অগাস্ট ২, ২০১৯
‘গ্রীন অ্যান্ড ক্লীন বেঙ্গল’করাই আমাদের স্বপ্ন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

গতকাল পরিবেশ বাঁচাও স্লোগান নিয়ে পথ হাঁটেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর তিনি নজরুল মঞ্চে সবুজের অভিযান বলে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে পরিবেশ রক্ষার বিষয়ে বক্তব্য রাখেন। তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ
সকলে যারা আজ পরিবেশ বাঁচানোর জন্য এতটা পথ হাঁটলেন, তাঁদের সকলকে স্বাগত।
সাপের কামড় থেকে বাঁচার জন্য স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে নির্দেশাবলী দিয়ে একটি অ্যাপ তৈরী করা হয়েছে।
পরিবেশ রক্ষার জন্য পরিবেশ দপ্তর থেকে ৬টা ইউনিট তৈরী করা হয়েছে।
সরকার কলকাতা পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করে রাস্তায় যারা বসবাস করেন, তাঁদের ইলেক্ট্রিক ওভেন দেওয়ার চেষ্টা চলছে আগামী এক বছরের মধ্যে। আশা করব হকার ভাই/বোনরাও আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন।
আজকের পৃথিবীতে যুদ্ধের থেকেও বড় আতঙ্ক পরিবেশ দূষণ। আজ যদি আমরা জল, বিদ্যুৎ না বাঁচাতে পারি, আগামীদিন আমরা পৃথিবীও বাঁচাতে পারব না।
গাছ আমাদের বন্ধু। ভুটানে পাহাড়ের ওপর ঘরবাড়ি তৈরী করেনা, সমতলে করে।
এবছর ঠিক সময়ে বর্ষা হয়নি। এরপর বর্ষা হলে বন্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পৃথিবীতে যত দূষণ হচ্ছে, তত প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে।
কলকাতায় ভিআইপিদের গাড়িতে হুটার বাজানো হয়না। অ্যাম্বুলেন্সের হুটারেরও একটা মাত্রা বেঁধে দেওয়া উচিৎ শব্দদূষণ ঠেকাতে। হুটারের অপপ্রয়োগ করা আটকাতে হবে।
সবাই একটি করে গাছ লাগালেও বাংলায় দশ কোটি গাছ লাগানো হয়ে যাবে। চেন্নাইতে কদিন আগে পানীয় জলের সমস্যা হয়েছিল। অনেক জায়গায় টাকা দিয়ে জল কিনতে হয়। বাংলায় কিনতে হয়না। কিন্তু, নজর রাখতে হবে জল যেন অপচয় না হয়।
প্রতি বছর ১২ই জুলাই আমরা ‘জল বাঁচান, প্রাণ বাঁচান’, ‘জল ধরো, জল ভরো’ পালন করব। এই অভিযান ব্লকস্তর পর্যন্ত পালিত হবে। পরিষ্কার জল সংরক্ষণ করুন।
পুজো কমিটির মিটিং এর আগে একটা প্ল্যান তৈরী করে জনসচেতনতা অভিযান করুন। ফেসটুন, লিফলেট, এলইডি তৈরী করে সচেতনার কাজে লাগান।
‘গ্রীন অ্যান্ড ক্লীন বেঙ্গল’করাই আমাদের স্বপ্ন। বিগত আট বছরে ৬ লক্ষ ৭৫ হাজার বিঘা জমিতে বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। আগামীদিন সংখ্যাটা আরও বাড়বে। সবুজশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা শিশু জন্মানোর পরে একটা করে চারাগাছ দিয়ে থাকি। আমরা প্রায় ৩ কোটি গাছের চারা ইতিমধ্যেই দিয়েছি।
সেভ এনার্জি, সেভ ওয়াটার সেভ পাওয়ার, সেভ এনভারমেন্ট, সেভ ড্রাইভ সেভ লাইফ ইত্যাদি প্রকল্পগুলি ঠিক মতো করা গেলে ‘গ্রীন অ্যান্ড ক্লীন বেঙ্গল’এর স্বপ্নপূরণ হবে।
প্রতি বছর ১লা আগষ্ট ‘সবুজ বাঁচাও সবুজ জাগাও’ ব্লক লেবেল পর্যন্ত পালন করা হবে। এটা স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় পুজো কমিটিগুলোও পালন করলে ভালো হয়।
উইপ্রো আবার বাংলায় ফিরে আসছে। ৫০-একর জমির উপর সিলিকন ভ্যালি তৈরী করবে। এর ফলে ১০ হাজার কর্মসংস্থান হবে।
মাইক্রোসফট কোম্পানি আসছে তারা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম তৈরী করবে। প্রজেক্ট সঙ্গম, প্রজেক্ট রিওয়েভ নামক দুটো জনহিতকর প্রকল্পের মাধ্যমে ৬ লক্ষ তন্তুবায় শিল্পীদের সাহায্য করবে, এটা নদীয়া থেকে খুব শ্রীঘ্র চালু হয়ে যাবে।
৯ই আগস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলন, ১২ই আগস্ট বকরী ঈদ, তারকেশ্বরে শ্রাবণী মেলা আছে, ১৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দিবস, ২৩শে আগস্ট জন্মাষ্টমী আছে। এই আগস্ট মাস পূজা পার্বন উৎসবের মাস। সুতরাং সবাই মিলে সংহতি, সম্প্রীতি এবং সৃষ্টির মেলায় পৃথিবীকে বাঁচাই।