January 11, 2021
মতুয়ারা বাংলার নাগরিক: মুখ্যমন্ত্রী

আজ নদিয়ায় জনসভায় বক্তব্যে রাখেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ে। এ দিনেই সভা ছিল রানাঘাট মহকুমার হাবিবপুরের ছাতিমতলায়।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের কিছু বিষয়:
নদিয়ায় চৈতন্য মহাপ্রভুর জায়গা যেমন আছেন, তেমন এখানে রাশ যাত্রা, সব পুজো হয় তেমন এখানে অনেক চার্চ আছে
ইস্কন মন্দিরে একটি ধর্মীয় শহর হবে, সেজন্য রাজ্য সরকার ৭০০ একর জমি দিয়েছে। আগামী দিনে এটি নদিয়া জেলার বড় পর্যটন কেন্দ্র হবে
আমরা কল্যাণীতে ট্রিপল আই টি হয়েছে, অল ইন্ডিয়া মেডিকেল ইনস্টিটিউট তৈরি করার জন্য বিনামূল্যে সম্পূর্ণ জমি দেওয়া হয়েছে
মসলিন তীর্থ করা হয়েছে। এমন কোন জায়গা নেই যেখানে উন্নয়নের ছোঁয়া নেই
আগে কাজ হত না, রাজনীতি হত। আগে এখানে শুধু লোডশেডিং হয়ে যেত, হাসপাতালে কোন চিকিৎসা হত না। আজকের প্রজন্ম জানে না লোডশেডিং কী, আমরা বলতাম, সিপিএমের কোলে, লোডশেডিং দোলে। কিন্তু এখন আর লোডশেডিং নেই।
গতবার রাণাঘাটে এক কর্মী (সত্যজিৎ বিশ্বাস) খুন হয়, তার স্ত্রী কে আমরা প্রার্থী করেছিলাম, কিন্তু জেতাতে পারিনি। জিতলো এমন এক মহামানব যার কুকীর্তি সবাই দেখতে পাচ্ছে
তৃণমূলে গেলে কালো আর বিজেপিতে গেলেই সাদা হয়ে যাচ্ছে। বিজেপিতে গেলেই ওয়াশিং মেশিন হয়ে যাচ্ছে। মিথ্যে বলার জুড়িদার কেউ নেই ওদের মতন।
‘কালো’ টাকা ‘সাদা’ করতেই বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন কয়েকজন নেতা। সঙ্গে তাঁদের টাকা গচ্ছিত রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তাই বিজেপিকে ‘ভারতীয় জাঙ্ক পার্টি’. কেউ টাকা আত্মসাৎ করে বিজেপিতে যোগ দিলেই তাঁদের দোষ মাফ হয়ে যায়।
নির্বাচন এলে বলবে, চাকরি দেব, টাকা দেব, মতুয়াদের নাগরিক করে দেব আর নির্বাচন হয়ে গেলে পালিয়ে যাবে
আমি বাংলার মুখ্যমন্ত্রী হয়ে বলছি মতুয়ারা সবাই বাংলার নাগরিক. আমরা সবাই নাগরিক। বিজেপি সরকার একটা বিল করেছে। বলছে, আমরা মায়ের জন্ম কবে বলতে হবে। আমার ঠাকুরদাদার জন্ম কবে বলতে হবে। আপনি যদি তা না বলতে পারেন, তা হলে আপনি এ দেশের নাগরিক নন। আপনাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেবে। যারা এসব বলছে, নির্বাচনের মাধ্যমে, গণতন্ত্রের মাধ্যমে তাঁদের আমরা ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেব।
আমরা মা মাটি মানুষের সরকার, আমরা সবার জন্য কাজ করি, কোন ভেদাভেদ নেই। আমরা মানুষের কাছে দায়বদ্ধ। আমরা এন আর সি , এন পি আর করতে দেব না, এটা আমাদের পলিসি ডিসিশন
১ লক্ষ ছেলেমেয়েদের বিনা পয়সায় সাইকেল দেওয়া হয়েছে। আরও ২০ লক্ষকে এই জানুয়ারি মাসে দেওয়া হবে
১২ লক্ষ ট্যাব বাজারে পাওয়া যাচ্ছে না। তাই দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের অ্যাকাউন্টে ১০০০০ টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হবে
দুয়ারে সরকার কর্মসূচীতে ২ কোটি মানুষ গেছেন। এর মধ্যে ৬০% মানুষ পরিষেবা পেয়ে গেছে
শুধুমাত্র নদীয়া জেলায় ৯.৮৭ লক্ষ মানুষ এসেছেন ১২০০ শিবিরে। রানাঘটাই ২.২৫ লক্ষ মানুষ এসেছেন। ৯০% মানুষ পরিষেবা পেয়ে গেছে
কেউ জানেন হরিয়ানায় কী চলছে? কৃষকদের উপর জুলুম চলছে। দিল্লির দাঙ্গায় কতজন মারা গেছে?
কিসের আয়ুষ্মান? ওরা ৬০ টাকা দেবে ৪০ টাকা আপনাকে দিতে হবে। আর স্বাস্থ্যসাথীতে ১০০ টাকায় সরকার দেবে। স্বাস্থ্যসাথী আমার সাথী, আমি নিজেও সদস্য হয়েছি। ওই কার্ডটার দাম ৫ লক্ষ টাকা।
অনেক বড় বড় হাসপাতাল আছে কখনও কখনও বলে দেয় আমরা স্বাস্থ্যসাথী করব না। আমরা তাদের সঙ্গে মিটিং করে বলে দিতে চাই করতেই হবে
আমরা জেলার ছোট ছোট নার্সিংহোমকে বলছি স্বাস্থ্যসাথী নিতে। যদি কেউ চিকিৎসা না দেয় সরকারের হাতে লাইসেন্স বাতিল করার ক্ষমতা আছে, এটা গরীবদের প্রকল্প, তাদের যেন হয়রানি করা না হয়
স্বাস্থ্যসাথীর নামে কেউ হয়রানি করলে থানায় গিয়ে ডায়েরি করবেন, এফআইআর করবেন। বললেন মমতা।
দেশভাগের পর থেকে উদ্বাস্তুরা এসেছেন, এতদিন তাঁদের কথা কেউ চিন্তায় করেনি। ১৯৮৭ সালে আমি উদ্বাস্তুদের জমির দলিল করিয়েছিলাম
উদ্বাস্তুরা যে যেখানে যেমনভাবে আছেন, সে সেখানে তেমন ভাবেই পাট্টা পাবেন। ৯৬টি কলোনি পাট্টা পেয়ে গিয়েছে। ২১৩টি রিফিউজি কলোনি ১.৫ লক্ষ পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বললেন মমতা। উদ্বাস্তুরা যে যেখানে যেমনভাবে আছেন, সে সেখানে তেমন ভাবেই পাট্টা পাবেন। ৯৬টি কলোনি পাট্টা পেয়ে গিয়েছে। ২১৩টি রিফিউজি কলোনি ১.৫ লক্ষ পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কার্যকরী ও হবে। আমি চাই বাংলায় একটাও উদ্বাস্তু পরিবার থাকবে না, পাট্টা পাবে না
নদীয়া জেলায় ৫০০০ পরিবারকে পাট্টা দেওয়া হবে
আই সি ডি এস এর পুরো টাকা এখন রাজ্য দেয়, মাইনেও বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে
বিনা পয়সায় চাল, বিনা পয়সায় স্বাস্থ্য, বিনা পয়সায় শিক্ষা। পৃথিবীতে এরকম একটা রাজ্য দেখান তো। দেখালে আমি নাকে খত দিয়ে বেরিয়ে চলে যাব। রাজনীতি করব না। আমার কাছে রাজনীতির চেয়ে মানবিকতা বড়
আমরা সবাই নাগরিক। বিজেপি সরকার একটা বিল করেছে। বলছে, আমরা মায়ের জন্ম কবে বলতে হবে। আমার ঠাকুরদাদার জন্ম কবে বলতে হবে। আপনি যদি তা না বলতে পারেন, তা হলে আপনি এ দেশের নাগরিক নন। আপনাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেবে। যারা এসব বলছে, নির্বাচনের মাধ্যমে, গণতন্ত্রের মাধ্যমে তাঁদের আমরা ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেব
আমিও অনেক সময় গরিব মানুষের বাড়িতে যাই, কখনও চায়ের দোকানে যাই, খাবার দোকানে যাই। কিন্তু নাটক করি না। যে অবস্থায় আছি, সেই অবস্থায় যাই। ধুলো অবস্থায় যাই। আর এঁরা সেজেগুজে ফাইভ স্টারের খাবার নিয়ে প্রাইভেট প্লেনে করে এসে মিনারেল ওয়াটার খায়।
আমি যে জল খেলাম। সেটা ‘প্রাণধারা’। এটা আপনাদের এখানেই হয়। এটার দাম ৬ টাকা। এটা যে কেউ খেতে পারেন। আর একটা ‘হিমালয়’-এর বোতলের দাম কত? দেখবেন খাচ্ছে, পাশে জলের বোতল রাখা আছে। এত সহজ! জিন্দেগি এত সহজ নয় রে ভাই! জিন্দেগী কামিয়াবি করার জন্য পথের ধুলোয় নামতে হয়। বিজেপিকে তোপ মমতার।
রাস্তার ধুলো তোমাদের গায়ে লাগে না। তোমরা মানুষ খুন করে কালিমালিপ্ত হও। তোমরা মানুষকে ভালোবাস না। আর মিথ্যে কথা বলো। মিথ্যে কথার অমাবস্যা
২০১৪ র নির্বাচনের আগে বলেছিলো ১৫ লক্ষ টাকা দেবে। ২ কোটি লোকের চাকরি দেবে বলেছিল। তার বদলে ৪০% লোক বেকার হয়ে গিয়েছে। রেল, এয়ার ইন্ডিয়া, বিএসএনএল, ব্যাঙ্ক বিক্রি করে দিয়েছে। আপনার টাকা আপনি পাবেন কিনা জানেন না
পুরো ভারতবর্ষ ভেঙে পড়েছে। একবার করল নোট বন্দি, আরেক বার কোভিডে আমরা হলাম গৃহবন্দি, এর পর করবে জেলবন্দি। তারপর ভারতবর্ষটাকেই বন্দি করে রেখে দেবে। যেমন ট্রাম্প করছে। ট্রাম্প হেরে গিয়েই বলছে, আমি জিতেছি। ওরা তাই হেরে গিয়েই বলবে হাম জিতা হ্যায়। কোনও পার্থক্য নেই। একই জিনিস, কয়েনের এপিঠ-ওপিঠ। ট্রাম্পের সঙ্গে মোদীকে একাসনে বসিয়ে আক্রমণ মমতার
আমরা বাজে কথা বলি না, কাজে করে দেখাই
উদ্বাস্তু কলোনিতে শুধু জমির দলিল দেওয়া নয়। আমরা তাঁদের ওখানে রাস্তাঘাট, জল, নিকাশির মতো পরিকাঠামো উন্নয়ন আস্তে আস্তে দেব
বাংলায় যা শিল্প তৈরি হচ্ছে। তাতে আগামিদিন বাংলায় লক্ষ লক্ষ কাজ তৈরি হবে। কারও বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। সেই কাজগুলো শুরু হয়ে গিয়েছে। করতে ২-৩ বছর সময় লাগবে
আমরা ৩০০ ট্রেনে করে ৩০ কোটি খরচ করে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাংলায় নিয়ে এসেছিলাম। কেন্দ্র এক টাকাও দেয়নি। প্রায় ৫০০০ পরিযায়ী শ্রমিককে আমরা কাজ দিয়েছি
বহিরাগতরা এসে টাকা দিলে নিয়ে নেবেন। একদম হজম করে দেবেন। ওটা জনগণের টাকা। ওদের টাকা নয়। খেয়ে নেবেন একদম। কার টাকা কাকে দিচ্ছে। মাছের তেলে মাছ ভাজা। আগে খেতে পেত না। আর এখন হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছে
বাংলায় নাকি কিছুই হয়নি। বাংলায় কিছু বাকি আছে সোনার বাংলা তৈরি করতে? সোনার বাংলা অলরেডি তৈরি হয়ে গিয়েছে। এই বাংলাটা এখন বিশ্ব বাংলা হচ্ছে
এই বিজেপি থাকলে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর দেখা যাবে। মানুষ খেতে পাবে না
এই যে কয়েকজন গিয়েছে। কেন গেছে বলুন তো? অনেক টাকা করেছে। কাউকে ইডির, সিবিআইয়ের ভয় দেখিয়েছে। এইসব ভয় দেখিয়ে বলেছে, যদি টাকা রাখতে চাও, তাহলে বিজেপিতে যাও। যদি কালো টাকা সাদা করতে চাও, তবে বিজেপিতে যাও। বিজেপি ‘জাঙ্ক পার্টি’ হয়ে গিয়েছে। ডাস্টবিনের মধ্যে সব ফেলে দিচ্ছে। আর সেই ডাস্টবিন থেকে বিজেপি করলে সাত গুণ মাপ, অন্যরা করলে বন্ধ ঝাঁপ
এখন সবাই বলছে বিজেপি ওয়াশিং মেশিন। কালো হলেও বিজেপি। দলটা ওয়াশিং মেশিন হয়ে গিয়েছে
বিজেপি আসবে কোথা থেকে? তফসিলি, আদিবাসি, মতুয়া, নমশুদ্র, সংখ্যালঘুরা ভোট দেবে? দেবে না। অনেক ঠকিয়েছে
সারা দেশে ডিক্টেটরশিপ চলছে। মানুষকে ভয় দেখাচ্ছে জব্দ করছে
ওরা আমাকে পছন্দ করে না। কারণ ওরা জানে, আমি নিজেকে বিক্রি করি না। আর এটাও ওরা জানে, আমি মরে যাব, কিন্তু বাংলাকে বিক্রি করতে দেবো না। হুঙ্কার মমতার।