অক্টোবর ২, ২০১৯
বিভেদ-বিদ্বেষ ছড়ানো কোনও দেশনেতার উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ নাঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ রাজ্যজুড়ে যথাযথ মর্যাদার সঙ্গে পালিত হচ্ছে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীজির ১৫০তম জন্মজয়ন্তী। সেই উপলক্ষে আজ মেয়ো রোডে গান্ধীমূর্তিতে মাল্যদান করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি কলকাতার বেলেঘাটায় গান্ধীভবনকেও সংগ্রহশালা হিসেবে আজ জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে সকলকে মহাত্মার আদর্শ মেনে চলার আবেদন করেন।
ওনার বক্তব্যের কিছু অংশ:
আমাদের দেশের সব মনীষীদের চিন্তাধারা ও আদর্শে আমরা অনুপ্রাণিত। প্রতিদিন প্রতি মুহূর্তে আমরা তাঁদের স্মরণ করি। তাদের সকলের ভাষা আলাদা হলেও চিন্তাধারা এক।
যেদিন ভারত স্বাধীন হয় সেদিন গান্ধীজি দিল্লিতে না থেকে বেলেঘাটার গান্ধী ভবনে ছিলেন। দেশভাগের ফলে দাঙ্গা থেকে শান্তি সম্প্রীতি ফিরিয়ে আনার জন্য সব ধর্ম সব বর্ণের সব সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে আবেদন নিয়ে বসেছিলেন এই গান্ধী ভবনে।
বেলেঘাটার গান্ধী ভবন আমরা সংস্কার করেছি, গান্ধী মিউজিয়ামও তৈরী হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরে গান্ধীজির নামে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরী হচ্ছে।
বারাকপুরের গান্ধীঘাট সংলগ্ন এলাকাকে ট্যুরিজিম স্পট হিসেবে গড়ে তোলা হবে। ‘উৎসধারা’ প্রকল্পে কাজ আমরা শুরু করেছি।
গান্ধীজির চিন্তাধারাকে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে তুলে ধরার জন্য বাংলা ও ইংরাজিতে ‘জাতির জনক’ বইটি মুদ্রণ করা হয়েছে।
অনগ্রসর শ্রেণীর মধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে গান্ধিজির আদর্শ তুলে ধরা হচ্ছে।
গান্ধীজির কাছ থেকে অহিংসা, শান্তি ও মৈত্রীর যে বাণী আমরা শিখেছি তাই নিয়েই চলবো।
ভারতে কারও আর নতুন করে উপদেশ দেওয়ার দরকার নেই। উপদেশ তারাই দিতে পারেন যারা উপদেশ দেওয়ার অধিকারী, যারা দেশের জাতির নেতা হওয়ার অধিকারী।
দেশের নেতা হওয়া উচিত গান্ধীজি, নেতাজির মত। তাঁরা নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সব ধর্ম, সব সম্প্রদায়ের সব মানুষকে নিয়ে। ভাগাভাগি, মারামারি, বিভেদ-বিদ্বেষ, অশান্তি, রক্ত ঝরানো কোনও দেশ নেতার উদ্দেশ্য হতে পারে না।
গান্ধীজি তাঁর অহিংস, মানবিক চিন্তাধারার জন্য সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে জনপ্রিয়, তাঁকে সকলে শ্রদ্ধা করে।
গান্ধীজি জাতির মহান নেতা, জাতির জনক। তাঁর আন্দোলন আমাদের গণতন্ত্রকে নতুন করে ভাবতে শেখায় ও গণতন্ত্রকে মজবুত করে, এবং সবাইকে নিয়ে কাজ করতে ও ঐক্যবদ্ধ ভারত গঠন করতে শেখায়।
ধর্মনিরপেক্ষ, শান্তি, সম্প্রীতি, সংহতির বার্তা গান্ধীজির কথায় বার বার উঠে এসেছে। আমরা যদি ওনার কথা মেনে চলতে পারি, নিজেদের জীবনে প্রতিফলিত করতে পারি তাহলেই তাঁর প্রতি সঠিক শ্রদ্ধা জানানো হবে।
গান্ধীজিকে নিয়ে গবেষণা আরো বাড়ুক চিন্তাধারা আরো বাড়ুক। গান্ধীর আদর্শেই আমাদের সকলকে পথ চলতে হবে।