নভেম্বর ১৪, ২০১৯
কেন্দ্র কি করবে জানি না, আমরা যতটা পারি ততটা করবঃ দিদি

আজ নবান্নে সাইক্লোন বুলবুলের জন্য ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন দিদি।
তার বক্তব্যের কিছু অংশঃ
আমরা আজকে সবাইকে ডাকিনি, শুধু জেলা শাসক, প্রধান সচিব, অতিরিক্ত সচিব ডাকা হয়েছিল এবং মন্ত্রীরাও ছিলেন। সভায় আলোচনা হয়েছে যে বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে কিভাবে মনিটরিং,কোঅর্ডিনেশন আরো ভালো করা যায় সেই নিয়ে।
ট্যাক্স বাবদ কেন্দ্রের যেহেতু প্রচুড় কম ইনকাম হয়েছে, যে ৪২% যেটা ওরা রাজ্যকে দেবে বলেছিল সেটাও ওরা দিতে পারবে না। ফলে আমাদের রাজ্যও ৬৪০ কোটি টাকা লোকশান করেছে। সেন্ট্রাল ট্যাক্স আমরা পুরোপুরি পাই নি। আমি আশাকরি এটা প্রত্যেক রাজ্যেই হয়েছে। এবিষয়ে প্রত্যেকটা রাজ্যই কেন্দ্রীয় অর্থনীতির সাথে সাথে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
আমাদের রাজ্যের রাজস্ব কমেনি।২০১৯ এর অক্টোবর পর্যন্ত ৩৪,৮৮৮ কোটি টাকা, আগের বারে ছিল ৩৩,৭৪৯ কোটি টাকা। তাছাড়া ১৭ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছে আমরা পাই। সেই টাকাটাও কেন্দ্র দিচ্ছে না।
তার উপর এতো বড় একটা সাইক্লোন হয়ে গেছে যে ১৫ লক্ষ হেক্টরের বেশী জমিতে ফসল নষ্ট হয়েগেছে।
পাকা ধান পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। ৫লক্ষ বাড়ি ভেঙে গেছে। ৬লক্ষ মানুষ প্রত্যক্ষ ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তার মধ্যে পরিবারের সাধারণ লোক, মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী আছে। আমরা ঐ এলাকাগুলোতে মাধ্যমিক পরীক্ষা সাতদিন পিছিয়ে দিয়েছি।
পিএইচই দপ্তর থেকে ৫০ লক্ষ দলের পাউচ দেবো বলে আমরা ঠিক করেছি। ইতিমধ্যে ১০ লক্ষ পাউচ জল আমরা দিয়েও দিয়েছি। ভেঙেপড়া ৩১৭৩ টির মধ্যে ৩১১৭টি পোল আমরা নতুন করে বানিয়ে ফেলেছি কিছু কাজ বাকি আছে যেমন সন্দেশখালি, গোসাবা, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জে, পাথর প্রতিমা, সাগরদীপের প্রত্যন্ত এলাকাগুলোতে। সেটাও সরকার যত তাড়াতাড়ি পারছে করে দেবে। জলটা নেমে গেলে তারপর এই কাজগুলো করা যাবে।
আমাদের সান্ত্বনা এইটা যে প্রায় পৌনে ২লক্ষ মানুষের প্রাণটা বেঁচে গেছে। এখনো পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৯জন মারা গেছেন। এর মধ্যে উঃ২৪পরগনায় ৫জন, দঃ ২৪পরগনায় ৩জন, আর মেদিনীপুরে ১জন মারা গেছেন। এইসব পরিবারের সদস্যদের টাকা আমরা পাঠিয়ে দিয়েছি।
শস্য পুরোটাই নষ্ট হয়ে গেছে। দঃ২৪পরগনায় বেশী নষ্ট হয়েছে পানের বরজ। মেদিনীপুরেও হয়েছে।
ইতিমধ্যেই ক্ষতিগ্রস্থদের ১২ কেজি চাল, আলু, ডাল, ৫লিটার করে কেরোসিন তেল দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করছি। এবং তার সাথে একটা করে হ্যারিকেনও দেওয়া হবে। গতকাল আমরা ৪০ হাজার হ্যারিকেন পেয়েছি। আমরা ৬লক্ষ সেট দেব ঠিক করেছি। এই সেটের মধ্যে বাসনপত্র, স্টোভ, একটু চা, চাল, ডাল, বেবি ফুড, চাদর-কম্বল থাকবে। এর জন্য ৭/৮ দিন সময় লাগবে।
চাষিদের সাহায্য করতে পাকা ধানগুলো যেগুলো পড়ে আছে সেগুলো কিভাবে পুনোরুদ্ধার করা যায় তার চিন্তা ভাবনা চলছে। মাঠের জল সরানোর জন্য ১০০দিনের কাজের লোক আমরা দিয়েছি, পুকুরের জল থেকে ভেঙেপড়া গাছ তোলা, পোল বসানো কাজ করা হচ্ছে।
অনেক এলাকায় প্রচুর কাজ হলেও ৫টা ব্লকে প্রচুর জল জমার কারণে কাজটা আটকে আছে। কেন্দ্রের উচিত সাহায্য করা।
সবাইকে আবেদন সাইক্লোন নিয়ে অসহায় মানুষের বিপদে পাশে না দাঁড়িয়ে বড় বড় কথা বলে এটাকে নিয়ে রাজনীতি করছেন, ভাঙচুর করছেন তাঁদের আমি অনুরোধ করবো এটা করবেন না। কেন্দ্র কি করবে জানি না, আমরা যতটা পারি ততটা করব।রাজনীতি ছাড়া জীবন থাকবে। রাজনীতি করতে নামলে আমরাও কিন্তু কম করতে পারতাম না
ঝড় নিয়ে নোংরা রাজনীতি ত্যাগ করে, মানুষের পাশে দাঁড়ান। দল নির্বিশেষে সব মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দিন
কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উভয়ই মানুষের দ্বারা নির্বাচিত। সংবিধান অনুযায়ী গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চলবে। কিন্তু কেউ কেউ যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো না মেনে একটি দলের মুখপত্র হয়ে কাজ করছেন। যা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী। ওরা এখানে সমান্তরাল সরকার চালানোর চেষ্টা চলছে which is too much। কেন্দ্রীয় সরকারের তা বোঝা উচিত। আমি কেন্দ্রীয় সরকারকে অনুরোধ করব সকলে মিলেমিশে কাজ করুন
অযোধ্যার রায় কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্ত। এই নিয়ে আমি কোন রাজনৈতিক মন্তব্য করতে চাই না
জেএনই-উ র ঘটনা আমি শুনেছি। কারা এই অবস্থা করল বিবেকানন্দর মূর্তির? আজকের দিনটি একটি দুঃখের দিন