April 28, 2024
২৬০০০ ছেলেমেয়ের চাকরি খাওয়া মেনে নেওয়া যায় না : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ মালদহে দ্বিতীয় দফায় ভোট প্রচারে গিয়ে হবিবপুর এবং সুজাপুরের মানিকচকে জনসভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্যের কিছু অংশ
বিধানসভা ভোটে আপনারা ঢেলে ভোট দিয়েছিলেন বলেই BJP-কে আমরা ঠেকাতে পেরেছি। আপনাদের বলব, এবার আপনারাই পারবেন BJP-কে রুখে দিতে। কংগ্রেস বাংলায় জিতবে না। অন্য জায়গায় জিতবে। যেখানে আমাদের ক্ষমতা রয়েছে আমরা সাহায্য করছি। কিন্তু, বাংলাতে নয়। এখানে আমাদের কোনও জোট নেই। আমরা BJP-র বিরুদ্ধে একা লড়াই করছি। বাংলায় CPIM কংগ্রেস জোট হয়েছে। বিধানসভাতে একটাও আসন নেই। তা সত্ত্বেও কংগ্রেসকে দুটি আসন দিতে চেয়েছিলাম। বলেছিলাম CPIM-এর সঙ্গে জোট না করার জন্য। কিন্তু, ওরা কথা শোনেনি।’
মালদা জেলায় কোনও দিন লোকসভা আসন পাইনি। বিধানসভায় মালদা আমাদের ঢেলে আসন দিয়েছেন। সেই কারণেই BJP-কে রুখে দিতে পেরেছিলাম। বাংলায় কংগ্রেস জিতবে না মনে রাখবেন। বাংলায় কোনও জোট নেই, তৃণমূল একা লড়ছে। বাংলায় কংগ্রেসের জোট সিপিএমের সঙ্গে। বাংলায় কংগ্রেস-সিপিএম আসন ভাগাভাগি করেছে। দিল্লিতে BJP-কে রুখতে বাংলায় ভোট কাটাকাটি নয়। বাংলা কারও কাছে আত্মসমর্পণ করে না। বাংলা নিজের দাবি ছিনিয়ে আনবে। সংসদে সরব হবে না, টিকি দেখা যাবে না..তাঁকে ভোট দেবেন কেন? ভোট কাটাকাটি করে বিজেপিকে জেতাবেন না। ভোট কাটাকাটির সুযোগে বিজেপি যদি ক্ষমতায় চলে আসে তাহলে গায়ের জোরে সিএএ চালু করে আপনাদের ডিটেনশন ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেবে। তাই বলছি, বিজেপিকে হঠাতেই হবে।
ফরাক্কা শুকিয়ে গেছে, কোনওদিন ড্রেজিং করে না। গঙ্গায় ভাঙন, কোনওদিন মাথা ঘামায় না। সামশেরগঞ্জে, ফারাক্কায় ২৫০ কোটি টাকা খরচ করে আমরা কাজ করছি। আপনারা সব জানেন. আমার বেশি কিছু বলার দরকার নেই।
মোদীবাবু গদি উলটাতে হলে সব ভোট এককাট্টা করে রাখবেন। মোদীবাবুর দুটো চোখ। একটা কংগ্রেস, আর একটি সিপিএম। মুর্শিদাবাদে দিয়ে দাঁড়িয়েছে সেলিম। এখানে আরেকজন। যদি কোনওক্রমে এই ভোট কাটাকাটির জন্য BJP-র সিট বেড়ে যায় ক্ষতি আপনাদের তা মনে রাখবেন। আমি আপনাদের উপর কোনওদিন অত্যাচার করতে দিইনি। বাম আমলের থেকে বাজেট বাড়িয়েছি। ইন্ডি নামটা শুনলে মোদী থর থর করে কাঁপেন। উনিও বুঝে গেছেন এবার আর বিজেপি ক্ষমতায় আসবে না। ইন্ডি জোট যাতে সরকারে আসে সেজন্য তৃণমূল সব ধরনের সহযোগিতা করবে।
শাঁখা-পলা কী জানেন? এসব বাদ দেওয়া নিয়ে কথা বলছেন? কোনওদিন জানেন এসবের মাহাত্ম্য? উনি যা বলেছেন, আমি তা উচ্চারণ করতে চাই না। আমি ওসবে বিশ্বাসও করি না। কিন্তু আমি যতদিন থাকব, ততদিন ঐক্য, শান্তি প্রতিষ্ঠা করে দিয়ে যাব। আমার কাছে সতী-সাবিত্রী-সীতা আর জাহানারা-রোশেনারার মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই।
চাকরি প্রার্থীদের কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ থাকলে তদন্ত হবে। তা বলে ২৬ হাজারের চাকরি খাওয়াকে কোনওভাবেই সমর্থন করতে পারি না। আমি বিজেপি-র মতো বাজে কথা বলি না। ভাত দেওয়ার ক্ষমতা নেই, কিল মারা গোঁসাই। আমরা আপনাদের পক্ষে ছিলাম, আছি, থাকব। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তদন্ত হবে, নিশ্চয়ই সংশোধন হবে। কিন্তু ২৬০০০ ছেলেমেয়ের চাকরি খাওয়া মেনে নেওয়া যায় না। আজ আদালতকেও নিয়ন্ত্রণ করছে।
সরি, কোর্টের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ নেই। কিন্তু মানুষ সব শেষে যে বিচারের দরজায় যান, আজ সেটাও যদি বিজেপি বন্ধ করে দেয়, তাহলে কোথায় যাবেন মানুষ? আমি নিজে আইনজীবী ছিলাম, এখনও বার কাউন্সিলের সদস্যতা রয়েছে।
আমি আবেদন করছি, ভাবুন, আজ যদি আপনার ঘরের ছেলেমেয়েদের চাকরি চলে যেত, পারতেন সাত বছর কাজ কাজ করে বেতনের টাকা ১২ শতাংশ সুদ-সহ ফেরত দিতে? আমরা আইনে যাচ্ছি। কিন্তু এটা হচ্ছে দেশের প্রধানমন্ত্রী, যিনি লোকের চাকরি খান।
বাংলায় কংগ্রেসকে CPIM-এর সঙ্গে জোট না করতে বলেছিলান। কিন্তু, কংগ্রেস সেই কথা শোনেননি। সিপিএম-এর কাছে আত্মসমর্পণ করতে পারব না বলেই এই একলা চলো নীতি নিয়েছি।