নভেম্বর ১৮, ২০১৯
তৃণমূল এর কর্মীরাই আমাদের নেতা দলের সম্পদ: কোচবিহারে দিদি

আজ উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলায় একটি কর্মীসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ
আমরা সব ধর্মে বিশ্বাস করি। মানবজাতির চেয়ে বড় ধর্ম আর কিছু হতে পারে না
রবীন্দ্রনাথ ঘোষ অসুস্থ, আমি সব খোঁজখবর নিয়েছি, কলকাতায় চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এখন উনি ভালো আছেন
৩৪ বছর একটা সরকার উত্তরবঙ্গের দিকে তাকিয়েও দেখেনি, পুরোপুরি অবহেলা করেছে
এখানকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল সচিবালয়, আমরা উত্তরকন্যা তৈরি করেছি। এই জেলায় কন্যাশ্রী গেস্ট হাউস, জলপাইগুড়িতে বিশ্ব বাংলা ক্রীড়াক্ষেত্র, ভোরের আলো, সার্কিট হাউস তৈরি করেছে আমাদের সরকার। কোচবিহারে পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয়, জয়ী ব্রিজ তৈরি হয়েছে। ছিটমহলের ৫৫ বছরের সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। রাস্তা-ঘাট সহ অনেক কাজ হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য যে অপপ্রচার, কুৎসা, অর্থবল আর পেশীবলের কাছে অনেকেই মাথা বিকিয়ে দিয়েছেন।
এনআরসি করে মানুষদের অধিকার দেবে না কিন্তু ভোটে জেতার জন্য মানুষদের টাকা সাপ্লাই করবে বাংলায়, এটাই ওদের কাজ। মানুষে- মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি করেছে। নির্বাচনের সময় রাতের অন্ধকারে টাকা বিলিয়েছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সহায়তায়
আসামে বলেছিল কোনও হিন্দু বিতাড়িত হবে না। কিন্তু ১৯ লক্ষের মধ্যে ১৪ লক্ষ হিন্দু বাঙালি ছিল, তারা বিতাড়িত হল কিভাবে? এখন তারা সবাই ডিটেনশন ক্যাম্পে আছে
উত্তরবঙ্গে কেউ কেউ বজেপির মিথ্যে কথায় ভুলে যায়, তারা বলে বাংলা আলাদা উদ্বাস্তু আলাদা। ওরা মানুষে মানুষে ভেদাভেদ সৃষ্টি করছে। বাঙালিদের সাথে অবাঙালিদের ঝগড়া করাচ্ছে
যারা উদ্বাস্তু নিয়ে বড় বড় কথা বলছেন তাদের জানা উচিত, উদ্বাস্তুদের জমির অধিকার আমি ফিরিয়ে দিয়েছি। এর জন্য আমাকে অনেক মার খেতে হয়েছে অনেক অনেক আন্দোলন করতে হয়েছে। আমাদের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সমস্ত উদ্বাস্তু কলোনিগুলোকে তাদের জমির দলিল দিয়ে দেবে
একটা লোক যদি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চাকরি, গাড়ি, রেশন, খাদ্যসাথী, কন্যাশ্রী, সম্পত্তি, স্বাধীনতার অধিকার পায় তবে আর কোন অধিকার বাকি থাকল বলুন বিজেপির বন্ধুরা? আমরা মানুষকে তাদের সব অধিকার দিয়েছি
বলা হচ্ছে এনআরসি -র বদলে সিটিজেনশিপ অ্যামেন্ডমেন্ট বিল আনা হবে। এটা আসলে ভারতীয় নাগরিকদের ৬ বছরের জন্য বিদেশী বানানোর ষড়যন্ত্র। ৬ বছর বাদে তখন ওরা সরকারে থাকবে না, তবে ওরা কি করে ঠিক করবে বাংলায় কে থাকবে! আর কে থাকবে না? আপনারা সকলে বাংলার নাগরিক, বাংলাতেই থাকবেন। কেউ আপনাদের তাড়াতে পারবে না
কেউ কোন ভাগাভাগিতে যাবেন না। যারা বিজেপির থেকে টাকা নিয়ে মানুষের বিরুদ্ধে মানুষকে উত্তেজিত করছেন তাদের ফন্দি টিকবে না, বাংলার মানুষ কৈফিয়ত নেবে
নির্বাচনের সময় ওরা কুৎসা ও অপপ্রচার করতে আসে। জলপাইগুড়ির মাদারিহাটে গিয়ে বিজেপি বলেছিল ৬-৭ চা বাগান অধিগ্রহণ করবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত একটাও অধিগ্রহণ করেনি।
কেন্দ্রীয় সরকার এয়ার ইন্ডিয়া, রেল, বিএসএল, অর্ডিন্যান্স ফ্যাক্টরি, ৪৫টা পাবলিক সেক্টর বিক্রি করে দিচ্ছে
যদি বাংলাকে নিজের ভাবেন তাহলে আগামী দিনে চ্যালেঞ্জ নিতে জানতে হবে, স্বপ্ন দেখতে শিখতে হবে। আর এটা একমাত্র তৃণমূল করতে পারে অন্য কোন রাজনৈতিক দল নয়
বাংলায় সিপিএম কংগ্রেস আর বিজেপি এক, দিল্লিতে বিরোধিতা করছে আর বাংলায় এসে সব একসাথে কাজ করে, এই জগাই-মাধাই-গদাইকে একসাথে বিদায় দিতে হবে
তৃণমূল এর একটাই গ্রুপ, এখানে নেতা বড় নয়, কর্মীরাই আমাদের নেতা, তারাই দলের সম্পদ, এই দলে সবাই সমান। এই দল প্রো পিপল। সমাজের সব স্তরের সকলের সঙ্গে আছে তৃণমূল কংগ্রেস
কোচবিহারকে আমরা হেরিটেজ শহর ঘোষণা করেছি
আমাদের দলে সব ধর্মের মানুষ থাকবে, তবেই সম্পূর্ণ হয় একটি রাজনৈতিক দল। আমরা সব ধর্ম পালন করি, ধর্ম যার যার কিন্তু উৎসব সবার। সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে একসাথে কাজ করুন। বৈচিত্র্য এর মধ্যে ঐক্য এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্ম
হায়দ্রাবাদের একটা রাজনৈতিক দল বিজেপির কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রচার করছে সংখ্যালঘু ভাইবোনেদের ওরাই নাকি প্রোটেকশন দেবে। আমি বলছি উগ্র হিন্দুবাদ, উগ্র ইসলামবাদের কাছে আত্মসমর্পণ করবেন না। ওদের ফাঁদে পা দেবেন না
কেন্দ্রীয় সরকার বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কিন্তু আমরা সেই প্রকল্পগুলো টাকা দিয়ে চালাচ্ছি
প্রতিবাদ করলেই কথা বলার অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, কাজ করছি আমরা আর দালালি করছে ওরা
দলের জন্য কাজ করুন। ২১ শের জয় হবে মানুষের জয়, প্রত্যয়ের জয়, পশ্চিমবাংলার জয়। তৃণমূলের নেতা আমাদের কর্মীরা। জোট বাঁধুন, আগামী দিনের জন্য তৈরি হন। আমি আপনাদের সকলের সঙ্গে আছি