সাম্প্রতিক খবর

জুন ৪, ২০১৯

ব্যালট পেপার ফিরলেই বিজেপির জামানত বাজেয়াপ্ত হবেঃ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

ব্যালট পেপার ফিরলেই বিজেপির জামানত বাজেয়াপ্ত হবেঃ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়

পেট্রোল, ডিজেল ও রান্নার গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে আজ রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ মিছিল করে তৃণমূল। দক্ষিণ কলকাতায় এই মিছিলে নেতৃত্ব দেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

গোলপার্ক থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত মিছিলের পর তিনি বক্তব্যও রাখেন। প্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি ছাড়াও লোকসভা নির্বাচনে ইভিএম কারচুপির বিরুদ্ধে সরব হন তিনি। তিনি দাবী করেন, ব্যালট পেপার ফিরলেই বিজেপির জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশঃ

বাংলায় সিপিএমের ভোটগুলো ধার নিয়ে ১৮টা আসন জিতেছে বিজেপি এবং জেতার পর বাংলা থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে হঠাবার স্লোগান দিয়েছে।

তৃণমূল সরকার সিআরপিএফের দ্বারা, নির্বাচন কমিশনের তৎপরতা এবং ইডি থেকে সিবিয়াইয়ের দ্বারা ভোটে নির্বাচিত হয়ে ২০১১তে আসেনি। এই সরকার মানুষের আশীর্বাদ, ভালোবাসা ও স্নেহকে পাথেয় করে ক্ষমতায় এসেছে। বিজেপির জানা উচিৎ বাংলার মাটি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসকে উৎখাত করা যাবে না। ব্যালট পেপার ফিরলেই বিজেপির জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

যারা ভাবে তৃণমূল কংগ্রেসের আজ আসন কমেছে বলে তৃণমূলের শক্তিক্ষয় হয়েছে, তাদের বলি তৃণমূলের কোনও ক্ষমতা কমেনি। ২০১৪ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ভোট পেয়েছিল ৩৯% আর ২০১৯এ ভোট পেয়েছে ৪৪%। ভোট বেড়েছে তৃণমূলের। ৪২টি আসনের মধ্যে ৪১টি আসনে তৃণমূল কংগ্রেস তার প্রাপ্য ভোট বাড়িয়েছে পাঁচ বছরে।

সিপিএম নিজের ভোট ধার দিয়েছে বিজেপিকে। তার বদলে সুদ হিসেবে নিচ্ছে পার্টি অফিস। সেই পার্টি অফিসগুলো ইতিমধ্যেই আবারও তৃণমূল কংগ্রেসের আয়ত্তে চলে এসেছে।

এই হাজরা মোড়েই আমরা এফআরডিআইয়ের বিরুদ্ধে মিছিল ও সভা করেছিলাম। অসমে বাঙালীদের নৃশংস হত্যার প্রতিবাদে আমরা মিছিল করেছিলাম। আমরা গত পাঁচ বছরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের মূল্যবৃদ্ধি ছাড়াও কেন্দ্রের একাধিক জনবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মিছিল ও সভা করেছি।

আমাদের ২২জন সাংসদ, মোদীর ৩০০র বেশী সাংসদ। তৃণমূলের একেকজন সাংসদ বিজেপির ২০জন সাংসদের সঙ্গে লড়বে।

সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি এক হয়ে লড়াই করেছে। একদিকে বিজেপি, সিআরপিএফ, নির্বাচন কমিশন, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সিবিআই, ইডি, আয়কর আর অন্যদিকে বাংলার জন গণ মন অধিনায়িকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতেও ৪৪% ভোট পেয়ে বিজেপির ধর্মীয় মেরুকরণের ষড়যন্ত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আটকে দিয়েছেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে ১৯৯৩ সালের ২১শে জুলাই ‘নো আইডেন্টিটি কার্ড, নো ভোট’-এর লড়াই ছিল। এবারে আমরা বলছি ‘গণতন্ত্র বাঁচাতে চাই, ইভিএম নয় ব্যালট চাই’। এই লড়াই আমরা প্রত্যন্ত গ্রামেও ছড়িয়ে দেব।

বেকারত্বের হার, কৃষক আত্মহত্যা বাড়ছে কেন জিজ্ঞেস করলে মোদী বলছে জয় শ্রী রাম। এই হচ্ছে বিজেপি। ওদের স্লোগান জয় শ্রী রাম, আমাদের স্লোগান জয় হিন্দ, জয় বাংলা, বন্দে মাতরম। আমরা পুজোর সময় জয় শ্রী রাম বলি। আমি তৃণমূলের পতাকা ধরলে বলি বন্দে মাতরম।

বিজেপি ভাবছে গুন্ডা দিয়ে দুটো পার্টি অফিস দখল করে ভেবেছে তৃণমূল কংগ্রেসকে বিদ্ধ করবে, আর আমরা মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মানুষের হৃদয় দখল করব। এটাই আমাদের অঙ্গীকার।

আমাদের একটাই স্লোগান, বিজেপি হঠাও, সিপিএম হঠাও, বাংলা বাঁচাও।

যারা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভেঙেছে, যারা সতীদাহ প্রথা বিলোপ করা রাজা রামমোহন রায়কে অসম্মান করেছে, তাদের বিরুদ্ধে বঙ্গবাসী গর্জে উঠুন, প্রতিবাদ জানান। বিজেপিকে ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে আগামী দিন জবাব দিতে হবে।

বিজেপির নেতারা বলেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ১০ লক্ষ জয় শ্রী রাম লেখা পোস্ট কার্ড পাঠাবো। তার আগে তারা ২৫ লক্ষ হোয়াটস অ্যাপ মেসেজ পেয়েছে ‘জয় বাংলা, জয় হিন্দ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ’ লেখা।