অক্টোবর ৩০, ২০১৯
জাপানি প্রযুক্তিতে বনসৃজনে উদ্যোগী রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তর

জাপানের মিয়াওকি পরিবেশ-প্রযুক্তি আর ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পকে হাতিয়ার করে উলুবেড়িয়ার শিবগঞ্জে শুরু হচ্ছে অভিনব সামাজিক বনসৃজন প্রকল্প। আর সেই মনুষ্যসৃষ্ট জঙ্গলের নামকরণ হবে আন্তর্জাতিক পরিবেশ আন্দোলনের নয়া মুখ, সুইডেনের স্কুলছাত্রী গ্রেটা থুনবার্গের নামে।
এই গ্রামে বৃহস্পতিবার ইতিমধ্যেই হয়েছে ১০ দিনের কর্মশালা। রাজ্যের ১৩টি জেলার সরকারি আধিকারিকরা এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন। জাপানি উদ্ভিদবিদ আকিরা মিয়াওকির উদ্ভাবিত পদ্ধতি অনুসরণ করে জঙ্গল তৈরির এই ভাবনা রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের। শিবগঞ্জে ভাগীরথী কো-অপারেটিভ ফারমিং সোসাইটির জমিতে এই পদ্ধতিতে বনসৃজন হবে। কী ভাবে গাছ লাগানো হবে, তা হাতেকলমে দেখানো হবে সরকারি আধিকারিকদের। এ জন্য শ্যামপুরের ডিঙাখোলা সেক্টরের ওই সোসাইটির ১০০০ বর্গফুট জায়গা তারের জাল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে। সেখানে লাগানো হবে ৩৯ প্রজাতির গাছ। এই কর্মসূচির পোশাকি নাম, ‘থুনবার্গ ফরেস্ট প্রজেক্ট’।
শিবগঞ্জে বনসৃজন একটি পাইলট প্রজেক্ট। যা আগামিদিনে দেশকে পথ দেখাবে। ভারতে এই প্রথম ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প ব্যবহার করে মিয়াওকি প্রযুক্তিতে গাছ লাগানোর প্রক্রিয়া শুরু হল। এই প্রযুক্তির সুবাদে খুব অল্প সময়ে গাছ বেড়ে উঠবে। ফলে বাতাসে অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়বে। হুগলি নদীর উপকূলের পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই অরণ্য।
প্রাথমিক ভাবে বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করা হবে শিবগঞ্জে। হাওড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, মালদা, উত্তর দিনাজপুর, পূর্ব বর্ধমান, দক্ষিণ ২৪ পরগনা মিলিয়ে মোট ১৩টি জেলার ৩৬ জন প্রতিনিধি শিখেছেন মিয়াওকি প্রযুক্তির পাঠ।
এই অল্প পরিমাণ জমিতে প্রায় ৩,২৮০টি চারাগাছ বসানো হবে। এই গাছগুলি আগামী সাত মাসের মধ্যে ৩০ গুণ বৃদ্ধি পাবে। অল্প সময়ে জঙ্গলের চেহারা নেবে এই এলাকা।
শিবগঞ্জে মূলত বহেড়া, বেল, জাম, আম, হরিতকি, বাবলা, বট, পলাশ, শিরিস, তাল, করমচা, মহুয়ার মতো দেশীয় গাছ রোপণ করা হবে।