Latest News

September 24, 2024

ভোটের জন্য যে টাকা খরচ করা হয়, তার একাংশ দিলেও বন্যা আটকাতে পারতাম : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

ভোটের জন্য যে টাকা খরচ করা হয়, তার একাংশ দিলেও বন্যা আটকাতে পারতাম : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

আজ বীরভূমে বন্যা বিধ্বস্ত এলাকা পরিদর্শনে আসেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়। বানভাসি এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেন। তারপরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে ওনার বক্তব্য পেশ করেন। ওনার বক্তব্যের কিছু অংশ :

পরিস্থিতি ঠিক হলে যাঁদের জমি নষ্ট হয়েছে, তাঁদের জমি মেপে শস্যবিমার টাকা যাতে দ্রুত পান, সেই ব্যবস্থা করার জন্য বলব। আমি চাষি ভাই-বোনেদের চিন্তা করতে বারণ করব। প্রশাসনিক আধিকারিকেরা সবাই রাত জেগে পাহাড়া দেবে। দুর্গত এলাকার মানুষজনকে রিলিফ সেন্টারে আনা হবে। আমরা বেশ কয়েকটি ফ্লাড সেন্টার করেছি নতুন করে। সেখানেও প্লাবিত এলাকার মানুষজনকে রাখা হবে।

বাংলার দুর্ভাগ্য়, এখানে এবং অসমে যত বন্যা হয়, অন্য কোথাও তত হয় না। বাংলার অবস্থা নৌকার মতো। ঝাড়খণ্ডে বৃষ্টি হলেই আমাদের চিন্তা বাড়ে। কারণ, নিজেদের বাঁচাতে জল ছেড়ে দেয়। বিহারও বাঁধ কেটে বাংলায় জল ঢুকিয়ে দেয়। ডিভিসি কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও কাজ না করার ফলে লক্ষ লক্ষ মানুষের ঘর ডুবে যাচ্ছে। ভোটের জন্য যে টাকা খরচ করা হয়, তার একাংশ দিলেও বন্যা আটকাতে পারতাম।

জেলা প্রশাসনকে বাড়ির তালিকা তৈরি করতে বলা হয়েছে। আপাতত যাদের বাড়ি নেই তাদের তিনটি করে ত্রিপল দিতে বলা হয়েছে। বাংলা আবাস যোজনায় পঞ্চাশ লক্ষ বাড়ি তৈরি বাকি আছে। ডিসেম্বরে বাড়ি তৈরির প্রথম কিস্তি দেওয়া হবে।

আমরা এখন ২৪ ঘণ্টা বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রাখি। সকলের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আমরা অনেকগুলো বন্যা সেন্টার তৈরি করেছি। কিন্তু তাতেও বাধ মানছে না। বাঁধ ভাঙছে। দরকার হলে স্কুলগুলোকে যাতে কাজে লাগাতে পারি, তা দেখতে হবে। পূর্ত দফতরকে বলা হয়েছে যে সব রাস্তা ভেঙেছে, তা সমীক্ষা করে দেখতে। ডিসেম্বরে ১১ লক্ষ পাকা বাড়ি করার জন্য সরকার টাকা দেবে। পঞ্চায়েত দফতরকেও বলা হয়েছে জল কমলেই যেন সমীক্ষার কাজ শেষ করে।

ত্রাণ শিবির গুলিতে যাতে পানীয় জলের খামতি না থাকে তার জন্য প্রশাসনিক আধিকারিকরা সবরকম ব্যবস্থা নেবে।

সরকার যেমন পেরেছে, করছে। পুলিশও অনেক জায়গায় কমিউনিটি কিচেন করেছে। আমাদের দলের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেখানে যেখানে বন্যা হয়েছে, আমরা সেখানে সেখানে সাধ্যমতো শুকনো খাবারের প্যাকেট দিচ্ছি। কেউ যেন বঞ্চিত না হয়, তা আমাদের দেখতে হবে। আমি বিধায়কদের বলেছি, তাঁদের কোটার যে টাকা আছে, তা দিয়ে গ্রামীণ রাস্তাগুলো যতটা পারবেন উন্নতি করুন। আমাদের দলের সাংসদদের কাছেও একই অনুরোধ করব।

সকলকে বলব কেউ যাতে কুৎসা রটাতে না পারে তা নজর রাখতে। পাঁচটা কাজ করলে একটায় ভুলভ্রান্তি হতেই পারে। তা দিয়ে ন্যারেটিভ না বানিয়ে, আসুন আমরা বন্যাকবলিত মানুষদের পাশে দাঁড়াই।

আমি বিধায়কদের বলেছি, তাঁদের তহবিলের টাকা দিয়ে গ্রামীণ রাস্তাগুলোর যতটা সম্ভব উন্নতি করার জন্য। সাংসদের নির্দেশ দিয়েছি ভাঙা স্কুল মেরামতের জন্য এক কোটি টাকা খরচ করতে। আর গ্রামীণ রাস্তার জন্য চার কোটি টাকা খরচ করার কথাও বলেছি।

বন্যায় ২৮ জন মারা গিয়েছেন। তাঁদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।