সাম্প্রতিক খবর

জুন ২৬, ২০১৯

গ্রামের মানুষের জন্য ৮ লক্ষ ৩০ হাজার বাড়ি বানাবে রাজ্য

গ্রামের মানুষের জন্য ৮ লক্ষ ৩০ হাজার বাড়ি বানাবে রাজ্য

লোকসভা ভোট মিটতেই গ্রামবাংলায় গরীব মানুষের জন্য ৮ লক্ষ ৩০ হাজার বাড়ি তৈরী করার উদ্যোগ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘বাংলার বাড়ি’ প্রকল্পে এই সংখ্যক বাড়ি তৈরী হবে বর্তমান আর্থিক বছরে। গত আর্থিক বছরে এই প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের গ্রামাঞ্চলে ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার বাড়ি তৈরী হয়েছে। সেই হিসেবে চলতি আর্থিক বছরে সংখ্যাটা বাড়ছে প্রায় আড়াই লক্ষ। এই বাড়িগুলি তৈরী করবে রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তর।

বাড়িগুলি ২৫ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে হতে হবে। তাতে একটি ঘর, রান্নাঘর, বারান্দা ও একটি শৌচাগার থাকবে। শৌচাগারটি তৈরী হবে ‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পের টাকায়। জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে এক-একজন এই প্রকল্পে পাবেন ১ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা। অন্য জেলায় গরীব মানুষরা পাবেন ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। এই টাকার মধ্যে রাজ্য সরকার দেবে ৪০ শতাংশ। এই প্রকল্পের বাড়তি সুবিধা হল, কোনও ব্যক্তি চাইলে নিজের কিছু টাকা খরচ করে বাড়িটিকে আরও সুন্দর ও বড় করতে পারবেন।

জেলাশাসকদের অবিলম্বে সুবিধাপ্রাপকদের জেলাওয়াড়ি তালিকা তৈরী করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নবান্নর তরফে জেলাশাসকদের যে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে, তাতে তফসিলি জাতি, উপজাতি এবং সংখ্যালঘুদের প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

রাজ্যজুড়ে প্রকল্পের কাজ চললেও আটটি জেলাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই জেলাগুলি হল, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, মুর্শিদাবাদ এবং পূর্ব বর্ধমান। গত আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে রাজ্যের কাজে খুশী হয়ে এবার কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক বরাদ্দের পরিমাণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে সুবিধাপ্রাপকের সংখ্যাও প্রায় আড়াই লক্ষ বেড়েছে।

রাজ্যের ১২৫টি পুরসভাতেও এই ধরনের বাড়ি বানানোর প্রকল্প চলছে। মুখ্যমন্ত্রী কয়েকদিন আগে নজরুল মঞ্চে দলীয় কাউন্সিলারদের বৈঠকে জানিয়েছেন, শহরাঞ্চলেও প্রায় আট লক্ষ মানুষকে এই প্রকল্পে বাড়ি তৈরী করে দেওয়া হবে। শহরাঞ্চলে এক-একটি বাড়ি বাবদ ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা দেওয়া হয় এই প্রকল্পে। বলা হয়েছে, উপভোক্তাদের তরফে যেন কোনও অভিযোগ না ওঠে, সমস্ত সুবিধা যেন তারা পায়। ১৫ দিন অন্তর প্রকল্পের কাজ পর্যালোচনা করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, শহরাঞ্চলে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে বেনিফিসিয়ারি বা উপভোক্তাকে ২৫ হাজার টাকা দিতে হলেও গ্রামাঞ্চলে কোনও টাকা দিতে হয় না। এছাড়া বাড়ির সামনে রাস্তা, ড্রেন সহ পরিকাঠামো তৈরীতে রাজ্য পুরদপ্তর দেয় ৩৬ হাজার ৮০০ টাকা।

সব কাউন্সিলার ও পুরসভাকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, উপভোক্তারা তাঁদের ২৫ হাজার টাকা নিজস্ব অ্যাকাউন্টে রাখবেন। সেই অ্যাকাউন্টেই রাজ্য ও কেন্দ্রের টাকা দেওয়া হবে। সেই টাকা দিয়েই বাড়ি তৈরী হবে। নিজেরাও বানিয়ে নিতে পারবেন বা পুরসভার অনুমোদিত ঠিকাদারি সংস্থাকে দিয়েও বানাতে পারবেন। এই প্রকল্পে প্রথম কিস্তিতে দেওয়া হবে ৩০ শতাংশ টাকা। দ্বিতীয় কিস্তিতে ৪০ শতাংশ এবং তৃতীয় কিস্তিতে দেওয়া হবে ৩০ শতাংশ টাকা। প্রথম কিস্তির টাকায় বাড়ি তৈরীর কাজ শুরু হওয়ার পর দ্বিতীয় কিস্তির টাকা দেওয়া হয়। বাড়িটি আরও কিছুটা তৈরী হলেই দেওয়া হয় তৃতীয় কিস্তির টাকা।

সৌজন্যেঃ বর্তমান