
  • বিদ্যাসাগর স্মৃতি মন্দিরটি সংস্কার করা হবে।
  • বিদ্যাসাগরের নামে একটা গবেষণা কেন্দ্র করা হবে। 
  • শান্তিনিকেতন বা জোড়াসাঁকোর মতো বীরসিংহ গ্রামে এডুকেশন্যাল ট্যুরিস্ট হাব করা হবে।