সাম্প্রতিক খবর

অক্টোবর ২১, ২০১৯

সারা বাংলায় দুর্গাপুজোর সময় যে একতা লক্ষ্য করা যায়, তা প্রশংসনীয়ঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সারা বাংলায় দুর্গাপুজোর সময় যে একতা লক্ষ্য করা যায়, তা প্রশংসনীয়ঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ শিলিগুড়ি পুলিশ লাইনে বিজয়া সম্মিলনী করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকলকে তিনি বিজয়ার শুভেচ্ছা ও প্রণাম জানান। সারা বাংলায় পাহাড় থেকে সমতল সমস্ত জায়গায় দুর্গাপুজো যে একইরকম উদ্দীপনায় পালিত হয়, তাতে যে সকলের মধ্যে একতা লক্ষ্য করা যায় তার প্রশংসা করেন তিনি।

তিনি বলেন, দুর্গাপুজোর সময় যখন ৮-১০কোটি মানুষ দুর্গা প্রতিমা দর্শনে রাস্তায় বেরোন তখন আমি রাত জেগে পাহারা দিই। কোন ক্লাব কিরকম পুজো করছে তার প্রত্যেকটাও আমি খবর রাখি। মা বোনেরা, যুবক সম্প্রদায় বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীরা স্বেচ্ছাসেবক হয়ে নানাভাবে পুজোয় গাইড রূপে সকলে সাহায্য করেছে। তাদের ছাড়া এতো ভালোভাবে কাজ করা সম্ভব নয়। সমস্ত আয়োজক পুজো কমিটিগুলিকে আমি অভিনন্দন জানাই।

তিনি বলেন, আগামী রবিবার কালীপুজো, ২তারিখ ছট পুজো, যেহেতু রবিবার কালীপুজো পড়েছে তাই সরকারি কর্মচারীদের ৪ তারিখ বাড়তি ছুটি দিয়েছি।পুবালী, রাজবংশী, কামতাপুরী, গুরুমুখী ভাষা, হিন্দী ভাষা, ঊর্দু ভাষাকে আমরা সরকারি স্বীকৃতি দিয়েছি। এইভাবে আমরা সমস্ত ধর্ম বর্ণ ভাষাকে এক করেছি।

বাংলার সম্প্রীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আলোর মধ্যে দিয়ে আলো দেখার চেষ্টা করলে জগৎটা আলোয় ভরে যাবে। অন্ধকারের মধ্য দিয়ে আলোর দিকে যাওয়া আমাদের সবচেয়ে বড় কাজ। কোচবিহার বিমানবন্দর হয়েছে, বালুরঘাটে বিমানবন্দর হয়েছে। জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ করা হয়েছে। শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি আলিপুরদুয়ার থেকে নেপাল ভুটান-এ সরাসরি যাওয়ার রাস্তা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের সাথে ছিলাম, আছি, থাকব।

এনআরসির প্রসঙ্গে সকলকে আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলায় কোনও এনআরসি হবেনা, কোনও চিন্তা নেই। এই বাংলা আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছে। এই বাংলা নবজাগরণের বাংলা, এই বাংলা নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু, পঞ্চানন বর্মা, বিরসা মুন্ডা,মাতঙ্গিনী হাজরা, প্রীতিলতা ওয়েদ্দার প্রমুখ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বাংলা। এ বাংলা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রাজা রামমোহন রায়, বিবেকানন্দ-রামকৃষ্ণ, রবীন্দ্র -নজরুল প্রমুখ মনিষীদের বাংলা। ওরা বলছে বাংলায় এনআরসি করব। এখানে এনআরসি করতে দেব না এটা নিশ্চিন্ত করে দিয়ে গেলাম।

কেন্দ্রীয় সরকারের বিভাজনের রাজনীতি নিয়ে তিনি বলেন, ওরা বলছে পাহাড়ি, আদিবাসী, হিন্দু-মুসলমান কেউ থাকবে না। আসামে এনআরসি-তে ১৩ লক্ষ বাঙালী, ১লক্ষ হিন্দীভাষী, ১লক্ষ পাহাড়ি এবং এই ১৩ লক্ষ বাঙালীদের মধ্যে বেশিরভাগ রাজবংশী ছিলেন। কখনও হিন্দুর সাথে মুসলমানের ভাগাভাগি, কখনও হিন্দিভাষীদের সাথে ঊর্দুভাষীদের ভাগাভাগি ওরা করে থাকে। এই বাংলায় সব মানুষের বসবাস করার সমান অধিকার আছে। এই সরকার আপনাদের পাহারাদার। এখানে আপনারা নিশ্চিন্তে থাকবেন।

দেশের অর্থনীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সারা ভারতবর্ষে ৪০% বেকারত্ব বেড়ে গেছে একমাত্র বাংলায় আমরা ৪০% বেকারত্ব কমিয়ে দিয়েছি। আমরা আরো ভাল করে কাজ করব, যাতে বাংলার জন্য আগামী প্রজন্ম গর্ব করে বলতে পারে এটা আমার গর্বের বাংলা। কেউ বিদ্রুপ করে বলে, বাংলায় কেউ বিজ্ঞানী হয়নি আর তার তিনদিন পরে বাংলার মানুষ নোবেল পেল। এতো নোবেল খুঁজে পাবে নাকো তুমি, সকল দেশের সেরা আমার জন্মভূমি। বাংলা একদিন বিশ্বসেরা হবে।